নারী নেতৃত্বে এক অনুপ্রেরণার নাম মনিকা নাজনীন ইসলাম
বিশ্বব্যাপী শান্তি প্রতিষ্ঠা এবং নেতৃত্বে নারীদের অন্তর্ভুক্তি আজকের সময়ে অপরিহার্য। ইতিহাস বারবার দেখিয়েছে যে নারী নেতৃত্ব সংকট মোকাবিলায় কেবল মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি প্রদান করেনি বরং স্থায়ী সমাধানের ভিত্তিও স্থাপন করেছে।
অনেক প্রতিবন্ধকতা জয় করেই এগিয়ে চলেছে এ দেশের নারীরা। আকাশে বিমান ওড়াচ্ছে নারী। হিমালয়ের চূড়ায় উঠছে নারী। নারীর নিয়োগ বাড়ছে সরকারী-বেসরকারি চাকরিতে। বাড়ছে নারী উদ্যোক্তার সংখ্যা। শিক্ষায় বাড়ছে নারীর অংশগ্রহণ। সরকারের নীতি নির্ধারণী পর্যায় থেকে শুরু করে রপ্তানি আয়ের চাকা পর্যন্ত ঘুরাচ্ছে নারীরা। বর্তমানে সমাজের সর্বক্ষেত্রে নারীদের জয়যাত্রা চলছে। জয়রথ চলছে কর্পোরেটে নারী সিইও, সিএমও এবং হেড অফ এইচআরদেরও।
তাদের মধ্যে অন্যতম এক অনুপ্রেরণা যমুনা গ্রুপের কর্ণধার মনিকা নাজনীন ইসলাম। মনিকা নাজনীন একজন দূরদর্শী ও কর্মঠ নারী, যিনি নিজের মেধা, কঠোর পরিশ্রম এবং নেতৃত্বদানের দক্ষতা দিয়ে কর্পোরেট জগতে নিজের একটি স্বতন্ত্র অবস্থান তৈরি করেছেন। তার কর্মজীবনের শুরু থেকেই তিনি নারী ক্ষমতায়ন এবং নেতৃত্ব বিকাশের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। ছোটবেলা থেকেই তিনি ছিলেন স্বপ্নদ্রষ্টা, চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করতে ভালোবাসতেন এবং নতুন কিছু শেখার আগ্রহ ছিল প্রবল।
মনিকা নাজনীন ইসলাম মনে করেন, নারীদের জন্য কর্পোরেট জগতে টিকে থাকা এবং নেতৃত্বের আসনে পৌঁছানো সহজ কাজ নয়। নানা চ্যালেঞ্জ, সামাজিক বাধা ও পেশাদার প্রতিযোগিতার মধ্যে তিনি নিজের দক্ষতা প্রমাণ করেছেন। তার প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন ক্ষেত্রে তিনি নারীদের অন্তর্ভুক্তি এবং উন্নয়নের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। তিনি বিশ্বাস করেন, নেতৃত্ব কেবল পদবি বা ক্ষমতার বিষয় নয়; এটি দায়িত্ববোধ, কর্মদক্ষতা এবং অন্যদের অনুপ্রেরণা দেওয়ার ক্ষমতা। তার সুদূরপ্রসারী চিন্তাভাবনা এবং কার্যকরী নেতৃত্বগুণের কারণে তিনি নিজের প্রতিষ্ঠান যমুনা গ্রুপে নারী কর্মীদের জন্য একটি সহায়ক পরিবেশ তৈরি করেছেন, যেখানে পুরুষের পাশাপাশি নারীরা নিজেদের দক্ষতা বিকাশের সুযোগ পাচ্ছেন।
মনিকা নাজনীন ইসলামের মতে, নারীদের এগিয়ে নিতে হলে শিক্ষা, প্রশিক্ষণ এবং কর্মক্ষেত্রে সমান সুযোগ নিশ্চিত করা প্রয়োজন। তিনি মনে করেন, নারীদের আত্মবিশ্বাস তৈরি করা এবং তাদের সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা বাড়ানো খুবই জরুরি। তিনি বলেছেন, নারী নেতৃত্বের পথ কখনোই সহজ নয়, তবে যদি আমরা নিজেদের ওপর বিশ্বাস রাখি, তাহলে যেকোনো বাধা জয় করা সম্ভব।
তিনি সবসময় নারীদের উৎসাহিত করেন যেন তারা সামনে এগিয়ে যেতে ভয় না পান এবং নিজেদের সক্ষমতার ওপর আস্থা রাখেন। তার মতে, নারীদের দক্ষতা বৃদ্ধি এবং কর্মজীবনে তাদের জন্য নিরাপদ ও সমান সুযোগ সৃষ্টি করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
মনিকা নাজনীন ইসলাম ভবিষ্যতে নারীদের জন্য আরও বেশি কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে চান। তিনি চান, নারীরা প্রযুক্তি, ব্যবসা, এবং অন্যান্য পেশাগত ক্ষেত্রে আরও বড় ভূমিকা রাখুক। তার উদ্যোগের মধ্যে রয়েছে নারী উদ্যোক্তাদের জন্য প্রশিক্ষণ কর্মসূচি, ক্যারিয়ার কাউন্সেলিং এবং নেতৃত্ব বিকাশ কার্যক্রম।
মনিকা নাজনীন ইসলাম শুধু একজন সফল নারী নেতৃত্ব নন, তিনি একজন দিকনির্দেশক ও অনুপ্রেরণার প্রতীক। তার নেতৃত্ব, পরিশ্রম এবং সমাজে নারীদের জন্য ইতিবাচক পরিবর্তন আনার প্রচেষ্টা সত্যিই প্রশংসনীয়। আন্তর্জাতিক নারী দিবসে, আমরা তার মতো নারীদের শ্রদ্ধা করি, যারা অন্যদের জন্য আলোকবর্তিকা হয়ে থাকেন। নারীদের এগিয়ে নিতে এবং নেতৃত্বের আসনে আরও বেশি নারীর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে আমাদের সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। কেননা, যখন একজন নারী এগিয়ে যায়, তখন সমাজও এগিয়ে যায়, এগিয়ে যায় গোটা জাতি।