দেশে আমদানিকৃত অর্ধেক কসমেটিক পণ্যই ভেজাল ও মানহীন

বাংলাদেশে আমদানিকৃত কসমেটিকস ও স্কিন কেয়ার পণ্যের অর্ধেকই ভেজাল ও নকল। সম্প্রতি বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস এন্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন (বিএসটিআই) পরিচালিত বেশ কয়েকটি অভিযানে উঠে এসেছে নকল ও ভেজাল কসমেটিকসের এই চিত্র।
বাজার থেকে ৩৪টি পণ্য পরীক্ষা করে বিএসটিআই। তাতে দেখা যায়, আমদানিকৃত এসব পণ্যের ১৭টিই ভেজাল ও মানহীন।
মিরপুর শাহ আলি প্লাজায় বিএসটিআই’র একটি অভিযানে দেখা যায় পূর্বে তালিকা করা আমদানিকৃত কসমেটিকস ও স্কিন কেয়ার পণ্যের সিংহভাগই ভেজাল। এমনকি ইতোমধ্যে নিষিদ্ধ বিদেশি স্কিন ক্রিমও সেখানে বিক্রি হচ্ছিল।
হাতিরঝিলে পুলিশ প্লাজায় দ্য কোরিয়ান মল বাংলাদেশ নামের একটি ব্র্যান্ড শপে অভিযান চালায় বিএসটিআই’র টিম। এসময় বাধ্যতামূলক তালিকায় থাকা বেশ কয়েক ধরণের পণ্য বিএসটিআই সার্টিফিকেট না নিয়েই বিক্রি করতে দেখা গেছে। তাছাড়া এসব পণ্যের কোনটিরই আমদানি তথ্য বা ছাড়পত্র দেখাতে না পারায় ৭ দিনের সময় দিয়ে সতর্ক করে দেয় বিএসটিআই কর্তৃপক্ষ।
একইদিন মিরপুরে অপর একটি অভিযানে সাজগোজ এর আউটলেটে বিএসটিআই মান সনদ ও ছাড়পত্র ছাড়া আমদানি করা বিদেশী কসমেটিকস পাওয়া যায়। এসব পণ্যের বিপরীতে মান সনদ ও আমদানি তথ্য না দেখাতে পারায় সতর্ক করে জরিমানা করেন বিএসটিআই’র ভ্রাম্যমান আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট।

ভেজাল ও নকলের বিরুদ্ধে বিএসটিআই’র এই অভিযানকে স্বাগত জানিয়েছেন উদ্যোক্তারা। তারা বলেন, বাংলাদেশ হাতের নাগালের মধ্যেই পাওয়া যাচ্ছে সর্বাধুনিক প্রযুক্তিতে তৈরি বিশ্বমানের কসমেটিকস ও স্কিনকেয়ার পণ্য। ইতোমধ্যে অথেনটিক কসমেটিকসের রিটেইল শপও চালু হয়েছে। তারা ক্রেতাদের অনুরোধ জানিয়েছেন ভেজাল পণ্য কিনে প্রতারিত না হতে।
কসমেটিকস ও স্কিন কেয়ার খাতের অন্যতম উদ্যোক্তা জনপ্রিয় অভিনেতা শাকিব খান বলেন, ‘আমি গর্বের সাথে বলতে পারি, কসমেটিকস ও স্কিন কেয়ার খাতে এখন আর বাংলাদেশ পরনির্ভরশীল নয়। আমি সবাইকে আহ্বান জানাবো, অল্প কিছু লাভের আশায় নকল ভেজাল কসমেটিকস ও স্কিন কেয়ার পণ্য বিক্রি না করে সর্বাধুনিক প্রযুক্তিতে তৈরি অথেনটিক পণ্যের বিপণনে যুক্ত হওয়ার এখনই সময়।’
এ সময় বাংলাদেশে জাতীয় মান প্রণয়নের জন্যসরকার স্বীকৃত একমাত্র দায়িত্বপ্রাপ্ত জাতীয় মান সংস্থা বিএসটিআই-কে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে শাকিব খান বলেন, দেশের মানুষের ভালো থাকার জন্য রাত দিন অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাওয়া এই প্রতিষ্ঠানটি আমাদের অন্যতম সম্পদ।
এ প্রসঙ্গে অ্যাসোসিয়েশন অফ স্কিন কেয়ার অ্যান্ড বিউটি প্রোডাক্টস ম্যানুফ্যাকচারারস অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অফ বাংলাদেশ-এর জেনারেল সেক্রেটারি জামাল উদ্দীন বলেন, ‘বিএসটিআই’র অভিযানে যে চিত্র উঠে এসেছে তা উদ্বেগজনক। যারা ভেজাল ও নকল কসমেটিকস আমদানি করছে তাদের কঠোর শাস্তি হওয়া উচিৎ। বাংলাদেশ এখন বিশ্ববাজারে কসমেটিকস ও স্কিনকেয়ার পণ্যের রপ্তানিকারক দেশ হতে চলেছে। যেখানে বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের পণ্যের চাহিদা রয়েছে সেখানে ভেজাল ও নিম্নমানের পণ্য আমদানি মোটেও কাম্য নয়। বরং এখনই সময় ভেজাল পণ্য আমদানির বিপক্ষে শক্তিশালী অবস্থান গড়ে তোলার।’
অনন্যা ডেস্ক / এসএস