Skip to content

২৬শে মার্চ, ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দ | বুধবার | ১২ই চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দুই মাসে দেশে ধর্ষণের শিকার ৯৬, নির্যাতিত হয়েছেন ২৯৪ নারী-শিশু

২০২৫ সালের প্রথম দুই মাসে দেশে ২৯৪ জন নারী ও শিশু নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। ধর্ষণের শিকার হয়েছেন ৯৬ জন, যার মধ্যে ৪৪ জন শিশুও রয়েছে। পরিসংখ্যান অনুযায়ী দেশে গত বছর ধর্ষণের শিকার হন ৫১৬ জন কন্যাশিশু ও নারী।

মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্র – আসক এর তথ্য অনুযায়ী, ২০২৫ সালের জানুয়ারি মাসে সারা দেশে ধর্ষণের শিকার হয়েছেন ৩৯ জন নারী। এদের মধ্যে ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে ২১টি এবং দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছেন ১৮ জন। সোমবার এক মতবিনিময় সভায় নারী ও কন্যা নির্যাতন এবং সামাজিক অনাচার প্রতিরোধ জাতীয় কমিটির আহ্বায়ক, মহিলা পরিষদ সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম এ তথ্য জানান। ১৬টি জাতীয় পত্রিকা এবং বিভিন্ন অনলাইন পোর্টাল থেকে নেওয়া তথ্য অনুযায়ী এ সংখ্যা পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন তিনি।

ফেব্রুয়ারি মাসে ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে ৫৭টি, এর মধ্যে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ ১৭টি, ধর্ষণের পর হত্যার দুইটি ঘটনা ঘটেছে। এদের মধ্যে পাঁচ জন প্রতিবন্ধী কিশোরী ও নারীও রয়েছেন।ফেব্রুয়ারিতে ধর্ষণের শিকার ৫৭ জনের মধ্যে ১৬ জন শিশু, ১৭ জন কিশোরী রয়েছেন। অন্যদিকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছেন তিন জন কিশোরী ও ১৪ জন নারী, ধর্ষণের পর হত্যার শিকার হয়েছেন দুই জন নারী। এ ছাড়া ধর্ষণের চেষ্টা ১৯টি, যৌন হয়রানি ২৬টি, শারীরিক নির্যাতনের ৩৬টি ঘটনা ঘটেছে এই মাসে।

মার্চ মাসে ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে ৯টি।এদের মধ্যে ছয়জন শিশু, একজন প্রতিবন্ধি তরুণী, একজন গর্ভবতী নারী ও একজন কলেজ ছাত্রী।

রাজধানীর সেগুনবাগিচার আনোয়ারা বেগম-মুনিরা খান মিলনায়তনে ‘ঢাকায় নারী ও কন্যার প্রতি সহিংসতার বর্তমান পরিস্থিতি ও করণীয়’ বিষয়ে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় নারী ও কন্যার প্রতি বর্তমান ক্রমবর্ধমান সহিংতার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে এসব সহিংসতা বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান বক্তারা। 

সভাপতির বক্তব্যে ডা. ফওজিয়া মোসলেম বলেন, ‘বর্তমানে নারী ও কন্যাশিশুর প্রতি নির্যাতনের মাত্রা বেড়ে গেছে এবং এ ব্যাপারে বিশেষ প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বর্তমানে যে পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে, তা গ্রহণযোগ্য নয়। এই পরিস্থিতিতে আমাদের কী করণীয়, তা নির্ধারণ করতেই এ সভা। যেহেতু নারী দুর্বল, তাই সবাই তার প্রতি ক্ষমতা প্রদর্শন করে। বিশেষ বিশেষ পরিস্থিতিতে নারী ও কন্যার প্রতি সহিংসতা বেড়ে যায়। ফলে নারী ও কন্যার প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধ কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে হবে।’

মহিলা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু বলেন, ‘অনেক আইন হওয়ার পর নারীর প্রতি সহিংসতা কিছুটা পরিবর্তন হয়েছিল। কিন্তু এই সময় হঠাৎ পরিস্থিতি বেশি খারাপ হলো। এই পরিস্থিতিতে রাষ্ট্রের কার্যকর উদ্যোগ ও পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন।’ 

সভায় বক্তব্য দেন ঢাকা বিশ্বিবদ্যালয়ের উইমেন ও জেন্ডার স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. তানিয়া হক, লেখক ও গবেষক মফিদুল হক, সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী এস এম এ সবুর,  মুক্তিযোদ্ধা ও তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ মাহবুব জামান, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অমিত দাশ গুপ্ত, আইনজীবী আমিনুল ইসলাম, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অব ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ডিন ড. আরসাদ চৌধুরী, মনোরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. শাহিদা চৌধুরী, ঢাবির গণিত বিভাগের অধ্যাপক ড. চন্দ্রনাথ পোদ্দার, নারী সাংবাদিক কেন্দ্রের সভাপতি নাসিমুন আরা হক মিনু, এএলআরডি কর্মকর্তা সানজিদা খান প্রমুখ। 

অনন্যা ডেস্ক/এসএস

ডাউনলোড করুন অনন্যা অ্যাপ