চোখ সাজাতে ফল্স আইল্যাশ
মায়াভরা চোখ যে কারো মনে দাগ কাটতে পারে। আর নিজের চোখকে আরও বেশি সুন্দর করে তুলতে নানান ধরনের প্রসাধনীর পাশাপাশি জনপ্রিয়তা পাচ্ছে হরেক ডিজাইনের ফেইক বা ফল্স আইল্যাশ।
কৃত্রিম আইল্যাশ চোখের পাপড়িকে অনেক ড্রামাটিক এবং আকর্ষণীয় করে তুলে। তবে শুধু ফেইক ল্যাশ বেছে নিলেই চলবে না, বুঝতে হবে নিজের চোখের ধরন। পাশাপাশি ফেইক ল্যাশ যদি দেখতে মানানসই না হয় তাহলে সাজে ফুটে উঠতে পারে বাড়তি কৃত্রিমতা, যা মোটেও কাম্য নয়।
চোখের আকৃতির সঙ্গে সামঞ্জস্যতা রেখে ল্যাশ বাছাই করতে হবে-
– চোখে যদি একটু ভিতরের দিকে ঢোকানো হয় তাহলে লম্বা পাপড়ির ছড়ানো ধরনের ল্যাশ বেছে নিন।
– চোখের বাইরের দিকের কোণা যদি একটু নিচের দিকে নামানো হয় তাহলে এমন ল্যাশ বেছে নিন যার বাইরের দিকের পাপড়িগুলো বেশি লম্বা ও টানা হবে।
– যাদের চোখের আই লিড ঢেকে থাকে তাদের উচিত হালকা এবং তুলনামূলক ছোট আকারের ল্যাশ বেছে নেওয়া।
– যাদের চোখ বেশ বড় এবং আই লিডও সুন্দরভাবে বোঝা যায় তাদের জন্য শুধু উপরের পাতায় ল্যাশ পরলেই চলবে না।
– রাতে ঘুম কম হলে বা চোখ ফুলে গেলে বাইরের দিকে একটু লম্বা পাপড়ির ল্যাশ বেছে নিন। এতে চোখ দেখতে কিছুটা খোলা দেখাবে।
চোখের আকার অনুযায়ী ল্যাশ
নিজের চোখের তুলনায় বড় বা ছোট ল্যাশ কোনোটাই মানানসই নয়। ল্যাশ প্রথমে চোখের পাতার উপর ধরে বুঝে নিন তা ঠিক আছে নাকি ট্রিম করার প্রয়োজন আছে।
তাই ল্যাশ বাছাইয়ের ক্ষেত্রে আগে চোখের আকার মেপে নিতে হবে। শুনতে অদ্ভুত শোনালেও কাজটি সহজ। পেন্সিল, মেকআপ ব্রাশ যে-কোনো একটি নিয়ে চোখের কোণা থেকে বাইরে পর্যন্ত মেপে নিন। ওই মাপমতোই ল্যাশ কেটে নিন। সবসময় ল্যাশ ট্রিম করুন নিচের ব্যান্ডের দিক থেকে। এতে প্রয়োজনের অতিরিক্ত পাপড়ি কেটে ফেলার ঝুঁকি থাকে না।
ল্যাশ লাগাতে হবে ঠিক যেখানে আপনার প্রাকৃতিক ল্যাশ শুরু হয়েছে সেখানে। কারণ বেশি কোণা থেকে লাগালে তা চোখের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।
ল্যাশ নির্ধারণ করা
দুই চোখের জন্য ল্যাশ নির্দিষ্ট করা থাকে। এটা হয়তো অনেকেরই জানা নেই। ল্যাশের প্যাকেটে সব সময় ল্যাশ নির্দিষ্ট করা থাকে না। সেক্ষেত্রে ল্যাশ নাকের নিচে ধরুন যেন পাপড়িগুলো বাইরের দিকে থাকে। এবার যেই চোখের নিচে যেই ল্যাশটি থাকবে ওই চোখেই সেটি বসবে।
ল্যাশ ব্যান্ডে গ্লু লাগানোর সময় সতর্ক থাকতে হবে। ল্যাশ গ্লু ব্যবহার করতে হবে অল্প পরিমাণে। অতিরিক্ত গ্লু চোখের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। ল্যাশে গ্লু লাগানোর পর কয়েক সেকেন্ড অপেক্ষা করুন, এতে আঠালোভাব বাড়বে এবং গ্লু পাপড়ির সঙ্গে ভালোভাবে বসবে।
গ্লু হালকা শুকিয়ে এলে ঠিক চোখের পাপড়ি ভিতরের কোণায় যেখান থেকে শুরু হয়েছে সেখানে বসিয়ে আঙুল টুইজারের সাহায্যে চেপে লাগিয়ে দিন। ল্যাশ বসানোর পর ভালোভাবে চেপে পাপড়ির সঙ্গে মিশিয়ে নিন। নতুবা দেখতে বেমানান লাগবে।
ল্যাশ শুধু পরলেই চলবে না, এটি ভালোভাবে পরিষ্কার করে সংরক্ষণ করতে হবে। ভালোমানের ফেইক আইল্যাশ বেশ ব্যয়বহুল হতে পারে যা মোটেও একবার ব্যবহারের জন্য নয়। তাই যত্ন সহকারে ব্যবহার ও সংরক্ষণ করলে ফেইক ল্যাশ অনেকদিন পরা যেতে পারে।
এখানে ফেইক ল্যাশ পরিষ্কারের দু’টি পদ্ধতি তুলে ধরা হলো।
পদ্ধতি ১
প্রয়োজনীয় উপাদান- তুলার মেইকআপ প্যাড, নারিকেল তেল, কটন সোয়াব, চিমটা।
তুলার প্যাড-এর উপর ল্যাশটি রেখে, অল্প তেলে কটন সোয়াব ভিজিয়ে নিন। তুলার প্যাডের উপরে চিমটা দিয়ে ল্যাশটি ধরুন তারপর তেলে ভেজানো তুলার কাঠিটি দিয়ে পরিষ্কার না হওয়া পর্যন্ত মুছতে থাকুন।
পরিষ্কার হয়ে গেলে টিস্যুর সাহায্যে বাড়তি তেল মুছে নিন। সঠিক বক্সে তা সংরক্ষণ করুন।
পদ্ধতি ২
প্রয়োজনীয় উপাদান- তুলার মেকআপ প্যাড, আই মেকআপ রিমুভার, চিমটা।
দুটি তুলার প্যাড মেকআপ রিমুভারে ডুবিয়ে তার মাঝখানে ৩০ সেকেন্ড ল্যাশটি রাখুন। তারপর একটা চিমটার সাহায্যে ল্যাশের গায়ে লেগে থাকা আঠা তুলে নিন। আরেকটি তুলার প্যাড মেকআপ রিমুভারে ডুবিয়ে তা দিয়ে পাপড়িটি ভালোভাবে মুছে বাক্সে সংরক্ষণ করুন।
-অদ্বিতী
ছবি : নীল ভৌমিক