ঈদের দিনে অন্দরের সাজসজ্জায়
ঈদের আমেজ এখন পুরো দেশ জুড়ে শুধু দেশজুড়েই নয় মনে প্রানেই লেগেই গেছে বলা যায় আর শহরের মধ্যে ঈদের আনন্দ কেবল অন্দরে মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে বেশিরভাগ সময়। তাই ঈদের আয়োজনে অন্দরমহলকে গুছিয়ে নেওয়ার ভাবনাই থাকে প্রধান। এই প্রধান ভাবনাকে পুঁজি করেই আপনার প্রস্তুতি নেওয়া জরুরি।
প্রস্তুতি নিন
ঈদের আগের দিন অনেকে প্রস্তুতি নিতে শুরু করেন। তবে অন্তত সপ্তাহ-খানেক আগে থেকে পরিবর্তন ও গোছগাছ শুরু করলে ভালো। ভারি কাজগুলো আগে থেকেই করে নিন। ঘরে ময়লা সাফসুতরো করার কাজটি আগে থেকেই করতে হবে। নাহলে ঠিক মানানসই হবে না।
পর্দা ও চাদর
ঈদের অন্যতম অন্দর সাজানোর অনুষঙ্গ হিসেবে পর্দা ও চাদরের ভূমিকা অপরিসীম। বিছানায় ঈদের দিনে নতুন চাদর বিছাবে না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া কঠিন। ঈদের দিন পুরো ঘটে যেন রঙিন করে সাজে পুরো ঘর টিতে যেন একটা উজ্জ্বল ভাব থাকে এটা মনোরম পরিবেশ সৃষ্টি হয় সেভাবেই অন্তরের পর্দা এবং বিছানা চাদরের দিকে নজর দেওয়া প্রয়োজন মূলত এই দুটি বিষয় খুব বেশি নজকারে। এছাড়াও যেহেতু পুরো গ্রীষ্মকালকে কেন্দ্র করে ঈদ করেছে সেই ক্ষেত্রে অবশ্যই একটু উজ্জ্বল এবং হালকা রংয়ের ব্যবহার করতে হবে। অবশ্যই বিছানা চাদর যাতে সুতি কাপড়ের হয় এবং উজ্জ্বল রঙের হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে এবং পর্দা গুলো যেন বেশ উজ্জ্বল হালকা রঙের হয় এছাড়াও পর্দা দিয়ে যেন আলো এবং বাতাস খুব সহজেই ঘরে প্রবেশ করতে পারে। রঙিন রঙে সাজুক পুরো অন্দর।
শুরু হোক শোবার ঘর দিয়ে
গরমে পড়বে ঈদ ও একই সঙ্গে বৃষ্টির কিছু আভাস। এসব ভেবেই ঈদে বেডরুম বা শোবার ঘর সাজানোর ক্ষেত্রে প্রাধান্য দিন প্রশান্তিকে। হালকা রঙের বিছানার চাদর ব্যবহার করুন। চাদরের ক্ষেত্রে আদ্দি, খাদি, সুতি, ভয়েল ইত্যাদি কাপড় বেছে নিতে পারেন। ভারি পর্দা আর উজ্জ্বল রঙের পিলো কভার রাখতে পারেন খাটে। ঘরে তাজা ফুল বা ইনডোর প্লান্ট রাখলে মন্দ দেখাবে না। অন্দরমহল সাজানোর আগে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত জরুরি। জানালার গ্রিল, ফ্যান এসব মুছে ফেলুন। টয়লেট, বেসিন ধুয়ে মেজে পরিষ্কার করে ফেলুন। পুরনো সোফার কভার বদলে ফেলুন।
ওয়েলকাম কার্ড
ঈদে সাজাতে পারেন শোবার ঘরের দেয়াল। কারুকাজ করা একটি বড় আয়না রাখতে পারেন। চাইলে ক্যানভাস বা অন্যান্য দেওয়াল সজ্জাও ব্যবহার করতে পারেন। 1 দেয়ালে স্বাগতম জানিয়ে কিছু কার্ড বা ডেকোরেশন যুক্ত করা যেতেই পারে। নিজের ঘর সাজাতে নানারকম ছবির গ্যালারি করতে পছন্দ করেন অনেকে। কিন্তু যেকোনো কিছুই ছন্নছাড়া করে করলে ভালো দেখায় না। একটা রঙের কথা মাথায় রেখে তবেই নকশা করতে হবে। আপনার দেয়াল যদি সাদা রঙের হয়ে থাকে তবে সেখানে কালো ফ্রেমের গ্যালারি বেশ মানাবে। ছবির গ্যালারি তৈরি করতে খেয়াল রাখবেন যেন একটা না একটা রঙ তাতে মিলিয়ে ছবির ফ্রেমেও একটা অ্যাকসেন্ট রাখার চেষ্টা করবেন। যেহেতু ঈদ তাই সবকিছুতে বিভিন্ন রকমের রঙের ব্যবহার করতে পারেন। উৎসবে শুধু মনে কেন ঘরেও লাগুক রঙের ছোঁয়া।
