Skip to content

২৬শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ | মঙ্গলবার | ১১ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পূজার সাজে রূপসজ্জা

 

আসছে শারদীয় দুর্গাপূজা। আর প্রতিবছরের মতো সাজসজ্জায় এবারও যোগ হয়েছে কিছু নতুনত্ব। একঘেয়েমি নিয়মকানুন পরিবর্তন করে নতুনের ছোঁয়া দিন এবারের পূজার সাজে। উৎসবের দিনগুলোতে স্পেশাল সাজের দরকার হয়, আর তা যদি হয় পূজার সময় তাহলে তো কথাই নেই। পূজার সময় বিশেষ করে ষষ্ঠী থেকে দশমী পর্যন্ত প্রতিদিন ভিন্ন সাজ এবং পোশাকে নিজেকে আলাদা রাখার চেষ্টা প্রায় সবাই করে থাকে। এ বছর গাঢ় ও হালকা দুই ধরনের মেকআপই ব্যবহার করা হচ্ছে।  তবে দিন ও রাত সময়ভেদে মেকআপ করতে হবে।

পূজায় দিনের সাজ

পূজায় দিনের সাজ হালকা ও উজ্জ্বল হওয়াটাই ভালো। যেন মন্দিরে পূজায় অঞ্জলি দেওয়ার সময় শুভ্র ও স্নিগ্ধ ভাবটা থাকে। দিনের হালকা সাজের জন্য ফাউন্ডেশন ব্যবহার না করে বরং বিবি ক্রিম বা সিসি ক্রিম ব্যবহার করতে পারেন। এটা ন্যাচারাল লুক রাখবে। এরপর ত্বকের শেড অনুযায়ী প্রেসড পাউডার এবং সামান্য বেজ কম্প্যাক্ট বুলিয়ে নিন। চোখে হাইলাইট করার জন্য অফ-হোয়াইট হাইলাইট লাগিয়ে নিন। এরপর পোশাকের সঙ্গে মিলিয়ে হালকা আইশ্যাডো লাগিয়ে আই পেন্সিল দিয়ে চোখের সাজ শেষ করতে পারেন। অথবা গাঢ়সবুজ, নেভি ব্লু, গাঢ় বাদামি বা কালো কালারের কাজল লাগিয়ে তা ব্লন্ড করে স্টে করে নিন। চোখের সাজ শেষ করার আগে মাশকারা লাগাতে ভুলবেন না যেন। গালে দিন হালকা ব্রাউনের ছোঁয়া। লাগিয়ে নিন পিঙ্ক, কোরাল বা মভ কালারের লিপস্টিক। ট্রেন্ডি বা ট্র্যাডিশনাল হেয়ার কাটে চুলটা সেট করে নিন। পনিটাইল বা বেণিও করা যেতে পারে। সবশেষে সেটিং স্প্রে দিয়ে সারাদিনের জন্য মেকআপটা সেট করে ফেলুন। পারফিউম ব্যবহার করতে ভুলবেন না।

পূজার সাজে রূপসজ্জা
পূজায় রাতের সাজ

রাতের বেলা সাজের জন্য মুখে আইস অ্যাপ্লাই করুন। এতে ত্বকের সঙ্গে মেকআপ ভালোভাবে মিশে যাবে। এরপর প্রাইমার ব্যবহার করে ফাউন্ডেশন ব্লন্ড করুন। প্রেসড পাউডার লাগিয়ে বেজ মেকআপ কমপ্লিট করুন। চোখে হাইলাইট করে ব্রাউন, ব্রোঞ্জ, গোল্ড আইশ্যাডো ব্যবহার করুন। ড্রামাটিক ইফেক্টের জন্য ডার্ক ব্রাউন, ডার্ক গ্রে আইশ্যাডো আপওয়ার্ড স্ট্রোকে ব্যবহার করুন। আই ব্রো পেন্সিল ব্যবহার করুন এবং ডার্ক ব্রাউন বা বল্গ্যাক আইশ্যাডো দিয়ে ভ্রƒ এঁকে নিতে পারেন। এতে ভ্রƒ আরও ঘন ও মোটা দেখাবে। মাশকারা লাগিয়ে চোখের সাজ শেষ করুন। লিপস্টিকের ক্ষেত্রে মেটালিক রং বেছে নিতে পারেন। রেড, চেরি, প্লাম রঙের লিপ কালার ভালো মানাবে। ব্রাউন বা পিচ কালারের ছোঁয়া দিন গালে। সেটিং স্প্রে ব্যবহার করে মেকআপ সেট করে নিন। পোশাক যদি হয় শাড়ি তাহলে এর সঙ্গে হালকা খোঁপা করে একটা সাদা ফুলের মালা জড়িয়ে দিন। কপালে দিন ময়ূরকণ্ঠী টিপ। কুমকুম বা সিঁদুর পরলে সিঁথির প্রান্তে একটা ছোট্ট স্টোন বসানো টিপ পরুন। পায়ে আলতা দিলে ভালো লাগবে।
এক প্যাঁচে পরা চওড়া পাড়ের শাড়ি, সিঁথিতে সিঁদুর, কপালের লাল টিপ, আলতা, হাতভর্তি চুড়ির সঙ্গে নিজেকে সাজিয়ে নিন পরিপূর্ণ বাঙালি নারীরূপে।

