Skip to content

২৬শে মার্চ, ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দ | বুধবার | ১২ই চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মিতা তঞ্চঙ্গ্যা দেশের প্রথম নারী ফরেস্টার হয়ে উঠলেন যেভাবে

লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর গত ২১ জানুয়ারি ভাইভা দিতে ঢাকায় এলেন মিতা তঞ্চঙ্গ্যা। নিয়োগ পরীক্ষায় ১৫তম হয়ে ফরেস্টার হিসেবে যোগ দিয়েছেন মিতা তঞ্চঙ্গ্যা। মাঠপর্যায়ে দেশের প্রথম নারী বন কর্মকর্তা হিসেবে তাঁর কর্মস্থল চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় মাদার্শা রেঞ্জ। সেখানে যোগ দিয়েছেন ১০ ফেব্রুয়ারি। মিতা বলেন, ‘পাহাড়ে বনাঞ্চলে বেড়ে উঠেছি। কর্মজীবনের শুরুতে শৈশব থেকে দেখা বনাঞ্চল রক্ষার কাজ পেয়ে খুবই ভালো লাগছে। পরিবার ও সহকর্মীদের কাছ থেকেও সহযোগিতা পাচ্ছি। আমার এখন কাজ শেখার সময়।’

কাপ্তাইয়ের হাজাছড়ি হেডম্যানপাড়ায় মিতার জন্ম ও বেড়ে ওঠা। দুই ভাই তিন বোনের মধ্যে তিনি সবার ছোট। হাজাছড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়েছেন পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত, ষষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তি হন রাজস্থলী তাইতংপাড়া সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ে। এই স্কুল থেকেই ২০১৮ সালে এসএসসি পাস করেন। পাহাড়ি আরও দশটি পরিবারের মতোই মিতাদের পরিবার। অসচ্ছলতা নিত্যসঙ্গী। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক বড় বোন আর ভগ্নিপতির সহায়তায় এগিয়েছে পড়াশোনা। তাঁদের উৎসাহেই এসএসসি পাসের পর চট্টগ্রামের ফরেস্ট্রি সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি ইনস্টিটিউটে ডিপ্লোমায় ভর্তি হন মিতা।

মিতা কলেজে ভর্তি না হয়ে ফরেস্ট্রিতে ডিপ্লোমা করার ব্যাপারে জানালেন, এসএসসি পাশের পর কলেজে ভর্তির অপেক্ষায় ছিলেন। এমন সময় বন বিভাগের এক কর্মীর কাছে তাঁর ভগ্নিপতি জানতে পারেন, ফরেস্টার নিয়োগ পরীক্ষায় নারীদেরও অংশগ্রহণের সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। তাই ২০১৫-২০১৬ সাল থেকে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ডিপ্লোমা ইন ফরেস্ট্রি কোর্সে নারী শিক্ষার্থী ভর্তি করানো হচ্ছে। উচ্চতার ঘাটতি যেহেতু মিতার নেই, তাই ফরেস্ট্রিতে ডিপ্লোমা করতে পারলে চাকরির দৌড়ে এগিয়ে থাকবেন।

বনবিদ্যা নিয়ে পড়াশোনার সময়ই বান্দরবানের সুবল তঞ্চঙ্গ্যার সঙ্গে মিতার বিয়ে হয়ে যায়। সংসার সামলানোর পাশাপাশি চলতে থাকে পড়াশোনা। করোনার কারনে চার বছরের ডিপ্লোমা শেষ হতে পাঁচ বছর লেগে যায়।পাস করার পর একটি বেসরকারি সংস্থায় চাকরি করার পাশাপাশি চলতে থাকে ফরেস্টার নিয়োগ পরীক্ষার প্রস্তুতি। প্রথমবার অকৃতকার্য হলেও দ্বিতীয়বারে সফল হয়ে ইতিহাস গড়লেন মিতা তঞ্চঙ্গ্যা। সংরক্ষিত বনাঞ্চল নিয়ে এক গবেষণাপত্র বলছে, ১৮৬৬ সালে বেঙ্গল ফরেস্ট্রি ডিপার্টমেন্টের আওতায় বাংলাদেশে (তৎকালীন পূর্ব বাংলা) বন বিভাগের দাপ্তরিক কার্যক্রম শুরু হয়। সেই হিসাবে ১৫৯ বছর পর এই বিভাগে সরাসরি বন রক্ষার কাজে একজন নারী মাঠ কর্মকর্তার পদায়ন হলো।

অনন্যা ডেস্ক/এসএস

ডাউনলোড করুন অনন্যা অ্যাপ