চোখে চাপ পড়ে যেসব কারণে
পৃথিবীর সব সৌন্দর্য আমরা চোখ দিয়ে উপভোগ করি। চোখ আমাদের শরীরের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলোর মধ্যে একটি। কিন্তু অনিয়মিত জীবনযাপন ও দৈনন্দিন নানা অভ্যাসের কারণে চোখে চাপ পড়া একটি সাধারণ সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। চোখের উপর অতিরিক্ত চাপ শুধু অস্বস্তি নয়, দীর্ঘমেয়াদে দৃষ্টিশক্তির ক্ষতি করতে পারে। নিচে চোখে চাপ পড়ার সম্ভাব্য কারণগুলো নিয়ে আলোচনা করা হলো।
ডিজিটাল স্ক্রিনের অতিরিক্ত ব্যবহার
বর্তমান যুগে কম্পিউটার, মোবাইল ফোন এবং টিভি স্ক্রিনের উপর নির্ভরশীলতা বেড়েছে। দীর্ঘক্ষণ স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে থাকলে চোখ শুকিয়ে যায় এবং এতে চোখে চাপ অনুভূত হয়। একে “ডিজিটাল আই স্ট্রেইন” বা “কম্পিউটার ভিশন সিনড্রোম” বলা হয়।

অপর্যাপ্ত ঘুম
ঘুম আমাদের শরীর এবং চোখ উভয়ের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অপর্যাপ্ত বা অনিয়মিত ঘুম চোখের মাংসপেশিকে বিশ্রাম দিতে বাধা দেয়। ফলে চোখে ক্লান্তি ও চাপ দেখা দেয়।
ভুল চশমা বা লেন্সের ব্যবহার
যদি চশমা বা কন্টাক্ট লেন্স আপনার প্রয়োজন অনুযায়ী সঠিক না হয় তাহলে চোখের উপর চাপ সৃষ্টি হয়। এছাড়া নিয়মিত চশমা পরিবর্তন না করাও এই সমস্যার কারণ হতে পারে।
খুব বেশি আলো বা অন্ধকারে কাজ করা
অতিরিক্ত উজ্জ্বল আলো কিংবা অতিরিক্ত অন্ধকারে কাজ করলে চোখকে অস্বাভাবিকভাবে মানিয়ে নিতে হয়। ফলে চোখের মাংসপেশি অতিরিক্ত পরিশ্রম করতে বাধ্য হয় যা চোখে চাপ সৃষ্টি করে।
পানি শূন্যতা (ডিহাইড্রেশন)
শরীরে পর্যাপ্ত পানি না থাকলে চোখের জলীয় স্তর শুকিয়ে যায়। এটি চোখে শুষ্কতা এবং অস্বস্তি তৈরি করে।
দীর্ঘ সময় পাঠ করা বা মনোযোগের কাজ
দীর্ঘ সময় ধরে বই পড়া, সূক্ষ্ম কাজ করা বা মনোযোগের কাজ করলে চোখের পেশি ক্লান্ত হয়ে যায়। চোখের পাতার কম গতির কারণে চোখ শুকিয়ে যায় এবং চাপ অনুভূত হয়।
অতিরিক্ত মানসিক চাপ ও উদ্বেগ
মানসিক চাপ ও দুশ্চিন্তা চোখের রক্তপ্রবাহে বাধা সৃষ্টি করতে পারে। এতে চোখের পেশি শক্ত হয়ে যায় এবং চাপ অনুভূত হয়।
চোখে চাপ কমানোর উপায়
২০-২০-২০ নিয়ম মেনে চলুন। প্রতি ২০ মিনিট পর, ২০ সেকেন্ডের জন্য ২০ ফুট দূরের দিকে তাকান। পর্যাপ্ত ঘুম ও বিশ্রাম নিশ্চিত করুন। সঠিক পাওয়ারের চশমা বা লেন্স ব্যবহার করুন। পর্যাপ্ত পানি পান করুন। নিয়মিত চোখ ধুয়ে নিন এবং প্রয়োজনে ড্রপ ব্যবহার করুন। অল্প আলোতে কাজ করা থেকে বিরত থাকুন। মানসিক চাপ কমানোর জন্য নিয়মিত মেডিটেশন বা ব্যায়াম করুন।
সঠিক যত্ন ও সচেতনতার মাধ্যমে চোখকে সুস্থ রাখা সম্ভব। যদি চোখের চাপ দীর্ঘদিন স্থায়ী হয় তবে দ্রুত চক্ষু বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া উচিত।