আলোকচিত্রী সাইদা খানম, এক উজ্জ্বল নক্ষত্রের পতন
ক্যামেরার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের ইতিহাসকে ও মহান ব্যক্তিদের ধারণ করে রেখেছেন আলোকচিত্রী সাইদা খানম। তিনি ভারতীয় উপমহাদেশের আলোকচিত্র-আন্দোলনের অন্যতম ব্যক্তি। মহান মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতিপর্বে অস্ত্র হাতে নারীদের বিরল আলোকচিত্র ধারণ করে তিনি একাত্তরের আলোকচিত্র-যুদ্ধেও নিজের নাম স্বর্ণাক্ষরে লিপিবদ্ধ করেছেন। তিনি একইসঙ্গে লেখকও। তাঁর স্মৃতিকথা আমাদের জাতীয় ইতিহাসের অনন্য দলিল।
আলোকচিত্রী সাইদা খানমের জন্ম ২৯ ডিসেম্বর, ১৯৩৭। ছবি তোলা শুরু করেন ১৯৪৯ সাল থেকে। তখন তার বয়স মাত্র ১২ বছর। ১৯৫৬ সালে জার্মানিতে ইন্টারন্যাশনাল অ্যাওয়ার্ড কোলন পুরস্কার পান তিনি।
সাঈদা খানম ১৯৬৮ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে এম এ পাস করেন। এরপর ১৯৭২ সালে তিনি লাইব্রেরি সায়েন্সে এমএ ডিগ্রি অর্জন করেন। শুধু আলোকচিত্রী নয়, তিনি বাংলাদেশ লেখিকা সংঘের সাধারণ সম্পাদকও। তাঁর ছোটগল্প, উপন্যাস, ফিচার, সাক্ষাৎকার ছাপা হয়েছে বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায়। তিনি সত্যজিৎ রায়ের ওপর কাজ করেছেন একটানা ৩০ বছর। সত্যজিতের তিনটি ছবিতে আলোকচিত্রী হিসেবেও কাজ করেন । বাংলাদেশ ছাড়াও জাপান, ফ্রান্স, সুইডেন, পাকিস্তান, সাইপ্রাস প্রভৃতি দেশে অনুষ্ঠিত বিভিন্ন আলোকচিত্র প্রদর্শনীতে অংশ নিয়েছেন। উল্লেখযোগ্য বইয়ের মধ্যে রয়েছে 'ধূলোমাটি', 'স্মৃতির পথ বেয়ে', 'আমার চোখে সত্যজিৎ রায়', 'উপন্যাসত্রয়ী'।
১৯৯৭ সালে অনন্যা শীর্ষদশ সম্মাননা জয়ী এই মহান শিল্পীর প্রয়াণে আমরা গভীর শোক প্রকাশ করছি এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি জ্ঞাপন করছি আন্তরিক সমবেদনা।