নারীর সম্পর্কের জটিলতা ও প্রতিবন্ধকতা
নারীকে দেবী রূপে অর্চনা করা হয়। নারীকে মুক্তির প্রতীক ভাবা হয়। যা কিছু সুন্দর, শাশ্বত সেখানে নারীকে প্রতীক হিসেবে কল্পনা নতুন কিছু নয়। অথচ বাস্তবিক জীবনে নারী যেন অবহেলিত, প্রতিবন্ধকতার নাগপাশে আবদ্ধ। নারীর মুক্তির ক্ষেত্রে অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক অন্তর্ভুক্তির প্রসঙ্গ একাধিকবার উঠে এসেছে। কিন্তু নারীর সামাজিক-সাংস্কৃতিক মুক্তির প্রসঙ্গটি কিভাবে এসেছে?
সামাজিক-সাংস্কৃতিক ভাবনা ও প্রথা মানুষের চরিত্রের গঠনে ব্যাপক প্রভাব ফেলে। এই প্রভাব নারীর ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধক হয়ে ওঠে। সামাজিক সাংস্কৃতিক ভাবনার ক্ষেত্রে নারীর সম্পর্কও জটিল বিষয়। সম্পর্ক বলতে আসলে কী বোঝায়? দুটি উদাহরণে স্পষ্ট করা যায়। প্রেম এখন একটু সরল রূপ পেয়েছে। পছন্দের মানুষ থাকলে তার সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলা যায়। কিন্তু এরপর পরিবারে কিভাবে কথাটি উপস্থাপন করবে? অনেক মেয়ের মাথায় এমন চিন্তাই থাকে, প্রেমিককে বলে, “বাড়িতে বিয়ের প্রস্তাব আসছে। কিভাবে সামলাবো?”
বিয়ে হওয়ার পর যে সুখে-শান্তিতে বসবাস করতে পরে, তাও নয়। প্রায় স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে মত পার্থক্য দেখা দেয়। আর তখনই তারা বিবাহবিচ্ছেদের আবেদন করেন আদালতে। সম্প্রতি বিবাহবিচ্ছেদ অনেক বেড়েছে।
বিবাহবিচ্ছেদের আবেদন কমবয়স্ক তরুণীদের ক্ষেত্রে বেশি দেখা যায়। ভবে, অনেকেই এখনো ‘তালাক’ শব্দটিকে ভিষণ ভয় পায়। এই আতঙ্ক থেকেই পারিবারিক নির্যাতনের পরও তারা মুখ বুজে সহ্য করার কথা চিন্তা করে। অনেকে ভাবে, তারা স্বামীর আশ্রয় না পেলে কিভাবে জীবনধারণ করবে? তাই তারা বিবাহ-বিচ্ছেদের পথে হাঁটে না।
এদিকে, শহরাঞ্চলে নারীরা অনেক ক্ষেত্রেই নিজের অধিকার সম্পর্কে সচেতন হয়ে উঠছে। বেশ কয়েকটি সমীক্ষায় দেখা গেছে, পারিবারিক সহিংসতার শিকার হয়ে নারীরা ৯৯৯-এ যোগাযোগ করে অভিযোগ করছেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এ ক্ষেত্রে আস্থা অর্জন করতে পেয়েছে বলেই নারীরা অভিযোগ জানাতে এগিয়ে আসতে পারছে। কিন্তু গ্রামীণ অঞ্চলে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই নারীরা নিজেদের আইনি অধিকার সম্পর্কে সচেতন নয়। তারা নির্যাতনের শিকার হয়েও তাকে ‘ভাগ্যের লিখন’ বলে মেনে নিতে বাধ্য হচ্ছে।