Skip to content

১৪ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ | সোমবার | ২৯শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

প্রাথমিকের দেশসেরা প্রধান শিক্ষিকা ফাতেমা খাতুন

প্রাথমিকে জাতীয় পর্যায়ে দেশের সেরা প্রধান শিক্ষিকা হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন ফাতেমা খাতুন। নওগাঁ সদর উপজেলার কীর্তিপুর-২ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা তিনি। গত রবিবার প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে এক স্মারকে ‘জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা পদক-২০১৯ এর জাতীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ ব্যক্তি/প্রতিষ্ঠান নির্বাচনে’ প্রধান শিক্ষিকা ক্যাটাগরিতে তার নাম উঠে এসেছে।

 

প্রাথমিক শিক্ষায় নিজের প্রতিষ্ঠানকে এগিয়ে নিতে ফাতেমা খাতুনের রয়েছে অনেক সাধনা আর শ্রম। এতদুর পথ চলতে শিক্ষক হিসেবে নিজের সর্বোচ্চটুকু দিয়ে চেষ্টা করে গেছেন তিনি। এ পরিশ্রম শুধু শ্রেষ্ঠত্বের পদক পাওয়ার জন্য নয়, জাতির কান্ডারী হিসেবে নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছেন সত্যিকারের দায়িত্ব। অভিজ্ঞতা, কর্মদক্ষতা ও উদ্ভাবনী শক্তি দিয়ে প্রতিনিয়ত চেষ্টা করেছেন বিদ্যালয়কে এগিয়ে নিতে। আন্তরিকতা আর নিবেদিত হয়ে কাজ করার মাধ্যমে সফলতা আসবে বলে বিশ্বাস তার।

 

প্রাথমিকের দেশসেরা প্রধান শিক্ষিকা ফাতেমা খাতুন

 

কি করেছেন

শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়া রোধ করতে দরিদ্র শিক্ষার্থীদের খাতা-কলম, চশমা ও চার্জার লাইটসহ বিভিন্ন উপকরণ দিয়ে সহায়তা করেছেন এই শিক্ষিকা। এছাড়া ব্যক্তিগতভাবে প্রতি মাসে বেতনের ১০ শতাংশ টাকা বিদ্যালয়ের উন্নয়ন ফান্ডে দেন। ভালো ফলাফলে শিখনফল অর্জনে সহায়ক কার্যাবলি হিসেবে স্থানীয় উদ্যোগে পাঁচজন প্যারাটিচারের ব্যবস্থাসহ শিক্ষার্থীদের কাছে বিদ্যালয় নিরাপদ ও আনন্দদায়ক করে তুলেছেন। বিদ্যালয়ের নিরাপত্তায় স্থানীয় উদ্যোগে ২০১৮ সালে বায়োমেট্রিক হাজিরা ও ছয়টি সিসি ক্যামেরা স্থাপন করেছেন।

 

বিগত বছরগুলোতে- ছুটির মধ্যেও প্রতিদিন বিদ্যালয় সকাল ৭টা-৯টা পর্যন্ত প্রথম-পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রছাত্রীদের পড়ানোর ব্যবস্থা করেছেন। পঞ্চম শ্রেণির সমাপনী পরীক্ষায় ভালো ফলাফলের জন্য রাতে পড়ানোর ব্যবস্থা করেছেন। তিনি নিয়মিত শিক্ষার্থীদের খোঁজখবর রাখতেন। করোনাভাইরাসের মধ্যে বিদ্যালয় বন্ধ থাকলেও অভিভাবকদের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ রেখেছেন। এমনকি বাড়ি বাড়ি গিয়ে তাদের খোঁজখবর রেখেছেন।

 

প্রাথমিকের দেশসেরা প্রধান শিক্ষিকা ফাতেমা খাতুন

 

শিক্ষার্থীদের সঙ্গে তিনি বন্ধুর মতো মিশতেন। তার প্রচেষ্টায় বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় ছাত্রছাত্রীরা উপজেলা, জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ে কৃতীত্বের সাক্ষর রেখেছেন। ছাত্র-ছাত্রীদের হাতের লেখা ভালো করার জন্য মায়েদেরও লেখা শেখানোর ব্যবস্থা করেছেন।

 

শিক্ষিকা জীবন

বিদ্যালয়বান্ধব এই শিক্ষিকা ১৯৯০ সালে একই জেলার মহাদেবপুর উপজেলার বাগধানা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষিকা হিসেবে যোগদান করেন। গত ৩০ বছরের চাকরি জীবনে অনেক বিদ্যালয়বান্ধব কাজ করেছেন এই প্রধান শিক্ষিকা।

 

প্রধান শিক্ষিকা হিসেবে তার ১৪ বছরের অর্জনের মধ্যে রয়েছে- ২০২০ সালে জাতীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ প্রধান শিক্ষিকা, ২০১৯, ২০১৮, ২০১৭ ও ২০১৫ সালে বিভাগীয়, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে ঝরে পড়া রোধে শ্রেষ্ঠ বিদ্যালয়, ২০১৯, ২০১৮, ২০১৬, ২০১৪, ২০১৩, ২০১২, ২০১০ ও ২০০৭ সালে জাতীয়, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ বিদ্যালয়, ২০১৯, ২০১৮, ২০১৭, ২০১৫, ২০০৯ ও ২০০৮ সালে বিভাগীয়, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ প্রধান শিক্ষিকা, ২০১৬ সালে উপজেলা পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ এসএমসি এবং ২০১১ সালে উপজেলা পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ ম্যানেজিং কমিটি শিক্ষা পদক লাভ করেন।

ডাউনলোড করুন অনন্যা অ্যাপ