Skip to content

১৯শে মে, ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ | রবিবার | ৫ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

খাঁটি পার্মেসান চিজ তৈরি করা কতটা কঠিন

বিশ্বের অনেক প্রান্তে বিখ্যাত খাদ্যের মান ধরে রাখতে নানা উদ্যোগ চলছে৷ যেমন ইটালির এক ধরনের চিজ শুধু নির্দিষ্ট অঞ্চলে কড়া নিয়ম মেনে তৈরি করা হয়৷ সেই পরিবেশ ও প্রক্রিয়ার পেছনে অনেক যত্ন ও ভালোবাসা রয়েছে৷

ইটালীয় ভাষায় খাঁটি পার্মেসান চিজের নাম পার্মিজানো রেজিয়ানো৷ একমাত্র ইটালির নির্দিষ্ট এক অঞ্চলে সেই চিজ উৎপাদনের অনুমতি রয়েছে৷ বিশ্বের বাকি সব পার্মেসান চিজ আসলে ভুয়া৷ প্রশ্ন হলো, পার্মেসানের এত কদর কেন? কীভাবেই বা সেই চিজ তৈরি করা হয়?

শুধু ইটালির উত্তরে নির্দিষ্ট এক অঞ্চলেই পার্মেজানো রেজিয়ানো উৎপাদন করার অনুমতি রয়েছে৷ সেখানকার গরু শুধু খড় ও ঘাস খায় এবং দুধ দেয়৷ পার্মেজান কনসর্টিয়ামের নিয়ম অনুযায়ী গরুকে সাইলেজ বা প্রাণিজাত সাপ্লিমেন্ট খাওয়ানো নিষিদ্ধ৷

গ্রাজিয়ানো তাঁর চিজের জন্য মোদেনার বিরল প্রজাতির সাদা গরুর দুধও ব্যবহার করেন৷ ৭১ বছর বয়সি এই মানুষটি অ্যাপেনিনিস পর্বতের টিলার উপর এক চিজ সমবায়ের কর্ণধার৷ সেখানে শুধু অরগ্যানিক পার্মেজান তৈরি হয়৷ গ্রাজিয়ানো বলেন, ‘‘প্রায় এক হাজার বছর ধরে এই এলাকায় বিশেষ পরিবেশ অটুট রয়েছে৷ জলবায়ু, বাতাস, পানিসহ গোটা এলাকার অনন্য বৈশিষ্ট্য রয়েছে৷ ফলে আমরা প্রকৃতি-নির্ভর চিজ তৈরি করতে পারি৷”

শুধু তাজা গরুর দুধ ব্যবহারের অনুমতি রয়েছে৷ তামার আধারে সেটি হালকা গরম করা হয়৷ তাতে গাঁজানো হুই ও লাব নামের বাছুরের পেটের এনজাইম যোগ করা হয়, যা দুধকে দইয়ে পরিণত করে৷ তথাকথিত ‘চিজ হার্প’ দিয়ে ঘন ঘাঁটতে হয়৷ সেই দুধ কোনো অবস্থায় গরম হলে চলবে না৷ চিজ মাস্টার হিসেবে ফ্রাংকা লাভাচিয়েলি বলেন, ‘‘প্রতিটি খুঁটিনাটী বিষয়ের দিকে নজর দিতে হয়৷ সেটাই হলো রহস্য৷ দুধ দইয়ে পরিণত হলে গরম করার পর নির্দিষ্ট আকার পাওয়া যায়৷”

আসল পার্মেসান চিজ পাবেন কোথায়?
এক কিলো চিজের জন্য ১৫ লিটার দুধের প্রয়োজন হয়৷ পাতলা লিনেন কাপড়ের সাহায্যে কড়াই থেকে ৮০ কিলো ওজনের ডেলা তুলে নিয়ে ভাগ করা হয়৷ সেই ডেলা ছাঁচে ভরা হয় এবং তাতে পার্মেজান কনসর্টিয়ামের ছাপ বসানো হয়৷ সেই প্রতিষ্ঠান নিয়মিত চিজের মান পরীক্ষা করে৷ সেই চিজের উপর নির্দিষ্ট ছাপ দেখে খাঁটি পার্মেজান চেনা যায়৷

সবার শেষে চিজ লবণাক্ত তরলে ডোবানো হয়৷ সেখানে আর্দ্রতা শুষে নেওয়া হয়৷ চিজ মাস্টার হিসেবে আলেসান্দ্রো মেজাকি জানান, ‘‘২০ দিন লবণাক্ত তরলে ডোবানো থাকে৷ সেই লবণ চিজের ডেলার মাঝের অংশতে পৌঁছতে ছয়-সাত মাস লেগে যায়৷”

বিশাল গুদামে কমপক্ষে ১২ মাস ধরে চিজের ডেলা চূড়ান্ত রূপ পায়৷ নিখুঁত রূপ দিতে সেগুলি নিয়মিত ঘোরানো হয় এবং ব্রাশ দিয়ে ঝাড়া হয়৷ আলাদা করে প্রতিটি টুকরোর মান পরীক্ষা করা হয়৷ এর জন বিশেষ হাতুড়ি দিয়ে ঠুকে মন দিয়ে শব্দ শুনতে হয়৷ গ্রাজিয়ানো পজিওলি বলেন, ভেতরে ফাঁপা অংশ বা চিড় রয়েছে কিনা, নক করলে তা শোনা যায়৷

পরীক্ষায় পাশ করলে চিজ অনুমোদন চিহ্ন পায়৷ খাঁটি পার্মিজানো রেজিয়ানো৷ আর ফেল করলে কম মানের চিজ হিসেবে সেটিকে বাজারে বিক্রি করা হয়৷

অনন্যা/এআই

ডাউনলোড করুন অনন্যা অ্যাপ