
ঠান্ডায় ১২ রাত পানিতে ভিজে শুটিং: জানালেন অপরাজিতা

চোখে সেই চেনা হাসির দীপ্তি, যার উপস্থিতি পর্দায় ছুঁয়ে যায় হৃদয়। এবার কিন্তু একেবারেই ভিন্ন এক অপরাজিতা আঢ্যকে দেখতে চলেছেন দর্শকরা—এক নতুন রূপ, নতুন চরিত্রে।
অভিনয় জীবনের প্রথমবারের মতো এক নেতিবাচক চরিত্রে ধরা দেবেন তিনি। আতিউল ইসলাম পরিচালিত ‘বানসারা’ ছবিতে অপরাজিতা গৌরিকা দেবী নামে এক চরিত্রে অভিনয় করছেন, যিনি ক্ষমতাশালী ও রহস্যময়। ছবিতে তার বিপরীতে রয়েছেন অভিনেতা বনি সেনগুপ্ত, যিনি হয়েছেন এক পুলিশ অফিসার।
পুরুলিয়ার এক পাহাড় ঘেরা নির্জন গ্রামে হয়েছে ছবির মূল অংশের শুটিং। শহরের কোলাহল থেকে অনেক দূরে, শীতের কাঁপুনি ঠেলে টানা ১২ দিন শুটিং করেছেন অপরাজিতা। কষ্টসাধ্য হলেও এই অভিজ্ঞতাকে দারুণ রোমাঞ্চকর বলে মনে করছেন তিনি।
শুটিংয়ের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করতে গিয়ে অপরাজিতা বলেন, “ওই জায়গায় নেটওয়ার্ক ছিল না, তাই কেউ বিরক্ত করতে পারেনি—এটাও একটা শান্তি ছিল। তবে ঠান্ডা ছিল ভয়ঙ্কর, সবাই কাঁপছিল। কেউ কেউ তো কম্বল জড়িয়ে শট দিচ্ছিল। আর আমি পাতলা শাড়ি পরে রাতভর পানিতে ভিজে শুটিং করেছি। অনেক কষ্ট ছিল, কিন্তু উপভোগ করেছি প্রতিটি মুহূর্ত।”
চিত্রনাট্য শুনে মুগ্ধ হয়ে ছবিতে অভিনয়ের সিদ্ধান্ত নেন অপরাজিতা, যদিও শুরুতে কাজটি করতে আগ্রহী ছিলেন না। কিন্তু চরিত্রের গভীরতা ও গল্পের ভিন্নতা তাকে টেনে নেয়।
পুরুলিয়ার পাহাড়ের চূড়ায় তৈরি করা হয়েছিল সিনেমার সেট। ৪০ ফুট উঁচু এক দেবী মূর্তি নির্মাণের পাশাপাশি গ্রামের ঘরবাড়ি সাজানো হয় নতুন করে। প্রতিদিন শুটিং ইউনিটে ছিল ৬০০ থেকে ৭০০ জনের বিশাল টিম।
‘বানসারা’ নামের এক জঙ্গলে ঘেরা গ্রামের কাহিনি ঘিরেই আবর্তিত হয়েছে ছবির গল্প। গ্রামের নামকরণই হয়েছে বনদেবীর নামে। গ্রামবাসীদের বিশ্বাস, কোনো অপরাধ ঘটলে দেবী নিজ হাতে শাস্তি দেন, ত্রিশূল দিয়ে বধ করেন অপরাধীকে।
এই দেবীর বার্তা পৌঁছে দেন গ্রামের বড়মা। আর সেই ‘বড়মা’ চরিত্রেই রূপদান করেছেন অপরাজিতা আঢ্য। গৌরিকা দেবীর চরিত্রে তিনি হয়ে উঠেছেন গ্রামের অভিভাবক, রক্ষক এবং একইসঙ্গে প্রভাবশালী রাজনৈতিক চরিত্র।
ইতোমধ্যে ছবির প্রথম পর্যায়ের শুটিং শেষ হয়েছে। দ্বিতীয় ধাপের শুটিং হবে কলকাতায়। পরিচালক জানিয়েছেন, খুব শিগগিরই সিনেমাটির টিজার প্রকাশিত হবে, তার পরই মুক্তির দিনক্ষণ জানানো হবে।