
গর্ভাবস্থায় ডায়াবেটিস হলে কী করবেন?

গর্ভকালীন ডায়াবেটিস হলো এমন এক অবস্থা, যখন একজন নারীর গর্ভধারণের সময় রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা বেড়ে যায়, অথচ তার আগে ডায়াবেটিস ছিল না। সাধারণত এটি গর্ভাবস্থার শেষ তিন মাসে বেশি দেখা যায় এবং প্রতি ১০ জন গর্ভবতীর মধ্যে প্রায় ১ জন এই সমস্যায় ভোগেন।
এটি টাইপ ১ বা টাইপ ২ ডায়াবেটিসের মতো নয়—গর্ভকালীন ডায়াবেটিস বেশিরভাগ সময় শিশুর জন্মের পর সেরে যায়। তবে গর্ভাবস্থায় গ্লুকোজ নিয়ন্ত্রণে না থাকলে তা মা ও শিশু উভয়ের জন্য বিপদ ডেকে আনতে পারে।
কেন হয় গর্ভকালীন ডায়াবেটিস?
এটি হওয়ার ঝুঁকি বেশি যদি—বয়স ২৫ বছরের বেশি হয়, অতিরিক্ত ওজন বা স্থূলতা থাকে, শারীরিক পরিশ্রম কম করা হয়, পরিবারে ডায়াবেটিসের ইতিহাস থাকে, আগের গর্ভধারণে ডায়াবেটিস হয়েছিল, হরমোনজনিত সমস্যা থাকে (যেমন: থাইরয়েড, পলিসিস্টিক ওভারি) , উচ্চ রক্তচাপ বা কোলেস্টেরল বেশি থাকে এমন জাতিগোষ্ঠীতে জন্ম।
কীভাবে প্রতিরোধ করবেন?
গর্ভকালীন ডায়াবেটিস প্রতিরোধযোগ্য। এজন্য- ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে , পরিবারে কারও ডায়াবেটিস থাকলে গর্ভধারণের আগেই স্ক্রিনিং করা , রক্তচাপ ও কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখুন, চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে গর্ভধারণ করুন, স্বাস্থ্যকর খাবার খান, কিন্তু অতিরিক্ত খাদ্য-সংযম করবেন না—শিশুর বিকাশ ব্যাহত হতে পারে, নিয়মিত হালকা ব্যায়াম করুন, বিশেষত হাঁটাহাঁটি (যদি চিকিৎসক না নিষেধ করেন)।
যদি ডায়াবেটিস ধরা পড়ে?
খাবারে শৃঙ্খলা আনুন, হালকা ব্যায়াম চালিয়ে যান, রক্তে গ্লুকোজ নিয়মিত পরিমাপ করুন, খাদ্য ও ব্যায়ামেও নিয়ন্ত্রণ না এলে, চিকিৎসকের পরামর্শে ওষুধ বা ইনসুলিন নিতে হতে পারে। গর্ভকালীন ডায়াবেটিস কোনো অসাধ্য বা আতঙ্কের বিষয় নয়। সময়মতো সঠিক ব্যবস্থা নিলে মা ও শিশুর উভয়ের সুস্থতা নিশ্চিত করা সম্ভব।