নারীর পোশাকে প্রয়োজন স্বাচ্ছন্দ্য
প্রত্যেকেরই উচিত তার নিজের পছন্দ ও স্বাচ্ছন্দ্য অনুযায়ী পোশাক পরার অধিকার রয়েছে। পোশাক যেকোনো মানুষের ব্যক্তি স্বাধীনতা ও স্বাচ্ছন্দ্য। পোশাক পড়ার ক্ষেত্রে শালীনতা বজায় রেখে নিজ পছন্দকে প্রাধান্য দেওয়া যেতেই পারে। তবে সে পোশাকের কে প্রাধান্য দিতে গিয়ে অনেক সময় অনেক ধরনের ঝামেলাও তৈরি হয়। নারীদের এই পোশাক পরা উচিত নয়! নারীদের ওই পোশাক মানায় না নারীদের! কখনো কি ভেবে দেখা হয়েছে যে নারীর পোশাকে স্বাচ্ছন্দ্যটা আসলে কোথায়? কোথায় কেমন পোশাক প্রয়োজন? কখন কেমন পোশাক প্রয়োজন নারী যদি কর্মজীবী হয় তার কর্ম ক্ষেত্রে পেশা অনুযায়ী কেমন পোশাক প্রয়োজন?
আসলে এইসব চিন্তা ভাবনা করার জন্য যে ধরনের মানসিকতা লাগে তা অনেকের মধ্যেই নেই। তবে তা একদমই উচিত নয়। প্রতিটা মানুষেরই তার নিজ স্বাচ্ছন্দ্য পছন্দ এবং স্বাধীনতা অনুযায়ী পোশাক পরার অধিকার রয়েছে।
পেশা পোশাক বয়স এবং ঋতু অনুযায়ী পোশাকে বিবরণ বর্ণনা করার আগে একটা ছোট ঘটনা বলা যায়:
চারুকলার মেয়েরা সবসময় টি-শার্ট এবং ঢিলা ঢিলা ভাঁজের জিন্স প্যান্ট পরে। তাদেরকে নিয়ে নানান মানুষের নানান বক্তব্য নানান মন্তব্য রয়েছে এবং সেগুলো তারা সরাসরি খেয়ে মেয়েদেরকে বলেও ফেলে। কিন্তু কেউ কি কখনো চিন্তা করেছে তাদের কাজটা আসলে কেমন তারা কেন এ ধরনের পোশাক পরছে?
এই নিয়ে সুমিতা হালদার কে প্রশ্ন করা হলে সে বলে, আমাদের মাটি নিয়ে কাজ করতে হয়।
আমাদের নানান ধরনের মেশিন নিয়ে কাজ করতে হয়। আমাদের কাঠ, বালু, রং, কেমিক্যাল অনেক কিছু নিয়েই কাজ করতে হয় এবং যখন তখন সেগুলো শুধু পোশাক নয়, শরীরেও ভরে যায়। তাই আমাদের পক্ষে কখনোই সম্ভব হয় না সালোয়ার কামিজ কুর্তি কিংবা মেয়েদের আরো যা যা পোশাক রয়েছে সেগুলো পরে পরিপাটি হয়ে বিশ্ববিদ্যালয় গিয়ে সেই সমস্ত কাজে অংশগ্রহণ করা। কাজ করার জন্য সর্বপ্রথম আমাদের প্রয়োজন পোশাকের স্বাচ্ছন্দ্য। তাই কে কি বলল? কে কী ভাবলো সেই সব মাথায় নেওয়ার সময় টুকুও নেই। অনেকে আমাদেরকে অপরিচ্ছন্নভাবে অপরিষ্কারভাবে। কিন্তু আসলে সেই রকম কিছুই নয়। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত নানান ধরনের জিনিস নিয়ে আমাদের কাজ করতে হয়।
যে কোন কাজ করার ক্ষেত্রেই পোশাক নির্বাচন জরুরী এবং সে সমস্ত মেয়েকে কি বলল কে কি ভাবলো সে সমস্ত মাথায় না নিয়ে নিজের মতো করে নিজের কাজটি করাই লক্ষ্য হওয়া উচিত।