টেবিল গোছানো থাকুক
খাবার অতিথিদের তো আর বিব্রত করতে পারেন না। তাই খাবার টেবিল সবসময় গোছালো রাখুন। বড় বড় ডিশে মিষ্টান্ন রাখতে পারেন। তারই পাশে ছোট প্লেট আর চামচ সাজিয়ে ফেলুন। এভাবে ব্যুফের মতো যে যার প্রয়োজনমত পছন্দের খাবার নিয়ে খেতে পারবেন। খাবার টেবিলে মিষ্টি খাবারের পাশাপাশি দুই একটি টক ঝাল খাবার রাখুন। চটপটি, পাকোড়া, নুডুলস, স্যান্ডউইচ ইত্যাদি তৈরি করতে পারেন। খাবার টেবিলের সৌন্দর্য বাড়াতে হালকা রঙের নেটের টেবিল ক্লথ বিছাতে পারেন। শতরঞ্জির টেবিল ম্যাট ও রানার বিছিয়ে দিন।
লাইটিং
ঘরের ভেতর ডেকোরেশনটাও তো চাই। ঘরের সব গুরুত্বপূর্ণ অংশে লাইটিং সাজিয়ে নিন। ঈদে স্টেটমেন্ট তৈরি করতে জুড়ি নেই পেনডেন্ট লাইটের। প্রতিটি ঘরে নানা ধরনের আলোয় রাঙালে বেশ মানাবে। বসার ঘরে লাগাতে পারেন রকমারি পেনডেন্ট লাইট। স্টিল, পিতল ইত্যাদি ব্যবহার করে একটি বা দুটি আলোর সেট। আপনি চাইলে ঝাড়বাতির সঙ্গে ম্যাচিং করে ওয়াল ব্রাকেটও নিতে পারেন। ব্রাকেট ব্যবহার করতে চাইলে
বসার ঘরের জানালার ওপর সেট করুন। বড় বসার ঘরে অথবা ফলস সিলিং বসানো থাকলে সোফার এক পাশে রাখতে পারেন গাছের আদলের পেনডেন্ট লাইট।অ্যালুমিনিয়াম স্ট্যান্ডে ক্রিস্টাল আর কাঁচের তৈরি এই লাইট বেশ জমকালো ভাব আনবে ঘরে। লাইটের আলো গাছ বা যেকোনো শোপিসের সৌন্দর্য আরও দ্বিগুণ করে তুলবে। পেনডেন্ট বা অ্যাকসেন্ট লাইটিং অন্দরে এনেছে মর্ডান স্থাপত্যের ছোঁয়া। খেয়াল রাখবেন ঘরের লাইটিংটা যেন বেশ উৎসবমুখর হয়। ডেকোর লাইট রাখলেও তো সমস্যা নেই। তাতে বরং আয়োজন আরও ভালোই হবে।
রাগস ও কার্পেট
পুরো ডেকরকে বদলাতে বা কিছু কিছু অংশ উজ্জ্বল করতে রাগস বা কার্পেটের জুড়ি নেই। চকচকে বা উজ্জ্বল রঙের রাগসগুলো ঘরকে মুহূর্তেই উজ্জ্বল করে তুলতে পারে। ঘরের দেয়ালের রং যেমনই হোক না কেন রঙিন বা বাহারি নকশার রাগসগুলো সবসময়ই ঘরে নতুন আবহ দেয়। রাগস বা কার্পেটে এসেছে প্রিন্ট। সুতরাং, ঘরের মেঝেটা আপনি মনের মত করে সাজিয়ে নিতে পারছেন। অন্যদিকে কার্পেট বেশ কার্যকরী এবং যেকোনো ঘরকে আরামদায়ক করে তোলে।
সবুজ মোড়া ঘর
ঈদের জন্য ঘরে সবুজের ছোঁয়া দিন। ইনডোর প্লান্ট নানা জায়গায় সাজিয়ে রাখুন। গাছ দিয়ে ঘর সাজানোর মতো রুচিশীল ডেকোরেশন হয় না। ঈদ উপলক্ষে নতুন টব কিনতে পারেন। সাদা বা সোনালি রঙের টব হলে খুব ভালো হয়। ফুলদানিতে সাদা-হলুদ কিংবা সাদা-হালকা গোলাপি রঙের ফুল রাখুন।