উৎসবের প্রস্তুতি
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব দুর্গাপূজা। শরতের শুভ্র নীল আকাশ, বাতাসে শিউলি ফুলের গন্ধ আর চারদিকে আগমনীর গান। দূর থেকে ভেসে আসে ঢাকের শব্দ। পুজা মানেই মন্দিরে গিয়ে ঠাকুর দেখা, বন্ধুদের সঙ্গে ঘুরে বেড়ানো ।তাই সবকিছুকে মাথায় রেখেই পূজার আনন্দ দ্বিগুণ করতে কীভাবে সাজিয়ে গুছিয়ে উদযাপন করা যায়, তা নিয়ে কিছু টিপস দেওয়া হলো:
আগেভাগে কেনাকাটা করুন
দুর্গাপূজার প্রধান আকর্ষণ নতুন পোশাক, গয়না, এবং সাজগোজ। তবে শেষ মুহূর্তে কেনাকাটা করতে গেলে দাম বেশি থাকে। পছন্দমতো জিনিসও পাওয়া কঠিন হয়। তাই পুজার অন্তত এক মাস আগে থেকেই কেনাকাটা শুরু করা উচিত। এতে ভিড় এড়িয়ে অনায়াসে আপনি নিজের পছন্দের জিনিস কিনতে পারবেন এছাড়া বিভিন্ন অনলাইন এবং অফলাইন স্টোরে পূজার আগে ডিসকাউন্ট এবং বিশেষ অফার থাকে। এই সময় আপনি ভালো মানের পোশাক কম দামে পেতে পারেন। সম্ভব হলে আরামদায়ক পোশাক বেছে নিন । গয়না, ব্যাগ, ও অন্যান্য সাজসজ্জার সামগ্রীও আগেভাগে কিনে রাখুন।
গুছিয়ে বাজার সদাই করুন
দুর্গাপূজার সময় পরিবারে অনেক ধরনের রান্নার আয়োজন করা হয়। বাজরে প্রয়োজনীয় উপকরণ না পাওয়ার আমেলা এড়াতে আগে থেকে বাজার সদাই গুছিয়ে করা বুদ্ধিমানের কাজ। একটি তালিকা তৈরি করুন। পূজার এক সপ্তাহ আগে শুকনো পণ্য যেমন চাল, ডাল, মশনা কিনে ফেলুন। পচনশীল জিনিস যেমন সবজি, মাছ, মাংস কিনুন পূজার দিনগুলোর আগে পানীয়,মিষ্টি,ফল, ফুল, মোমবাতি, ধূপকাঠি এবং অন্যান্য ডেকরেটিভ আইটেম আগে থেকেই কিনে রাখুন। ঘরকে সজীব ও পবিত্র রাখতে এবা সাজসজ্জার প্রতি মনোযোগ দিন।
নিজের ঘরের পূজার পরিকল্পনা করুন
অনেকেই দুর্গাপূজার সময় বাড়িতে ছোটখাটো পুজার আয়োজন করে থাকেন। এক্ষেত্রে ঘরে পূজার আয়োজনের সামগ্রী প্রস্তুত করুন। দুর্গাপূজার জন্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী যেমন মাটির প্রতিমা, ফুল, ধূপ, বাতাসা, নৈবেদ্য, পান-সুপারি আগেভাগে সংগ্রহ করে রাখুন ।ঘর পরিষ্কার করুন এবং মণ্ডপ তৈরি করুন ।পারিবারিক দায়িত্ব ভাগাভাগি করুন। এতে প্রত্যেকেই পূজার কাজে অংশ নিতে পারবে এবং আনন্দের অংশীদার হবে।
ঘুরতে যাওয়ার পরিকল্পনা করুন
দুর্গাপূজা মানেই বিভিন্ন মণ্ডপে প্রতিমা দর্শন। পূজার প্রথম দুই বা শেষ দুই দিন ভিড় বেশি থাকে, তাই মাঝের দিনগুলিতে প্রতিমা দর্শনের চেষ্টা করুন। সকালে বা বিকালের দিকে গেলে ভিড তুলনামূলক কম পাওয়া যায়। এছাড়া অনেকেই পূজার ছুটিতে কাছাকাছি কোনো জায়গায় ঘুরতে যাওয়ার পরিকল্পনা করেন। তবে দূরে ঘুরতে গেলে আগে থেকে হোটেল বা রিসোর্ট বুকিং নিশ্চিত করে নিন। এই সময়টিকে আরো আনন্দময় করতে কোন কোন প্যান্ডেলে যাবেন তার একটি রুট ঠিক করুন নিজস্ব গাড়ির পরিবর্তে গণপরিবহন পরিষেবা নেওয়া ভালো। বিশেষ করে যেখানে পার্কিং সমস্যা হতে পারে। এক্ষেত্রে মেট্রে ব্যবহার করণে যানজট এড়িয়ে চলা সম্ভব।
পরিবারের জন্য আলাদা সময় বরাদ্দ করুন
দুর্গাপূজা শুধু আধ্যাত্মিক উৎসব। নয়, এটি পারিবারিক মেলবন্ধনের একটি সময়। পরিবার, বন্ধুবান্ধব এবং প্রিয়জনদের সাথে সময় কাটানোর মাধ্যমে সম্পর্কগুলিকে নতুনভাবে উদযাপন করা যায় একসাথে খাওয়াদাওয়া, প্রতিমাদর্শন, ছবি তোলার পরিকল্পনা করতে পারেন বন্ধুদের সাথেও পুজার আগে বা পরে একটি আড্ডার আয়োজন করতে পারেন। যেখানে সবাই একসাথে বসে পুরনো স্মৃতিচারণ করতে পারবেন। এছাড়া বৃদ্ধ সদস্যদের খেয়াল রাখুন। তাদের একাকী রেখে দেওয়া উচিত নয়। তাঁদের সাথে কিছু সময় কাটিয়ে দিন। তাঁরা যাতে আপনার সাথে উৎসবের আনন্দ ভাগ করতে পারেন।