ল্যাকমে ফ্যাশন উইক ২০২৫

২০২৫ সালে ২৫ বছরে পা দিল ল্যাকমে ফ্যাশন উইক। এই বিশেষ উপলক্ষে মুম্বাইয়ের জিও কনভেনশন সেন্টারে অনুষ্ঠিত হয় পাঁচ দিনব্যাপী জমজমাট ফ্যাশন উৎসব। দেশি-বিদেশি ডিজাইনারদের অংশগ্রহণে রঙিন হয়ে উঠেছিল এই আয়োজন। ভারতের পাশাপাশি রাশিয়া ও লন্ডনের ডিজাইনাররাও এবার হাজির ছিলেন তাঁদের সংগ্রহ নিয়ে।
এবারের ফ্যাশন উইকে নজর কাড়ে পাশ্চাত্য পোশাকের আধিক্য। সাবেকি পোশাক থাকলেও পশ্চিমা স্টাইলই ছিল মূল আকর্ষণ। নারী-পুরুষ উভয়ের জন্যই ছিল আধুনিক পোশাকের বৈচিত্র্য।

জমকালো সূচনা
উৎসবের সূচনা হয় খ্যাতনামা ডিজাইনার অনামিকা খান্নার হাত ধরে। তাঁর ‘সিলভার কলার’ কালেকশন তুলে ধরে নারীর আত্মবিশ্বাস ও সৌন্দর্য। মেটালিক ট্রাউজার, স্ট্রাকচারড ব্রালেট ও অলঙ্কারে ছিল আধুনিকতার ছোঁয়া।
‘জেন নেক্সট’ বিভাগে তিন নবাগত ডিজাইনার এনেছিলেন নতুন ধারার পোশাক। অভিষেক শিন্ধের বসন্ত-গ্রীষ্মকালীন পুরুষদের কালেকশনে ছিল ব্যাগি প্যান্ট, ডোরাকাটা ট্রাউজার ও বড় পকেটওয়ালা জ্যাকেট। যশ পাটিল অনুপ্রাণিত ছিলেন নেপালের রাজা-রানিদের পোশাক থেকে। আর সোম্য লোচান তুলে ধরেন ভারতের ঐতিহ্যবাহী টেক্সটাইল যেমন তাঞ্চৈ, হিমরু ও ওয়াক্স কাস্টিং।
‘দ্য বয়েজ ক্লাব’ সেকশনে পুরুষদের জন্য ধুতি থেকে সুইম স্যুট পর্যন্ত ছিল নানা আয়োজন। অভিষেক রায় তাঁর ‘নবাবস অব বেঙ্গল’ কালেকশনে বাংলার বাবু সংস্কৃতিকে তুলে ধরেন জারদৌসি কাজের পাঞ্জাবি, জামদানি মোটিফ আর অভিনব ধুতি ডিজাইনে।
গৌরব জাগতিয়ানি, অনুরাগ গুপ্তা, শান্তনু-নিখিল, এবং শিবান-নরেশও তুলে ধরেন পুরুষদের ফিউশন পোশাক। এগুলোর মধ্যে ছিল লম্বা কোট, এমব্রয়ডারি জ্যাকেট, রিসোর্ট ওয়ারের বিভিন্ন ডিজাইন।
নারীদের পোশাকে গ্রীষ্মের হালকা ও রঙিন থিম ছিল স্পষ্ট। সত্য পলের সংগ্রহে ছিল টিউনিক, কাফতান, শিফনের শাড়ি। রীনা সিংয়ের ‘একা’ ব্র্যান্ড রাজস্থানের আমের ফোর্ট অনুপ্রাণিত পোশাক তুলে ধরে, যেখানে মিশে ছিল সিল্ক, সুতি, অরগেঞ্জার রাজকীয় মোটিফ।
মহম্মদ মজহার কাঠ ও কাপড় মিলিয়ে তৈরি করেন অভিনব পোশাক, যা ছিল শাহরানপুরের কাঠশিল্পের প্রতি তাঁর শ্রদ্ধাঞ্জলি।
ফাল্গুনী শেন পিকক ও লুফথানসার যৌথ আয়োজন ছিল ট্র্যাভেল ও ফ্যাশনের মিশেল। ‘অল ইট টেকস ইজ আ ইয়েস’ থিমে তাঁরা তুলে ধরেন সাহসী আর সাহস জাগানো কালেকশন।
রাহুল মিশ্র তুলে ধরেন ‘সিল্ক রুট’ কালেকশনে ভারতের বাঁধনি ও জাপানের শিবরি মিলিয়ে এক সংস্কৃতির বৈচিত্র্য। আর সাক্ষা-কিন্নির ‘দ্য সানস্টপার পার্টি’ কালেকশন ছিল গ্রীষ্মের ছুটির মেজাজে তৈরি।
সবশেষে, নম্রতা যোশিপুরা ও আরএলানের টেকসই ফ্যাশন ছিল অনন্য। বর্জ্য পদার্থ দিয়ে তৈরি পোশাকে উঠে আসে পরিবেশ সচেতনতাও।