নারীর জন্য গরম কি বেশি ক্ষতিকর

এক সময় বাংলাদেশে গরম সহনীয় মাত্রায় ছিল। তবে বর্তমানে গরম যেন দিনকে দিন আরও কষ্টদায়ক হয়ে উঠছে। এই তাপদাহে সবচেয়ে বেশি ভোগেন শিশুরা, বয়স্করা আর নারীরা। কারণ নারীদের জীবনের কিছু বিশেষ সময় যেমন: মাসিক, গর্ভাবস্থা, মেনোপজ তাদের শারীরিক ও মানসিক অবস্থাকে এমনিতেই সংবেদনশীল করে তোলে। গরম এই সংবেদনশীলতা আরও বাড়িয়ে তোলে। তবে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। একটু সচেতন থাকলেই গরমের দিনগুলোতে নারীরা সুস্থ ও স্বস্তিতে থাকতে পারেন।

মাসিক চলাকালে কী করব?
মাসিক চলাকালে শরীর থেকে রক্ত যায়। আবার গরমে ঘামও হয় প্রচুর। ফলে সহজেই শরীর পানিশূন্য হয়ে যেতে পারে। এই সময়ে তাই পানি আর ফলের রস, ডাবের পানি, স্যুপ ইত্যাদি বেশি করে খাওয়া দরকার।
আর যা যা খেয়াল রাখবেন
-দিনে ৩–৪ বার ন্যাপকিন বদলানো জরুরি
-নিয়মিত পরিষ্কার থাকতে হবে
-ঘেমে গেলে কাপড় বদলে নিন
-ঘরে কিশোরী থাকলে তাকেও এই বিষয়ে সচেতন করতে হবে
মেনোপজের পর সময়টা
মেনোপজের পর অনেক নারী হঠাৎ গরম অনুভব করেন। এমনকি রাতে ঘুম ভেঙে যায় ঘেমে। এটা স্বাভাবিক হরমোনগত পরিবর্তনের কারণে হয়।
কিছু টিপস
-মাথার কাছে ফ্যান বা ব্যাটারিচালিত হাতফ্যান রাখতে পারেন
-হালকা, ঢিলেঢালা, তুলতুলে কাপড় পরুন
-বালিশ গরম লাগলে উল্টে দিন, ঠান্ডা লাগবে
-বেশি গরম লাগলে মুখে পানি দিয়ে ধুয়ে নিন

গর্ভাবস্থা ও স্তনদানের সময়
এই সময় একজন নারীর শরীর এমনিতেই বেশি চাহিদাপূর্ণ থাকে। গরমের সঙ্গে যদি পানি ও লবণের ঘাটতি হয় তাহলে শরীর দুর্বল হয়ে পড়তে পারে।
যা করনীয়
-পর্যাপ্ত পানি ও তরল খাবার খান
-মাঝে মাঝে একগ্লাস পানিতে সামান্য লবণ মিশিয়ে নিতে পারেন (ডাক্তারের নিষেধ না থাকলে)
-বাইরে গেলে সঙ্গে পানি রাখুন
-বাসি খাবার ও নোংরা পানীয় এড়িয়ে চলুন, পেটের অসুখ হলে বড় ক্ষতি হতে পারে
-ঘামে ভেজা কাপড় বদলে ফেলুন
-হালকা, আরামদায়ক পোশাক পরুন
-ঠান্ডা পানীয় খেতে পারেন, যদি ঠান্ডায় অ্যালার্জি না থাকে, তবে বেশি ঠান্ডা খাওয়া ঠিক নয়
নারীদের জীবনে গরম একটু বাড়তি ঝামেলা আনলেও, একটু সচেতন থাকলেই এটা সামাল দেওয়া যায়। সবচেয়ে জরুরি হলো নিজেকে ভালোবাসা, নিজের শরীরের কথা শোনা এবং নিয়মিত যত্ন নেওয়া। গরমে শুধু নারীরাই নয়, পরিবার–পরিজন সবারই দায়িত্ব একে অপরকে স্বস্তি দিতে সাহায্য করা।
সবশেষে বলি, শরীরের অস্বাভাবিক কিছু মনে হলে দেরি না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।