নারীর একা থাকা নিয়ে যত সমস্যা
নারীর জন্য একটা সুন্দর থাকার পরিবেশ গড়ে দিতে ব্যর্থ হয়েছি আমরা। একটা নিরাপদ আশ্রয়স্থল যেখানে নারীরা নিজের মতো করে চলতে পারবে, ঘুরতে পারবে, ফিরতে পারবে। যদিও এরূপ নিরাপদ জায়গা নারীর জন্য একেবারেই যে নেই, তা নয়। আছে নারীর পৈতৃক ভিটা। কারও না কারও অধীনে থাকলে নারীর পক্ষে নিরাপদ থাকা সম্ভব বা লোকে বলে সম্ভব।
কিন্তু নারীর জন্য সব সময় নিজের নাড়ির বাঁধনের সঙ্গে সারাজীবন লেগে থাকা উপযুক্ত নাও হতে পারে৷ নাড়ির টানে নারীর এই বাঁধাধরা জীবন তার কর্মজীবন ও ব্যক্তিজীবনের জন্য সব সময় উপযুক্ত নয়। কিন্তু তবু তার নিজের স্বাচ্ছন্দ্য বোধ প্রতিনিয়তই বিসর্জন দিতে হয় নারীকে।

এ তো গেলো পরিবারের কথা। এখন হলো পারিপার্শ্বিক ও সমাজ। পারিপার্শ্বিকতা সর্বক্ষণ একটা নজরবন্দি করে রাখে একজন নারীকে। নারী কোথায় যায়, কতক্ষণ পর ঘরে ফিরে এলো, কে কে তার বন্ধু; এই সব বিষয় এলাকার লোকের নখদর্পণে থাকে৷ কারণে-অকারণে সেই নারীকে উশ্ছৃংখল বলে তকমা দেওয়া হয়৷ কারণ সেই নারী তার বাবা মা কিংবা স্বামীর সঙ্গে থাকে না।
কিন্তু একজন স্বাবলম্বী নারী একা থাকতে পারে না? একজন নারী তার স্বপ্ন পূরণের জন্য তার ঘর-বাড়ি ছেড়ে দূরে থাকতে পারে না? অবশ্যই পারে কিন্তু নারীকে তার স্বপ্ন পূরণের চেয়েও বড় করে দেখতে হয়৷ পরিবার ও সমাজের কাছে অনুমতি নিতে হয় তার পড়াশোনা কিংবা চাকরির জন্য বাইরে যেতে হয়৷ যদি অনুমোদন পাওয়া সম্ভব হয়, তখন চাইলে নারীর পক্ষে সম্ভব বাইরে থাকা। নিজের মতো থাকা।

নারীর জন্য একা থাকা কতটুকু প্রয়োজনীয় বা কতবার সে নিজেকে প্রমাণ করতে পেরেছে, সেটাও একটা বিষয় বটে। কিন্তু সেই সুযোগটাও বা কতটুকু দেওয়া হয় নারীকে?
একজন নারী নিজের পয়সা খরচ করে নিজের রুটিরুজি নিজে করছে। এটা দেখা একটা স্বস্তি-দায়ক বিষয়৷ নারীদের জীবন যাপন আরও উন্মুক্ত হোক এবং নারীরা আরও স্বাধীন হোক; এই কামনা করি। কে কী বললো তার চেয়ে জরুরি কথা হলো, মানুষ যেন নারীর স্বপ্ন-পূরণে বাধা হয়ে না দাঁড়ায়।
অনন্যা/জেএজে