কর্মক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত গ্রহণে কেন পিছিয়ে নারী
নারী পিছিয়ে নেই কোথাও কথাটা যেমন সত্যি। অন্য দিক থেকে নারী তার জীবনের অনেক বড় বড় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে গিয়ে দুই পা বাড়িয়ে চার পা পিছিয়ে যায়। এর সবচেয়ে বড় কারণ একজন নারী তার কর্মক্ষেত্রে নিয়ে সিদ্ধান্তহীনতায় ভোগে। অনেক সময় নানান কারণে সে সঠিক সিদ্ধান্ত তার কর্ম জীবন নিয়ে নিতে পারেনা।
নারীরা নির্দিষ্ট কিছু কর্মক্ষেত্রকে প্রাধান্য দিয়ে থাকে বলে তাদের কাজের জায়গাগুলো আরও সংকীর্ণ হয়ে যায়। কাজের ক্ষেত্রে তারা কাজের ধরন, কাজের পরিবেশ ও কাজের স্থান বা দূরত্বকে প্রাধান্য দিয়ে থাকে।
অন্য দিক থেকে মাতৃত্বের মতো একটি দায়িত্ব একটি নারীর পালন করতে হয় দেখে তারা অনেক ক্ষেত্রেই সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারে না। ফলে নারীদের বাধ্য হয়ে কর্মক্ষেত্র ও মাতৃত্ব এ দুটোর যে কোনো একটিকে বেছে নেওয়ার মতো পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হয়। পরিবারের সদস্যরাও অনেক ক্ষেত্রে সাহায্যের হাত বাড়ায় না। তাই পেশা নির্বাচনের ক্ষেত্রে তারা সচ্ছল সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারে না। নারীরা নির্দিষ্ট কিছু কর্মক্ষেত্রকে প্রাধান্য দিয়ে থাকে বলে তাদের কর্মক্ষেত্রের জায়গাগুলো আরও সংকীর্ণ হয়ে যায়।
কর্মক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত গ্রহণে নারীদের পিছিয়ে থাকার একটি অন্যতম মূল কারণ হলো প্রকৌশল ও প্রযুক্তিগত শিক্ষায় নারীর উপস্থিতি অনেকাংশেই কম। এর পেছনে বেশ কিছু কারণও রয়েছে। যেমন আমাদের সমাজে এখনও এমন অনেক পরিবার রয়েছে, যেসব পরিবারের অভিভাবকরা ছেলেদের পড়াশোনার ক্ষেত্রে যে ব্যয় করেন, মেয়েদের ক্ষেত্রে সে পরিমাণ ব্যয় করতে নারাজ। বিজ্ঞান বা প্রযুক্তিভিত্তিক পড়াশোনায় ব্যয় তুলনামূলক বেশি, ভাই অভিভাবকরা চান মেয়েরা বিজ্ঞান বা কমার্স না পড়ে মানবিক বিষয়গুলোতে পড়বে।
নারীরা নির্দিষ্ট কিছু কর্মক্ষেত্রকে প্রাধান্য দিয়ে থাকে বলে তাদের কাজের জায়গাগুলো আরও সংকীর্ণ হয়ে যায়। কাজের ক্ষেত্রে তারা কাজের ধরন, কাজের পরিবেশ ও কাজের স্থান বা দূরত্বকে প্রাধান্য দিয়ে থাকে। যেমন বেসরকারি চাকরির চেয়ে সরকারি চাকরিতে নারীদের আগ্রহ বেশি। আবার কিছু কিছু বিষয় রয়েছে যেগুলো নারীদের পছন্দের শীর্ষে যেমন- শিক্ষকতা। নারীরা ঢালেঞ্জিং পেশায় যেতে চায় না। পছন্দের পেশায় সুযোগ না হলে অনেক সময় তারা বেকার থেকে যায়।
নারীর এই পিছিয়ে পড়ার পেছনে পরিবার অনেক অংশেই দায়ী। কারণ পরিবারের ছোট থেকেই একজন মেয়ে সন্তান ও একজন ছেলে সন্তানের মধ্যে অনেক বৈষম্য তৈরি করা হয়। অন্যদিক থেকে মেয়েটি তার শ্বশুরবাড়ি থেকেও পর্যাপ্ত সহযোগিতা ও পাশে থাকার আশ্বাস পায় না। কারণ একজন নারীর বাইরে ঘরে দুইদিকে সামলাতে হয়। যা মোটেও সহজসাধ্য কাজ নয়। এছাড়াও প্রত্যেকটা নারীর সন্তান সামলানোর মতো একটা বড় দায়িত্ব তার জীবনে পালন করতে হয়। প্রত্যেকটা কাজ একজন নারীর নিজেই সামলাতে হয় বিষয়টা খানিকটা কঠিন বটে।
নারী কর্মক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত গ্রহণে পিছিয়ে বিষয়টা সেরকম নয়। তারা পিছিয়ে যেতে বাধ্য হচ্ছে। শুধুমাত্র সামাজিক ও পারিপার্শ্বিক অবস্থার কথা চিন্তা করে। তাই প্রত্যেকটা নারীর উচিত আগে নিজের পেশা ও কর্মক্ষেত্র বাছাইয়ের সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়া তাহলেই বলা যাবে নারী পিছিয়ে নিয়ে কোথাও।
সামাজিক ক্ষমতায়ন। নারীর অর্থনেতিক ক্ষমতায়নের ক্ষেত্রে জরুরি বিষয়গুলো হচ্ছে শিক্ষা, প্রশিক্ষণ, কারিগরি শিক্ষা, স্বাস্থ্য, উত্তরাধিকার, সম্পদ, উপার্জনের সুযোগ ইত্যাদি। আমাদের দেশের নারীরা এখনও এসব ক্ষেত্রে অনেক পিছিয়ে। ফলে নারীদের কর্মক্ষেত্রে গমনে রয়েছে অনীহা। বিভিন্ন কারণে তাদের এই অনীহার সৃষ্টি হয়।
যেমন বেসরকারি চাকরির চেয়ে সরকারি চাকরিতে নারীদের আগ্রহ বেশি। আবার কিছু কিছু বিষয় রয়েছে যেগুলো নারীদের পছন্দের শীর্ষে যেমন- শিক্ষকতা। নারীরা ঢালেঞ্জিং পেশায় যেতে চায় না। পছন্দের পেশায় সুযোগ না হলে অনেক সময় তারা বেকার থেকে যায়।
শিক্ষিত নারীদের তাদের চিন্তাকে প্রসারিত করে সব ধরনের পেশার জন্য নিজেকে তৈরি করতে হবে। সরকারি চাকরিতে নারীদের আগ্রহের বিষয়টি বিসিএস পরীক্ষার ফল থেকে অনেকটা পরিলক্ষিত হয়।
মাতৃত্বের মতো গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব নারীদের উপর নায় থাকায় নারীরা পরিবার ও কর্মক্ষেত্রে পর্যন্ত সময় দিতে পারে না। ফলে অনেক কর্মজীবী নারীকে সন্তান জন্মের পর কর্মজীবন আগ করতে হয়। এমনকি উচ্চ পর্যয়ের পেশায় নিয়োজিত নারীরাও অনেক সময় চাকতি ছেড়ে দেয় সন্তান জন্মদানের পর। কর্মস্থল অনেক সময় নারীদের এই উভয় দায়িত্ব পালনে সহযোগিতা করে না।