ডিজিটাল মার্কেটিংয়েও বৈচিত্র্য মাহদীর
সিলেটে জন্ম হয় মুনতাসির মাহদীর। বসবাসও করেন সিলেটে। দেশের মার্কেটিং সেক্টরে মাহদী কাজ করে যাচ্ছেন প্রায় ৭ বছর ধরে। লেখালেখির পাশাপাশি প্রতিষ্ঠা করেছেন নিজের এজেন্সী ‘অ্যাশেন্সি – সোশ্যাল মিডিয়া ক্রিয়েটিভ অ্যাজেন্সি’। এছাড়াও ‘উক্তি’, ‘অপ্টিমাইজার’ এবং আরো বেশি কিছু প্রতিষ্ঠান আছে তার।
একুশে বই মেলা ২০২০ এ মাহদীর দুটি বই ‘ডিজিটাল মার্কেটিংয়ে হাতেখড়ি’ এবং ‘ব্রেইনফ্লুয়েন্সঃ দ্যা সাইকোলজি অব মার্কেটিং’ পায় রকমারী বেস্ট সেলারের খেতাব। বইগুলো প্রকাশিত হয়েছে শব্দশৈলী প্রকাশনী থেকে।
মাহদীর মার্কেটিং জীবন শুরু হয় আজ থেকে সাড়ে ৭ বছর আগে। প্রচুর সফলতার পাশাপাশি ব্যর্থতার গ্লানি পেতে হয়েছে অনেকবার। সম্পূর্ন নিজ চেষ্টায় সকল সমস্যা কাটিয়ে আজ মাহদী দেশজুড়ে মার্কেটিং এর সাথে সম্পৃত্তদের মধ্যে সেরাদের একজন।
সিলেট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি থেকে সিএসই নিয়ে পড়াশোনা শুরু করলেও পড়াশোনা শেষ করার আগেই ‘ড্রপ আউট’ হয়ে যান তিনি। এ বিষয়ে মুনতাসির মাহদী বলেন, “একদিন ভাবতে বসেছিলাম নিজেকে নিয়ে যে আমি আসলে কি করছি এবং ভবিষ্যতে কি করবো। তখনই হঠাত একটা জিনিষ মাথায় আসলো। আপনি ইঞ্জিনিয়ার হয়ে গেলে স্পেশালি কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং এ একটা ইঞ্জিনিয়ার এর সব ধরনের ইন্টারেকশন হয় যন্ত্রের সাথে। কিন্তু আমি যন্ত্রের চেয়ে মানুষের সাথে কথা বলতে বেশি পছন্দ করতাম। ব্যবসায়ের বিভিন্ন বিষয়, কোন কোম্পানির কোন বিজ্ঞাপন টা কিভাবে করলে আরো দারুন হতো এইগুলা নিয়ে সবসময় ভাবতাম।সে সময় থেকেই আসলে চিন্তাটা আসে যে ইঞ্জিনিয়ারিং আমার জন্য নয়। এরপর ব্যবসা মার্কেটিং এইসবের খুটিনাটি নিয়ে কাজ করতে করতে একটা সময় ড্রপ আউট হয়ে যাই।
আমি আসলে আমার এখনকার জীবনটা নিয়ে অনেক খুশি, কারন আমি যেটা পছন্দ করি সেটা করতে পেরেছি। আমি খুশি কারন আমি আমার প্যাশনকে প্রফেশন হিসেবে বেছে নিতে পেরেছি। ”
মাহদী মার্কেটিং গুরু হিসেবে ওয়ার্ল্ড ক্লাস মার্কেটিয়ার যেমন টাই লোপেজ, পেং জুন, গ্যারি ভেইনারচাক এর মতো মার্কেটিয়ারদের ফলো করে থাকেন। এ বিষয়ে মাহদী বলেন, “ আমাদের দেশের অধিকাংশ মানুষ মার্কেটিং আসলে কি সেটাই বুঝতে পারেনা। আমাদের সমাজের খুব প্রচলিত একটা কথা আছে যে ফ্রিল্যাঞ্চিং মানেই মার্কেটিং!”
দেশের মার্কেটিং সেক্টরের এমন অবস্থায় মাহদীর স্বপ্ন নিজ উদ্যোগে বেশ কিছু ফলপ্রসূ পরিবর্তন আনা। মার্কেটিং এর বিভিন্ন দিক নিয়ে কথা বলতে গিয়ে মাহদী বলেন, “ দেখুন মার্কেটিং এর হয়তো অনেক ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ন একটা বিষয় হচ্ছে কনটেন্ট মার্কেটিং। পারফেক্ট স্ট্রাটেজি সেট করতে পারলে কনটেন্টের মাধ্যমে আপনি যেকোনো স্তরের মানুষের কাছে পৌছাতে পারবেন। অথচ ভাবুন এই কনটেন্ট মার্কেটিং নিয়ে আমাদের দেশে বাংলায় কোনো বই ই লেখা হয়নি। “
সে জায়গা থেকে নাম মাত্র মুল্যে মাহদী মার্কেটিং এর উপর বেশ কিছু চমকপ্রদ কোর্স অফার করছে। এখন পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ৫ হাজার শিক্ষার্থীরা তার কোর্সগুলো করেছে এবং নিজ নিজ পছন্দের জায়গাতে দারুন ভাবে কাজ করছে। খুব কম মুল্যের বিনিময়ে এতো দারুন কোর্স প্রদান করায় তাকে একটা সময় বিপাকেও পড়তে হয়েছিলো। তবে তার মতে শিক্ষা সবসময় সবার হাতের নাগালে নিয়ে যেতে হতে। প্রত্যেকটা মানুষ পর্যাপ্ত শিক্ষা পেলেই আমাদের মাঝ থেকেও হয়তো টাই লোপেজ, পেং জুন, গ্যারি ভেইনারচাক এর মতো মার্কেটাররা উঠে আসবে।
ভবিষ্যত পরিকল্পনা নিয়ে তাকে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন , “ যা করছি,তাই করে যেতে চাই। আগামী বছর সিলেটের সবচেয়ে বড় ট্রেইনিং ইন্সটিটিউট চালু করবো আমি। আমি জীবনে কারো সাহায্য ছাড়া এই পর্যায়ে এসেছি। একটা মানুষের সামর্থ্য সম্পর্কে আমি বেশ ভালো বুঝি! “