Skip to content

এবার বিশ্বের নাম্বার ওয়ান ধনী নারী হয়ে গেলেন অ্যালিস ওয়ালটন

আগে থেকেই বিশ্বের ধনী নারীদের তালিকায় ছিলেন অ্যালিস ওয়ালটন। তবে এইবার গত পাঁচ বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো ফোর্বসের বার্ষিক  বিলিয়নেয়ারদের তালিকায় জায়গা করে নিয়েছেন তিনি। আনুমানিক ১০১ বিলিয়ন ডলার সম্পদের মালকিন তিনি এখন।

ফ্রান্সের ল’ওরিয়াল সংস্থার উত্তরাধিকারী ফ্রাঁসোয়া বেটেনকোর্ট মেয়ার্সের কাছ থেকে এই খেতাব ছিনিয়ে নিয়েছেন অ্যালিস ওয়ালটন এইবার। এর আগে ২০২১ সাল থেকে বিশ্বের সবচেয়ে ধনী নারী ছিলেন মেয়ার্স। আর এখন ফোর্বসের তথ্য অনুযায়ী ৮১.৬ বিলিয়ন ডলারের সম্পদ নিয়ে তিনি বিশ্বের দ্বিতীয় ধনী নারী।

ওয়ালমার্টের প্রতিষ্ঠাতা স্যাম ওয়ালটনের (মৃত্যু ১৯৯২) একমাত্র কন্যা সন্তান অ্যালিস ওয়ালটন। গত বছরের তুলনায় এবছর ২৮.৭ বিলিয়ন ডলার সম্পদ বাড়িয়েছেন তিনি। ক্রেতারা উচ্চ মুদ্রাস্ফীতির মধ্যে “প্রতিদিনের সর্বনিম্ন মূল্য”-এর দিকে ঝুঁকে পড়ার কারণে  এই রিটেল  জায়ান্টটির আনুমানিক ১১% অংশীদারিত্বের মূল্য ৪০% বৃদ্ধি পেয়েছে।
৭৫ বছর বয়সী ওয়ালটন এই বছর ১০০ বিলিয়ন ডলারের ক্লাবের ১৫ জন সদস্যের মধ্যে একজন।বেটেনকোর্ট মেয়ার্সের পরে, অ্যালিস ওয়ালটনই হলেন দ্বিতীয় নারী যাঁর পকেটে রয়েছে ১০০ বিলিয়ন ডলারের সম্পদ। ওয়ালটন বিশ্বের ১৫তম ধনী ব্যক্তির মধ্যে একজন।
ওয়ালটন পরিবারেরই তার ভাই রব ওয়ালটন (৮০) এবং জিম ওয়ালটন (৭৬) এর থেকে মাত্র কয়েক ধাপ পিছনে আছেন অ্যালিস , যাদের সম্পদের পরিমাণ যথাক্রমে ১১০ বিলিয়ন এবং ১০৯ বিলিয়ন ডলার।

১৯৭১ সালে টেক্সাসের ট্রিনিটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক পাশ করার পর অ্যালিস ওয়ালটন ওয়ালমার্টে শিশুদের পোশাকের বিভাগে  হিসেবে কিছুদিন কাজ করেছিলেন, তারপর নিউ অরলিন্সে ই.এফ. হাটনের স্টকব্রোকার হিসেবে চাকরি করেন।
১৯৮০-এর দশকে তিনি তার পরিবারের জন্মস্থান আরকানসাসের বেন্টনভিলে ফিরে আসেন এবং ওয়ালটনের আর্ভেস্ট ব্যাংকে বিনিয়োগ কার্যক্রম পরিচালনা করেন। এরপর তিনি ১৯.৫ মিলিয়ন ডলার পারিবারিক অর্থ দিয়ে লামা নামে একটি ঋণ এবং ব্রোকারেজ দোকান চালু করেন। 