সময় ঋতু এবং স্থানভেদে পোশাকের নানান ধরনের
কর্মজীবী নারীদের পোশাক
কর্মজীবী নারীদের ক্ষেত্রে দিনের বেশিরভাগ সময় অফিসে থাকতে হয়। তাই সেই সব জায়গায় একটু নরম সুতি কাপড় পরলে আরাম অনুভূত হবে। এর মধ্যে শুরু হতে যাচ্ছে গরমের উত্তাপ। যে কোন সুতি কাপড় তাপ পরিবাহী। সুতি কাপড় ছাড়াও জর্জেট খাদি বা নরম ধরণের যে কাপড়গুলো রয়েছে সে ধরনের কাপড় পরা যেতে পারে।
তবে অনেক সময় পেশা ও পোশাকের কিছু নিয়ম থাকে। যেমন একজন পুলিশ চাইলেই পারবেনা সুতি কাপড় পড়ে তার ডিউটি তার জন্য তার নির্ধারিত ইউনিফর্ম পড়ে তাকে ডিউরি পালন করতে হবে। একজন নারী উকিল চাইলেও পারবে না রঙিন কোন কিছু পরতে। তার কালো ব্লেজারটি না পড়ে তার ডিউটি দিতে। কারণ তার সেই ব্লেজারটি তার পেশাকে বহন করে।
বিশ্ববিদ্যালয় নারীদের পোশাক
বিশ্ববিদ্যালয় দিনের বেশ অনেকটা সময় থাকতে হয়। এছাড়াও যাতায়াতের সময়ও অনেকগুলো ট্রান্সপোর্ট পরিবর্তন করতে হয়। সেই সব কিছু মাথায় রেখে আরাম পাওয়া যায় সে ধরনের পোশাকে নির্বাচন করা উচিত। বিশ্ববিদ্যালয়ের মেয়েরা সবচেয়ে বেশি পছন্দ করে টপস, কুর্তি, স্কার্ট, গাউন, কাফতান এ ধরনের পোশাকগুলো পরতে । তাদের কাছে চাহিদার শীর্ষে এ ধরনের পোশাক। এছাড়াও তাদের বয়সের সাথে এ পোশাকগুলো বেশ সুন্দর মানানসই।
এবার আসা যাক পোশাকের রঙে
চারিদিকে বসন্তের হাওয়া বইছে তবে গরম আসবে আসবে এরকম একটা ভাবো পরিবেশে তৈরি হয়ে গিয়েছে। এ সময় একটু উজ্জ্বল ও হালকা রঙকে প্রাধান্য দাও প্রয়োজন। অতিরিক্ত গাঢ় রং পরলে গরম অনুভূত হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে। এছাড়াও বেশিরভাগ সময় যেহেতু দিনের বেলা বাহিরে থাকা হয় দিনের বেলার জন্য গাঢ় রং শোভনীয় নয়।
পোশাকে নানান ধরনের
গরম এবং রমজানকে কেন্দ্র করে একটু ঢিলেঢালা পোশাকের প্রাধান্য দেওয়া উচিত। বিশেষ পোশাকের ক্ষেত্রে ফ্রক, গাউন, স্কার্ট এই ধরনের পোশাকগুলো একটু বেশি আরামদায়ক। অন্যদিকে কাফতান, কুর্তি সালোয়ার কামিজ এ পোশাকগুলোও বেশ আরামদায়ক।
আরামদায়ক পোশাকের পাশাপাশি পোশাকটি যাতে পরিচ্ছন্ন থাকে সে দিকেও খেয়াল রাখতে হবে। নিয়ম করে প্রতিদিনের পোশাক প্রতিদিন ধুয়ে আয়রন করে আলমারিতে তুলে রাখুন। একদিনের পোশাক দ্বিতীয় দিন না পড়াই ভালো অদলবদল করে পরলে পোশাক বেশি দিন ভালো থাকে।