চুল বাঁধার নানাধরন

পূজার সাজে রূপসজ্জা
খোলাচুলে স্টাইল করবেন, নাকি বেঁধে রাখবেন; কার্ল করবেন, নাকি স্ট্রেট চুল ভালো লাগবেÑ এ নিয়ে মনে হাজারো প্রশ্ন। মাথায় রাখবেন মুখের গড়ন ও পোশাকের ওপর নির্ভর করবে হেয়ারস্টাইল। কারণ গোলমুখে যে হেয়ারস্টাইল মানাবে লম্বামুখে নিশ্চয়ই সেই হেয়ারস্টাইল স্যুট করবে না। আবার ওয়েস্টার্ন ড্রেসের সঙ্গে যে হেয়ারস্টাইল আর শাড়ির সঙ্গে যে হেয়ারস্টাইল তা একটু আলাদা করতে পারেন। তাই পূজার সময় কী ধরনের হেয়ারস্টাইল করতে পারেন তা নিয়ে কয়েকটা অপশন রইল আপনাদের জন্য।

সাজগোজে চুলের স্টাইল কিন্তু ভারি গুরুত্বপূর্ণ। ফিনিশিং টাচ যাকে বলে। চুল একটু ঠিক করে বাঁধলে, পুরো লুকটাই বদলে যায়। চুল একটু লম্বা হলে পূজার সকালে হালকা হাত খোঁপাও ভালো লাগবে। শাড়ির সঙ্গে দিব্যি মানাবে। মাঝখানে সিঁথি করে সামনের দিকটা অল্প ফুলিয়ে নিতে পারেন। একটু কায়দা করতে চাইলে পুরো চুল ব্যাক কোম করে নিয়ে লো বান করতে পারেন।

পূজার সাজে রূপসজ্জা
পূজার সন্ধ্যায় একটু গর্জিয়াস সাজতে চাইলে খোঁপায় ফুল বা একটু সাবেকি ধাঁচের খোঁপার কাঁটা বা হেয়ার অ্যাকসেসরি লাগাতে পারেন। খোঁপার ওপরে হেয়ার পিনও শাড়ির সঙ্গে ভালো মানাবে। যদি চুলে কোনো স্টাইলিং না করেন বা সিম্পল স্টাইল রাখেন তখন জমকালো সাজের জন্য কানে ভারি লম্বা দুল পরতে পারেন। তখন গলায় ভারি কিছু না পরলেও চলবে। হালকা সরু চেনই যথেষ্ট। ওয়েস্টার্ন ওয়্যার পরলে চুলে ব্যাক কোম করে পুরো চুলটা টুইস্ট করে একদিকে নিয়ে এসে পিনআপ করে নিন। দেখতে ভালো লাগবে। চুল সবসময় বাঁধতে হবে এমন নয়, খোলা চুলেও স্টাইলিং করা যায়। স্ট্রেট করিয়ে নিতে পারেন আবার হালকা কার্লও করতে পারেন।

পূজার সাজে ফুল থাকা চাই-ই। দিন হোক বা রাত, চুল সাজাতে পারেন ফুলের স্টিম¯িœগ্ধতায়। সকালে মন্দিরে যাওয়ার সময় অর্কিডের গুচ্ছ গুঁজে দিন চুলে। অথবা চুল খোঁপা করে তাতে জড়িয়ে নিতে পারেন শিউলি ফুল, বেলি ফুল বা কাঠবেলির মালা। কানের পাশে গুঁজে দেওয়া নীল অপরাজিতাও অন্যদের থেকে আলাদা করে তুলবে আপনাকে। পূজার সাজপোশাকে লাল রঙের উপস্থিতি যেন নিয়ে আসে উৎসবের পরিবেশ। বড়ো লাল টিপ আর পরিণীতা হলে সিঁথিতে সিঁদুরের রঙিন ছোঁয়া নারীর সৌন্দর্য বাড়িয়ে দেয় বহুগুণ। আলতা তো রয়েছেই। পায়ে আলতার প্রলেপ আর হাতভর্তি রঙিন চুড়ি।

টিপস

পূজার সাজে রূপসজ্জা
– মেকআপ করার আগে ও পরে মুখ ভালোভাবে পরিষ্কার করতে হবে অবশ্যই। এজন্য টোনার ব্যবহার করতে পারেন। টোনার হিসেবে গোলাপজল খুব ভালো কাজ করে।
–  শুধু মুখে নয় বরং ঘাড় ও গলায় বেজ মেকআপ নেওয়া উচিত।
–  লিকুইড মেকআপ নিলে ফাউন্ডেশন ত্বকের কালারের চেয়ে এক শেড হালকা নেবেন। এতে আরও উজ্জ্বল দেখাবে।
– ব্রাউন বা বল্গ্যাক আইশ্যাডো ও মাশকারার হালকা ব্যবহারে ভ্রƒ আরও ঘন করে নিতে পারেন।
– গলার নিচের অতিরিক্ত মাংস লুকাতে পারেন ডার্ক কোনো কালারের ব্লুনাশনের ব্যবহারে। এছাড়া নাকে খাড়া ভাব আনার জন্যও বল্গাশন একইভাবে ব্যবহার করতে পারেন।
– গর্জিয়াস লুক আনার জন্য নাক, কপাল ও গালে হালকাভাবে হাই লাইটের ছোঁয়া দিতে পারেন। 

 

— ফাতেমাতুল মনীষা 
বিউটি এক্সপার্ট 
পিংক ব্লাশ বিউটি লাউঞ্জ

ডাউনলোড করুন অনন্যা অ্যাপ