Skip to content

১২ই নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ | মঙ্গলবার | ২৭শে কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

করোনাভাইরাস বনাম সোয়াইন ফ্লু

ঋতু পরিবর্তনের এই সময়ে মৌসুমী রোগের প্রকোপ সাধারণত বেশি থাকে। এ সময় ঋতু পরিবর্তনজনিত রোগের ফলে জ্বর, ঠান্ডা, সর্দি, কাশি কিংবা শরীরের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের থেকে কিছুটা বেশি থাকা ইত্যাদি বিভিন্ন উপসর্গ দেখা যায়। এদিকে করোনাভাইরাসজনিত রোগের উপসর্গগুলো এই মৌসুমি রোগের উপসর্গের সঙ্গে অনেকটাই মিলে যায়। তাই দুই ধরনের সংক্রমণের মধ্যে পার্থক্য ধরতে পারাটা জরুরি।

করোনাভাইরাস
বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা (ডাব্লিউএইচও) করোনাভাইরাসের আনুষ্ঠানিক নামকরণ করেছে ‘নভেল করোনাভাইরাস : সিওভিআইডি-নাইনটিন’। এর পূর্ণাঙ্গ নাম হলো ‘করোনাভাইরাস ডিজিজ নাইনটিন’। অনেকগুলো ভাইরাসের একটি পরিবার ‘করোনাভাইরাস’, যার আক্রমণে সাধারণ সর্দিজ্বর থেকে শুরু করে শ্বাসতন্ত্রের বিভিন্ন ভয়াবহ রোগ হতে পারে। ‘নভেল করোনাভাইরাস’ এই পরিবারের নব্য আবিষ্কৃত সদস্য। চীনের উহান অঞ্চল থেকে এই সংক্রমণের সূত্রপাত হয়। প্রাথমিকভাবে মনে করা হতো এই ভাইরাস শুধু পশু-পাখিকেই আক্রান্ত করতে পারে। তবে বর্তমানে তা মানুষের মাঝেও ছড়িয়ে পড়েছে ব্যাপকহারে। 
বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার দেওয়া তথ্য মতে, করোনাভাইরাসের মৃত্যুহার কিংবা এর বিস্তার নিয়ে এখনও নিশ্চিত করে কিছু বলা সম্ভব নয়। গণস্বাস্থ্যকর্মীরা এই রোগের উৎস খুঁজে বের করতে নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছেন।

রোগের উপসর্গ দেখা দিতে পারে ভাইরাসের সংস্পর্শে আসার দুই থেকে ১৪ দিনের মধ্যে। জ্বর, কাশি, দম আটকে আসা, বমি, নাক দিয়ে পানি আসা, গলা ব্যথা ইত্যাদি হল করোনাভাইরাস সংক্রমণের সাধারণ উপসর্গ। যুক্ত রাজ্যের গবেষকরা করোনাভাইরাসের টিকা নিয়ে ইতোমধ্যেই পরীক্ষা-নিরীক্ষা শুরু করেছেন। এখন পর্যন্ত কোনো আশার সংবাদ পাওয়া যায়নি।

করোনাভাইরাস বনাম  সোয়াইন ফ্লু
 সোয়াইন ফ্লু
‘সোয়াইন ফ্লু’-এর আরেক নাম ‘এইচ ওয়ান এন ওয়ান’। যা দ্রুতগতিতে সংক্রমণশীল এক শ্বাসতন্ত্রের রোগ। মানুষের শরীরে ‘ইনফ্লুয়েঞ্জা এ’ ভাইরাসের সংক্রমণে এই রোগ দেখা দেয়। ভাইরাসের সংস্পর্শে আসার এক থেকে চারদিনের মধ্যে রোগরে উপসর্গ দেখা দিতে শুরু করে। ২০০৯ সালের এপ্রিল মাসে মেক্সিকোতে প্রথম এই ভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়ে। পরবর্তীসময়ে তা ৭৪টি দেশে ছড়িয়ে পড়ে। প্রচ- জ্বর, মাথাব্যথা, গলাব্যথা, শীত অনুভূত হওয়া, শারীরিক অস্বস্তি ও দুর্বলতা হল এই রোগের সাধারণ উপসর্গ। এই রোগের হাত থেকে বাঁচার সবচাইতে কার্যকর পন্থা হলো টিকা। বাজারে এই টিকা ‘কোয়াড্রিভ্যালেন্ট ফ্লু ভ্যাকসিন’ নামে পরিচিত। 

প্রতিরোধ
করোনাভাইরাস সংক্রমণ আর ‘সোয়াইন ফ্লু’য়ের উপসর্গ অনেকটাই এক হওয়াই নিশ্চিত হতে স্বাস্থ্য পরীক্ষার কোনো বিকল্প নেই। বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য মতে, যারা কাশি, জ্বর ও শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যায় ভুগছেন তাদের উচিত দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া।
আর ভাইরাস থেকে দূরে থাকাই করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধের এখন পর্যন্ত সবচাইতে কার্যকর উপায়। এজন্য আক্রান্ত রোগী থেকে দূরে থাকতে হবে। যারা আক্রান্ত হয়েছেন তাদেরও উচিত ঘরে থাকা যাতে ভাইরাস ছড়িয়ে পড়তে না পারে। অ্যালকোহল আছে এমন স্যানিটাইজার বা পরিষ্কারক দ্রব্য সবসময় হাতের কাছে রাখতে হবে। দিনে কয়েকবার কুসুম গরম পানি দিয়ে কমপক্ষে ২০সেকেন্ড হাত ধুতে হবে, বিশেষ করে শৌচাগার ব্যবহারের পর। নিত্যব্যবহার্য দ্রব্য ও স্থান ঘন ঘন পরিষ্কার করতে হবে। যে-কোনো ধরনের ফ্লুতে আক্রান্ত ব্যক্তি থেকে কমপক্ষে ছয় ফিট দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। হাত দিয়ে চোখ, নাক ও মুখ স্পর্শ করা যাবে না। যারা আক্রান্ত হয়ে গেছেন তাদের উচিত জ্বর সেরে যাওয়ার পর আরও ২৪ ঘণ্টা ঘরে থাকা।

ডাউনলোড করুন অনন্যা অ্যাপ