Skip to content

ঘরোয়া টোটকা যখন বিপদের কারণ 

ঘরোয়া টোটকা যখন বিপদের কারণ 

একটু জ্বরজারি, ত্বকের সমস্যা কিংবা সাধারণ কষ্ট হলেই অনেকেই আগে ডাক্তার দেখানোর বদলে ঘরোয়া টোটকার দ্বারস্থ হন। বিশেষ করে সোশ্যাল মিডিয়ার যুগে নানা রকম টোটকার ভিডিও, পোস্ট আর রিল দেখে এসব ঘরোয়া উপায়কে কার্যকর ও নির্ভরযোগ্য মনে হয়। তবে সব টোটকাই নিরাপদ নয়। কিছু টোটকা রয়েছে যেগুলো উপকারের বদলে হতে পারে মারাত্মক ক্ষতির কারণ।

পোড়া স্থানে ঘি, তেল বা বরফ দেওয়া – অনেকে মনে করেন পোড়ার পর ঘি বা তেল লাগালে ব্যথা কমে যায়। কেউ কেউ আবার বরফ দিয়ে ব্যথা কমাতে চান। কিন্তু চিকিৎসকরা বলছেন, এগুলো ভুল পদ্ধতি। বরং এতে সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ে। পোড়ার পর সবচেয়ে ভালো উপায় হলো কয়েক মিনিট ঠাণ্ডা পানির নিচে জায়গাটি ধরে রাখা।

ব্রণ বা ক্ষতের ওপর টুথপেস্ট লাগানো – ব্রণের ওপর টুথপেস্ট লাগালে তা শুকিয়ে যাবেএই ধারণা প্রচলিত। কিন্তু সত্যি হলো, টুথপেস্টে থাকা রাসায়নিক উপাদান ত্বকের জন্য উপযুক্ত নয়। এতে ত্বকে জ্বালাভাব, লালচে দাগ বা সংক্রমণ দেখা দিতে পারে।

কান পরিষ্কারে জ্বলন্ত মোম ব্যবহার – কানে মোম ঢুকিয়ে আগুন ধরিয়ে পরিষ্কারের একটি বিপজ্জনক পদ্ধতি অনেকেই এখনো ব্যবহার করেন। এটি শুধু ভুল নয় বরং এতে কানের পর্দা ছিঁড়ে যেতে পারে। এমনকি শ্রবণশক্তিও ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। কানের সমস্যা থাকলে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ।

ত্বকের যত্নে সরাসরি লেবুর রস লাগানো – লেবুতে এসিড থাকায় অনেকেই মনে করেন এটি ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায়। কিন্তু লেবুর রস সরাসরি ত্বকে লাগালে ক্ষতি হতে পারে। বিশেষ করে সূর্যের আলোতে বের হলে ত্বক পুড়ে যেতে পারে। চাইলে লেবু ফেসপ্যাকে মিশিয়ে হালকাভাবে ব্যবহার করা যেতে পারে।

স্ট্রেচমার্ক দূর করতে দই-হলুদ বা তেল ঘষা – ঘরোয়া উপায়ে স্ট্রেচমার্ক দূর করার চেষ্টা অনেকেই করেন। কখনো দই-হলুদ দিয়ে, কখনো নারকেল তেল ঘষে। কিন্তু বিশেষজ্ঞদের মতে এইসব টোটকা খুব একটা কার্যকর নয়। স্ট্রেচমার্ক কমাতে নির্দিষ্ট মেডিকেল থেরাপি বা চিকিৎসকের পরামর্শই ভালো ফল দিতে পারে।

দাঁতের ব্যথায় অ্যালকোহল পান করা – কেউ কেউ দাঁতের ব্যথা কমাতে অ্যালকোহল পান করার পরামর্শ দেন। এটি একেবারেই ভুল ধারণা। অ্যালকোহলে এমন কিছু নেই যা দাঁতের ব্যথা কমাতে পারে। বরং গরম পানিতে লবণ মিশিয়ে কুলকুচি করলে সাময়িক আরাম পাওয়া যায়। কিন্তু ব্যথা থাকলে দেরি না করে ডেন্টিস্ট দেখানো জরুরি।

সর্দি-কাশিতে মাউথওয়াশ দিয়ে গার্গল – গলা ব্যথা বা সর্দি-কাশির সময় অনেকেই মাউথওয়াশ দিয়ে গার্গল করেন। অথচ এতে থাকা বিভিন্ন রাসায়নিক উপাদান গলার সমস্যা আরও বাড়িয়ে দিতে পারে। তার চেয়ে আদা, গরম পানি, গোলমরিচ ও তুলসীপাতা দিয়ে তৈরি চা বেশি উপকারী।

ঘরোয়া টোটকা সব সময় খারাপ নয়। অনেক ক্ষেত্রে এগুলো প্রাথমিক উপশমে কাজে দেয়। কিন্তু অন্ধভাবে বিশ্বাস করলে ক্ষতির ঝুঁকিও বাড়ে। তাই শরীর বা ত্বকের কোনো সমস্যায় আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়াই সবচেয়ে নিরাপদ পথ।