‘হ্যান্ডশেক’ নয় ‘এলবোশেক’
করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে প্রায় পুরো বিশ্বে। মৃতের সংখ্যা সহস্রের ঘরে। এখনও বেড়েই চলছে। প্রাণঘাতী এই ভাইরাস যে কয়েক পদ্ধতিতে বিস্তার লাভ করে এবং করেছে, তার মূলটি হলো করোনা আক্রান্ত মানুষের সংস্পর্শে আসা। এক্ষেত্রে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ আচরণটি হলো হাত মেলানো বা করমর্দন করা বা হ্যান্ডশেক করা। প্রায় পুরো বিশ্বেই কারো সঙ্গে দেখা হলে তাঁর প্রথম পদক্ষেপ হলো হাত মেলানো। পরিচিত বা অপরিচিত মানুষকে সম্ভাষণ জানানোর খুব প্রচলিত রেওয়াজ হলো করমর্দন বা হ্যান্ডশেক। শিষ্টাচার বিধিগুলোর অন্যতম একটি হলো করমর্দন। প্রাচীন কাল থেকেই করমর্দন বা হ্যান্ডশেকের রেওয়াজ চলে এসেছে।
করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার শঙ্কা এড়াতে হ্যান্ডশেক করতে বারণ করা হয়েছে বার বার। কারণ ছোঁয়াচে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ইতোমধ্যে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কয়েক হাজার মানুষের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। আক্রান্ত হয়েছেন আরো অনেকে। এই ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে পরিত্রাণ পেতেই আদিকাল থেকে প্রচলিত সেই হ্যান্ডশেক বারণ করা হয়েছে। সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে খেলোয়াড়রা, সবাই সতর্ক হ্যান্ডশেকের বিষয়ে। তবে যুগ যুগ ধরে চলে আসা এমন একটি শিষ্টাচারমূল আচরণ কিংবা অভ্যাস থেকে দূরে সরে থাকাটাও কষ্টকর। তাইতো করোনার সংক্রমণ থেকে বাঁচতে শুরু হয়েছে 'এলবোশেক' করা। এই পদ্ধতিতে হাতের বদলে ব্যবহার করা হয় কনুই।
সম্প্রতি এলবোশেকের এমন দৃশ্য দেখা গেছে বিসিবি একাডেমি মাঠে। মাঠে ঢুকতেই বাংলাদেশ দলের তারকা ক্রিকেটার তামিম ইকবালের দিকে হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন প্রাইম ব্যাংকের কোচ সরোয়ার ইমরান। হাত না বাড়িয়ে কোচের সঙ্গে ‘এলবোশেক’ই করলেন তামিম। তার সঙ্গে দলের অন্যান্য সদস্যরাও হ্যান্ডশেক এড়িয়ে চলার চেষ্টা করছেন। অনেকেই পারছেন, আবার অনেকেই ভুলে বা বহুদিনের অভ্যাসবশত হাত মেলাচ্ছেন অন্যদের সঙ্গে।
এই বিপর্যয় কত বিস্তৃত হবে বা কত দিন ধরে চলবে তা সময়েই বলে দেবে। তবে এই মুহূর্তে সবার এক যোগে এগিয়ে আসতে হবে। এই এগিয়ে আসা মানে নিজেদের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি। নিজেরা যাতে এই ভাইরাসের বাহক না হয়ে যাই তার জন্য জন সমাগম এড়িয়ে চলা, নিজেদের গৃহবন্দী করা এবং পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকার ওপর গুরুত্বারোপ করতে হবে। আর একান্ত আক্রান্ত হয়ে গেলে দ্রুত চিকিৎসার আওতায় আসাটা জরুরি।