১৯৯৮ সালে লামা বন্ধ হয়ে গেলে, ওয়ালটন টেক্সাসে ফিরে আসেন এবং কিউরেটিংয়ের দিকে যান। ২০২১ সালে তার ভাগ্নে টম ওয়ালটনের স্ত্রী অলিভিয়া ওয়ালটনের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তরের আগে তিনি এক দশক ধরে বেন্টনভিলের ক্রিস্টাল ব্রিজেস মিউজিয়াম অফ আমেরিকান আর্টের সভাপতিত্বও করেন।
১২০ একর জমির উপর অবস্থিত এই জাদুঘরটি প্রতিষ্ঠার কৃতিত্ব অ্যালিসের, যেখানে অ্যান্ডি ওয়ারহল এবং জর্জিয়া ও’কিফের মতো শিল্পীদের কাজ রয়েছে, তিনি বুঝতে পেরেছিলেন যে তার পরিবারের জন্মস্থান থেকে ৩০০ মাইলের মধ্যে এমন কোনো জাদুঘর ছিল না। ২০১১ সালে এটি প্রতিষ্ঠার জন্য যে ১.৬ বিলিয়ন ডলার খরচ হয়েছিল, তার প্রায় পুরোটাই এসেছিল তার প্রয়াত ভাই জন ওয়ালটন এবং মা হেলেন ওয়ালটনের (মৃত্যু ২০০৭) নামের  একটি ট্রাস্ট থেকে। গত এক দশক ধরে অ্যালিস ওয়ালটন তার নিজস্ব জনহিতকর কাজের জন্য আরো পরিচিতি পেয়েছেন। পাঁচটি পারিবারিক দাতব্য ফাউন্ডেশনে ৫.৮ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি অনুদান দিয়েছেন তিনি। এর মধ্যে রয়েছে ওয়ালটন ফ্যামিলি ফাউন্ডেশনের (যা তার বাবা-মা ১৯৮৭ সালে ওয়ালমার্টের ২৫তম বার্ষিকীতে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন) মাধ্যমে শিক্ষা সংস্কার, পরিবেশ এবং বেন্টনভিলের আশেপাশের অঞ্চলের উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে এমন সংস্থাগুলিকে আনুমানিক ৪০০ মিলিয়ন ডলার অনুদান দেওয়া। 
অ্যালিসের আর্ট ব্রিজেস ফাউন্ডেশন ২০১৬ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে সারা দেশে ২৩০টিরও বেশি জাদুঘরে আমেরিকান শিল্পকর্ম অর্জন এবং ঋণ প্রদানের জন্য ৫০০ মিলিয়ন ডলারেরও বেশি ব্যয় করেছে – যার মধ্যে রয়েছে শিকাগোর আর্ট ইনস্টিটিউট, নিউ ইয়র্ক সিটির এমওএমএ এবং ওয়াশিংটন ডি.সি.-তে স্মিথসোনিয়ানের গ্যালারি।

গত আগস্টে, ওয়ালটনের আর্ট ব্রিজেস ফাউন্ডেশন জানিয়েছে যে তারা বেন্টনভিলে একটি নতুন অ্যালিস এল. ওয়ালটন স্কুল অফ মেডিসিন গঠনের জন্য আরও ২৪৯ মিলিয়ন ডলার দান করেছে। ৪৮ জন শিক্ষার্থীকে নিয়ে এই স্কুলটি মানুষের কাছে উন্নত স্বাস্থ্য পরিষেবা পৌঁছে দেবার লক্ষ্যে গড়ে তোলা হয়েছে।

অ্যালিস ওয়ালটন বলেন -‘ আমি এমন সুযোগ তৈরি করতে চাই যা মানুষকে তাদের স্বপ্ন পূরণে সহায়তা করবে। এই কাজ করতে পেরে আমি আনন্দিত।’

ডাউনলোড করুন অনন্যা অ্যাপ