Skip to content

২৬শে মার্চ, ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দ | বুধবার | ১২ই চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

২৮ নারীর উদ্যোগে রক্ষা পেয়েছে হাজারো গাছপালা

একদল সাহসী নারী প্রতিদিনই টেকনাফের দুর্গম বনাঞ্চলে পাহারা দেন। সবুজ পোশাক পরা ২৮ জন নারীর হাতে থাকে লাঠি ও ছাতা। রোদ-বৃষ্টি কোনো কিছুই তাদের দমাতে পারে না। কেউ গাছ কাটতে চাইলে তারা বাধা দেন, আগুন লাগানোর চেষ্টা করলেও প্রতিরোধ করেন। গত ১৯ বছর ধরে প্রকৃতি ও পরিবেশ রক্ষায় নিরলসভাবে কাজ করছেন তাঁরা, ফলে সংরক্ষিত হয়েছে হাজারো গাছপালা।

২০০৬ সালে বন বিভাগ ও ইউএসএআইডির সহায়তায় ‘নিসর্গ নেটওয়ার্ক’ নামে একটি বেসরকারি সংগঠন গঠিত হয়। এর ব্যবস্থাপনায় কেরনতলী গ্রামের বাসিন্দা খুরশিদা বেগম নেতৃত্বে নেন ২৮ সদস্যের ‘বন পাহারা দল’। টেকনাফ রেঞ্জের আওতাধীন বনাঞ্চল রক্ষায় নিরবচ্ছিন্নভাবে দায়িত্ব পালন করছে এই দলটি।টেকনাফের বনাঞ্চল বরাবরই ঝুঁকিপূর্ণ—অস্ত্রধারী ডাকাত, অপহরণের আশঙ্কা, বন্য প্রাণীর ভয়—সবই আছে। কিন্তু এসব বাধা পেরিয়ে এই নারীরা দিনের পর দিন প্রকৃতির সুরক্ষায় কাজ করে যাচ্ছেন। তাঁদের সাহস ও অবদানের কথা এখন টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়েছে। গত বৃহস্পতিবার দুপুরে টেকনাফ স্থলবন্দরের পাশের এক বনাঞ্চলে গিয়ে দেখা যায়, এই নারী দল পাহারায় ব্যস্ত। শাল, সেগুন, গর্জনসহ নানা প্রজাতির গাছগাছালিতে ঘেরা পাহাড়ি অরণ্যে তাঁরা সতর্ক দৃষ্টিতে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। তাঁদের বয়স ২০ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে।

দলটির নেতৃত্বে আছেন খুরশিদা বেগম (৪৬), যিনি কেরনতলী নারী বন পাহারা দলের সভাপতি।প্রতিদিন সকাল ৯টায় তারা বনাঞ্চলে প্রবেশ করেন। প্রথমে নিজেদের নিরাপত্তার বিষয়ে আলোচনা করেন, তারপর চারজন করে সাতটি দলে বিভক্ত হয়ে পুরো এলাকায় ছড়িয়ে পড়েন। তাঁদের কাজ মূলত গাছ কাটা, অগ্নিসংযোগ বা বন ধ্বংসের যেকোনো প্রচেষ্টা প্রতিরোধ করা। দুপুরের খাবারও তাঁরা বনের ভেতরেই খান এবং বিকেল চারটায় বাড়ি ফিরে যান।

টেকনাফের এই ২৮ নারীর অবিরাম প্রচেষ্টায় বন আজও টিকে আছে, সবুজের সমারোহ ধরে রেখেছে। তাঁদের এই নিষ্ঠা ও দৃঢ়তা প্রকৃতি সংরক্ষণে এক অনন্য দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।

অনন্যা ডেস্ক/ এস এস

ডাউনলোড করুন অনন্যা অ্যাপ