Skip to content

২৬শে মার্চ, ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দ | বুধবার | ১২ই চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

লাল, কালো, সাদা নাকি বাদামি কোনটা খাবেন?

কাজের চাপে একদিন বাহিরেই কাটাতে হয়েছিলো খাওয়াদাওয়াও সব বাইরের থেকে করা সেদিন। এমন নয় যে পেট ভরে খাওয়া হয় নি কিন্তু বাসায় এসে মনে হচ্ছিল খাবারে তৃপ্তি মিলেনি। কারণ সেদিন ভাত খাওয়া হয় নি। কথায় বলে যে বাঙালির পেটে ভাত না গেলে হজম হয় না। আমাদের ভাত-ই হলো খাবারে চাওয়া। কিন্তু জানেন কি? কোন চাল আপনার জন্য ভালো?
লাল, সাদা, কালো নাকি বাদামি কোনটা খাওয়া ভালো এটি-ই হলো প্রশ্ন।
আমরা সবাই চাই যাতে আমরা সুস্থ থাকি। সুস্থ থাকতে হলে জেনে রাখা ভালো কোন রকমের চাল আপনি গ্রহণ করছেন। চলুন যেনে নি কোন চালের কি কি বৈশিষ্ট্য রয়েছে।

বাদামি চাল
বাদামী চাল একধরণের আস্ত শস্যদানা। বাদামী চালের উপকারিতা অনেক। হার্ভার্ড এর গবেষকগণ আবিষ্কার করেছেন যে, বাদামী চাল খেলে ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকি কমে এবং স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় থাকে। বাদামী চালে যে তেল থাকে তা এলডিএল বা খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে । প্রতি ১০০ গ্রাম বাদামি চালে ১১১ ক্যালরি থাকে, কার্ব থাকে ২৩ গ্রাম, এবং প্রোটিন থাকে ২.৬ গ্রাম। ১ কাপ বাদামী চালে ম্যাঙ্গানিজের দৈনিক চাহিদার ৮৮% পূরণ হয়। ম্যাঙ্গানিজ
ফ্যাটি এসিডের সংশ্লেষণে প্রধান ভূমিকা পালন করে। এর ফাইবার কোলন ক্যান্সার ও ব্রেস্ট ক্যান্সার থেকে সুরক্ষা দিতে পারে।

কালো চাল
কালো চাল বা বেগুনি চাল। চীন, কোরিয়া ও জাপানের মানুষ এই চাল বেশি খেয়ে থাকে। একে “নিষিদ্ধ চাল” বলা হয় কারণ এটি শুধুমাত্র চীনা রাজপরিবারের জন্য কয়েক শতাব্দী ধরে সংরক্ষিত ছিল এবং সাধারণ মানুষের জন্য নিষিদ্ধ ছিল। কালো চালে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এমন একটি পদার্থ, যার কাজ হলো দেহের সুস্থ কোষগুলোকে ক্ষতি থেকে বাচাঁনো। এটি আয়রন, ফাইবার এবং ভিটামিনের মতো প্রয়োজনীয় পুষ্টি দিয়ে পরিপূর্ণ। কালো চাল কোলেস্টেরলের মাত্রা কমিয়ে হার্টের স্বাস্থ্যকে ভালো রাখে। এক চতুর্থাংশ কাঁচা কালো চালের জন্য পুষ্টির ভাঙ্গনে, আপনি প্রায় ১৭৩ ক্যালোরি, ৩৮ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট, ৫ গ্রাম প্রোটিন, ৩ গ্রাম ফাইবার পাবেন।

সাদা চাল
এটি-ই আমাদের দেশে সবচেয়ে জনপ্রিয় চাল। মূলত সাদা চালটা হলো পলিশ করা চাল। সাদা চাল অতিরিক্ত পলিশড হওয়ার কারণে ফাইবার বা আঁশের পরিমাণ নেই বললেই চলে। এ ছাড়া পটাশিয়ামের পরিমাণও কম হয়ে যায় এতে। ১০০ গ্রাম সাদা চালে ১৩০ ক্যালোরি থাকে, ফ্যাট থাকে ০.৩ গ্রাম, কার্ব ২৮ গ্রাম। সাদা চাল হল কার্বোহাইড্রেইট’য়ের উৎস। আর শরীরের প্রধান জ্বালানি হল এই কার্বোহাইড্রেইট। পাশাপাশি সাদা চালের কিছু ধরনের সঙ্গে যোগ করা ‘বি-ভিটামিনস’। সব মিলিয়ে সাদা চাল দৈনিক কর্মশক্তির যোগান দিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তবে পুরোপুরি তথ্যসিদ্ধ না হলেও কিছু গবেষণা বলে, সাদা চালের ভাত খাওয়া থেকে বিপাকক্রিয়ার সমস্যা দেখা দেওয়া সম্ভব। এছাড়াও যারা সাদা চালের ভাত বেশি খান তাদের ‘মেটাবলিক সিন্ড্রোম’য়ের আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বাড়ে ৩০ শতাংশ।

লাল চাল
লাল চালেও প্রচুর পরিমানে অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট থাকে। অ্যানথোসায়ানিন নামক অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট লাল চালে পাওয়া যায়, যা শরীরে প্রদাহ কমায়। অ্যালার্জি কমায়। ক্যানসারের ঝুঁকি কমায় এবং ওজন কমাতে সাহায্য করে। এছাড়াও হার্ট অ্যাটাক এবং আর্থ্রাইটিসের মতো বড় রোগ প্রতিরোধের জন্য এটি সবচেয়ে ভালো। এতে ১.৬ গ্রাম ফ্যাট ,কার্বোহাইড্রেট, ৪৯.৫ গ্রাম ; আঁশ বা ফাইবার, ৩.১২ গ্রাম ; সুগার, ০.৪৬৮ গ্রাম. থাকে। লাল চাল কার্ডিওভাসকুলার রোগের মতো গুরুতর রোগ প্রতিরোধে কাজ করে এবং স্থূলতা কমায়। এতে ক্যালসিয়াম, আয়রন এবং ভিটামিন B1, B2 এবং B12 রয়েছে। এটাএকটি উচ্চ ফাইবার খাদ্য. এর উচ্চ পুষ্টি উপাদানের কারণে, এটি ডায়াবেটিক এবং হেপাটিক রোগীদের জন্য সুপারিশ করা হয়। সাদা চালের চেয়ে খাদ্য তালিকায় লাল চাল বেছে নেয়া বেশ উপকারী।

ডাউনলোড করুন অনন্যা অ্যাপ