আত্মগোপনে থেকে ঋতুপর্ণার জন্য কবিতা লিখলেন ফেরদৌস

চিত্রনায়ক থেকে রাজনীতিবিদ—এভাবেই বদলে যায় ফেরদৌসের পরিচয়। ঢাকা–১০ আসন থেকে জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিতও হন তিনি। তবে সরকার পতনের পর থেকেই রয়েছেন আত্মগোপনে। এ সময় প্রকাশ্যে না থাকলেও এক ভিন্ন পরিচয়ে সামনে এলেন ফেরদৌস—কবিতা লেখক হিসেবে। তাঁর লেখা একটি কবিতা সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শেয়ার করেছেন ভারতের জনপ্রিয় অভিনেত্রী ও তাঁর ঘনিষ্ঠ বন্ধু ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত। এতে ফের আলোচনায় উঠে এসেছেন সাবেক এই সংসদ সদস্য।
‘হঠাৎ বৃষ্টি’ দিয়ে বড় পর্দায় আত্মপ্রকাশ করেন চিত্রনায়ক ফেরদৌস। ১৯৯৮ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত এই চলচ্চিত্র দিয়েই দর্শকের হৃদয়ে স্থায়ী জায়গা করে নেন তিনি। বাংলাদেশ ও ভারত মিলিয়ে তাঁর অভিনয়জীবন পার করেছে প্রায় দুই যুগ—২৬ বছর। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে অভিনয়ের পাশাপাশি রাজনীতিতেও সক্রিয় হয়ে ওঠেন এই তারকা।
ভারতীয় চিত্রনায়িকা ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তের সঙ্গে ফেরদৌসের বন্ধুত্ব শুরু অভিনয়ের শুরুর দিক থেকেই। পর্দার বাইরেও এই বন্ধুত্ব ছড়িয়ে পড়েছে ব্যক্তিজীবনে। একে অপরের বাড়িতে অতিথি হওয়া থেকে শুরু করে দুই পরিবারের মধ্যে গড়ে উঠেছে গভীর সখ্য।
গত ৭ জুন ছিল ফেরদৌসের জন্মদিন। যদিও দেশের শোবিজ অঙ্গনে দিনটি তেমনভাবে চোখে পড়েনি, তবে বন্ধু হিসেবে ঋতুপর্ণা সেই দিনটিকে গুরুত্ব দিয়ে মনে রেখেছেন। ফেরদৌসের লেখা একটি কবিতার স্ক্রিনশট ফেসবুকে শেয়ার করে তিনি লিখেছেন, ‘আমার প্রিয় বন্ধু ও পরিবারের একজন ফেরদৌসকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা। এই অসাধারণ উপহারের জন্য (তোমার লেখা কবিতা) ধন্যবাদ।’
সম্প্রতি প্রেক্ষাগৃহে এসেছে ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত অভিনীত নতুন ছবি ‘পুরাতন’। এই ছবিতে এক ভিন্ন মেজাজের ঋতুপর্ণাকে দেখেছেন দর্শক। ছবিতে তাঁর মায়ের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন বর্ষীয়ান অভিনেত্রী শর্মিলা ঠাকুর।
‘পুরাতন’ সিনেমার সাফল্য উপলক্ষে ফেরদৌস একটি কবিতা পাঠান ঋতুপর্ণাকে। অভিনেত্রীর ভাষ্য অনুযায়ী, ফেরদৌসের সেই কবিতাটি ছিল ছবির জন্য এক ধরনের শুভকামনা—আর তাই সেটি তাঁর কাছে হয়ে ওঠে আরও বেশি মূল্যবান।
বিশেষ প্রদর্শনীতে ফেরদৌসের উপস্থিত থাকার কথা থাকলেও শেষমেশ তা সম্ভব হয়নি। এ নিয়ে ঋতুপর্ণা লেখেন, ‘পুরাতনের জন্য তোমার পাঠানো কবিতা ছবিটির সাফল্যের প্রতীক হয়ে উঠেছে। প্রদর্শনীর সময় আমরা তোমার অভাব অনুভব করেছি। আশা করছি খুব তাড়াতাড়িই আবার দেখা হবে, একসঙ্গে কাজের সুযোগও হবে।’
ঋতুপর্ণার একটি সাম্প্রতিক পোস্টে স্পষ্ট হয়েছে, ‘পুরাতন’ সিনেমার সাফল্য কামনায় ফেরদৌস একটি কবিতা লিখেছেন। ছবিটির থিম ও নামকে কেন্দ্র করেই রচিত হয়েছে কবিতাটি, ফলে অনুমান করা যায়, এটি খুব সম্প্রতিক সময়েরই সৃষ্টি। উল্লেখ্য, ‘পুরাতন’ মুক্তি পেয়েছে চলতি বছরের এপ্রিল মাসে। এতে বোঝা যায়, ফেরদৌস ও ঋতুপর্ণার মধ্যে সাম্প্রতিক সময়ে যোগাযোগ হয়েছে। যদিও অভিনেতা ফেরদৌস বর্তমানে কোথায় আছেন, সে বিষয়ে নির্ভরযোগ্য কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে একাধিক সূত্রের দাবি, তিনি বর্তমানে লেখালেখিতেই সময় কাটাচ্ছেন।
১৯৯৮ সালে বাসু চ্যাটার্জির পরিচালনায় ‘হঠাৎ বৃষ্টি’ ছবির মাধ্যমে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন ফেরদৌস। এরপর তিনি নিয়মিত কলকাতার সিনেমায় কাজ করতে থাকেন। ২০০১ সালে ‘ওস্তাদ’ ছবিতে প্রথমবার ঋতুপর্ণার সঙ্গে জুটি বাঁধেন তিনি। পরবর্তীতে বহু ছবিতে একসঙ্গে অভিনয়ের সুবাদে গড়ে ওঠে তাঁদের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক।