যোগ্যতাই আসল সৌন্দর্য্য
আমাদের সমাজে সবকিছু একদিকে আর নারীকে রাখা হয় আরেকদিকে এই প্রথা আজ থেকে নয় যুগের পর যুগ হয়ে আসছে। এখনও পারিবারে কিংবা সমাজের চোখে নারী অবরুদ্ধ এক প্রাণী। সমাজে তার চলাচলের ওপর নানান বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়। যা আসলেও এক ধরনের জুলুম ছাড়া আর কিছুই না। সব কাজ করতে পারবে না, সব কথা বলতে পারবে না, সব জায়গায় যেতে পারবে না, সবার সাথে বুঝে মেপে মন খুশি করে চলতে হবে, নিজের ইচ্ছেমতো পোশাকও পরিধান করতে পারবে না। এরূপ অজস্র বিধিনিষেধ নারীদের জন্য বাধা। যেই বাধা সীমাহীন ও ভিত্তিহীন।
একজন নারীকে হতে হবে সবার মন মত সেটা হোক রূপে বা হোপফুল নারীর যোগ্যতাকে অনেক পেছনে রেখে তার রূপকেই সব সময় প্রাধান্য দেওয়া হয়। কিন্তু রূপ একটা আপেক্ষিক বিষয়। এই রূপকে পিছনে রেখে যোগ্যতাকে প্রাধান্য দেওয়াই একজন নারীর লক্ষ্য হওয়া উচিত।
নারীরা যদি পরিবার বা সমাজের বিধিনিষেধকে তোয়াক্কা না করে নিজেকে প্রাধান্য দেন এবং নিজের যোগ্যতাকে বৃদ্ধির লক্ষে সব প্রতিকূলতাকে পেরপেরিয়ে নিজের সিদ্ধান্তে অটুট থেকে উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত হন, সেখানেও নারীকে আরেকবার চপেটাঘাত করা হয়।
যখন তার যোগ্যতাকে প্রমাণ করতে যায়, তার শিক্ষাকে কাজে লাগাতে চায় সেখানেও রয়েছে নানান ধরনের সমস্যা। সেখানেও নারীকে পড়তে হয় নানান ধরনের রসিকতার খপ্পড়ে।
নারী শিক্ষিত না হলে যেমন একদিক দিয়ে অবহেলিত, শিক্ষিত হলে অন্যদিকে কুপিত। সবকিছুই পরিবর্তন হয়েছে তবে এই সমাজের কুলুষিত মানসিকতার এখনো সঠিক পরিবর্তন হয়নি। জমিদারি শাসন থেকে শুরু করে রাজ-রাজড়ারা নারীদের শুধু ভোগ-দখল করেই ক্ষান্ত থেকেছে। মানুষ রূপে পরিগণিত করেনি। মধ্যযুগ পেরিয়ে এলেও সেই বর্বরতা আজও নারীদের পিছু ছাড়েনি।
এই সমাজে একজন নারীর রূপবতী হলেই হয় না, থাকতে হয় যোগ্যতাও। অনেক জীবনে পড়তে হয় নানান বিপদে। একজন নারী রূপ গুণ সৌন্দর্যের ঊর্ধ্বে একজন মানুষ সেটা এই সমাজের কেউ মনে রাখেনা। নারীর প্রতি বৈষম্য, অবিচার, অন্যায় করার জন্য অসাধু এবং ভণ্ডদের সময় লাগে না। কেবল প্রয়োজন শুধু অকথ্য কিছু শব্দের।
যখন নারীর কোনোদিকেই ত্রুটি-বিচ্যুতি বা ঘাটতি পায় না তখন নারীর যোগ্যতাকে অস্বীকার করে মনে মনে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলো একটি জায়গায় তো নারীর হাত নেই, তার রূপমাধুর্য! ফলে পুরুষতান্ত্রিক সমাজের চোখে নারী তখন পিছিয়ে পড়ে তার রূপের দৌদড়ে! ফলে নারীর প্রতি বৈষম্য, অবিচার, অন্যায় করার জন্য অসাধু এবং ভণ্ডদের সময় লাগে না। তাই যত যাই হয়ে যাক না কেন নিজের যোগ্যতাকে সঠিকভাবে নিজেকেই প্রমাণ করতে হবে।
নারীদের প্রতি হওয়া অসম্মান, অত্যাচার রুখতে নিজেকেই আওয়াজ তুলতে হবে। যদি নিজের প্রতি আত্মবিশ্বাস থাকে, শ্রদ্ধা, সম্মান থাকে তবে সে অনুযায়ী পথ চলতে হবে। নারীদের অধিকার সম্পর্কে সচেতন হতে হবে। নারীর স্বপ্ন যেন হয় আকাশ সমান সুবিশাল। আর সেই স্বপ্নকে কেন্দ্র করে নারী তার যোগ্যতা প্রমাণে অটুট থাকুক।