অনলাইনে নারীহয়রানি!
সামাজিক যোগাযোগ ব্যবহারকারী নারীরা নানাভাবে যৌনহয়রানির শিকার হয়। তথ্যপ্রযুক্তির সহজলভ্যতার কারণে নানাবয়েসি মানুষের প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ছে। তেমনি যথেচ্ছ ব্যবহার করে অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে অনেকে। আর তাদের প্রথম টার্গেটের সবচেয়ে বেশি শিকার হচ্ছে নারীরা। অনলাইনে নারীহয়রানি বন্ধে পৃথক কোনো আইন না থাকায় তেমন প্রতিকার পায় না নারীরা।
অনলাইন হয়রানি বলতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক, মেসেঞ্জার, হোয়াটসআপ, ভাইবার, ইমো, ইউটিউবে হয়রানি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানাভাবে উত্ত্যক্ত করা, আইডি হ্যাক থেকে পর্নোগ্রাফির মতো অভিযোগ আছে। জানা যায়, অনলাইন হয়রানির স্বীকার ৫২ভাগ অভিযোগ আসে নারীদের কাছ থেকে। যা মোট ব্যবহারকারীর ৭৪ শতাংশ। প্রতিদিন এই সংখ্যা বাড়ছে। এই নারীদের বয়স ১৮ থেকে ৩০ বছর। এই নারীরা অধিকাংশই জানেন না কোথায় ও কিভাবে অভিযোগ করতে হয়। তাছাড়া যারা জানেন, তারাও মনে করেন অভিযোগ করে কোনো লাভ হবে না।
অনলাইনে হয়রানির শিকার নারীরা যেমন সচেতনার অভাব, লজ্জা ও ভয়ের কারণ সহজে জানাতে চায় না তেমনি সহজেই তারা প্রতারিত হয়ে ব্যক্তিগত জীবন দুর্বিষহ করে ফেলে।
অনলাইনে নারীহয়রানি বন্ধে পৃথক কোনো আইন না থাকলেও সাইবার অপরাধ প্রতিরোধ আইন (আইসিটি অ্যাক্ট-২০০৬, সংশোধিত ২০১৩) ব্যবহার করে প্রতিরোধ করা হয়।
অনলাইনে নারীরা কি ধরনের হয়রানির শিকার হন-
আপত্তিকর ও অশ্লীল মন্তব্য ও ছবি শেয়ার দেওয়া, ফাঁদ পেতে হয়রানি করা, ফেইক আইডি থেকে ফলো করা, ছবি বিকৃত করা, হুমকি দেয়া, আইডি হ্যাক করা ইত্যাদি।
অভিযোগ করতে কোথায় যাবেন-
প্রথমে নিকটস্থ থানায় অভিযোগ করুন বা সাইবার ক্রাইম ইউনিটের ইমেইলে অভিযোগ করতে পারেন। পরিচয় গোপন করেও অভিযোগ করতে পারেন হ্যালো সিটিঅ্যাপ থেকে ডিএমপির কাউন্টার টেরেরিজম ইউনিটে। এখানে সরাসরিও অভিযোগ করা যায়।
ঠিকানা : ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ হেড কোয়াটায়াটার্স, ৩৬ শহিদ ক্যাপ্টেন মনসুর আলী সরণি, রমনা, ঢাকা।
কিভাবে অভিযোগ করবেন?
অভিযোগপত্রের সাথে প্রমাণাদি জমা দিতে হবে। অভিযুক্তের ফোনকল, স্ক্রিনশট, লিংক, অডিও/ভিডিও ফাইলসহ অন্যান্য ডক্যুমেন্ট সংযুক্ত করতে হবে। মনে রাখতে হবে, স্ক্রিনশর্ট নেওয়ার সময় যেন অ্যাড্রেসবারের ইউআরএল দৃশ্যমান হয়। প্রয়োজনে সাইবার ক্রাইম ইউনিটের পরামর্শ নিন।
অনলাইনে হয়রানি থেকে কীভাবে নিজেকে নিরাপদ রাখতে পারেন-
অচেনা কারো ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট গ্রহণ না করা।
নিজের ব্যক্তিগত তথ্য উন্মুক্ত না করা।
প্রোফাইলে প্রাইভেসি দিয়ে রাখা। অন্যকে ট্যাগ করার অপশন না দেয়া।
প্ররোচিত হয়ে আপত্তিকর ছবি /ভিডিও শেয়ার না দেওয়া।
নিজের বা পরিবারের কোনো তথ্য শেয়ারের আগে সর্তক হওয়া।
অজানা লিংকে ক্লিক না করা।
প্রতিবার ব্যবহারের পর ডিভাইস লগ আউট করুন।
সন্দেহজনক ইমেইল বা মেসেজের জবাব না দেওয়া।
অনলাইনে পরিচিত বা অপরিচিত কারো সাথে দেখা করার আগে বা লেনদেনের ব্যাপারে সতর্ক হওয়া।
পরিবারের কেউ বিপদে আছে জানিয়ে কেউ ম্যাসেজ দিলে আগে নিশ্চিত হওয়া।