রিডিং ক্যাফেতে বইপ্রেমীদের অবসর
টেকনোলজি নির্ভর যুগে এখনো অনেক বইপ্রেমী রয়েছে যাদের কাছে বই তার সই। বই তার বন্ধু ,বই তার ভালোলাগা, বই তার ভালোবাসা। তার অবসরের সময় যেন বইকে ঘিরে। সেখানে থাকে উপন্যাস, গল্প, কবিতা আরো নানান সিরিজ।
বই প্রেমিকরা চাইলেই পারে অবসরে ঘরে বসে বই পড়তে। তবে সবসময় একই জায়গায় বসে বই পড়ার চেয়ে একটু অন্য ধরনের পরিবেশ হলে মন্দ হয় না। একটু আরাম আয়েশ করে চা কফি খেতে খেতে যদি দুই একটা বই পড়া যায় নিজের মনের আনন্দে তবে মন্দ হয় না। শুধু যে বই পড়া হচ্ছে এখানে তা না এখানে নিজের সাথে সময় কাটানো হচ্ছে। দিনশেষে নিজের সাথে সময় কাটানো জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। যা অনেকেরই চিন্তাভাবনারও বাইরে। নিজের সাথে সময় কাটালে মানসিক শান্তি পাওয়া যায়। কাজ করার উদ্যম আরো বেড়ে যায়।
তাই বই প্রেমীদের জন্য যান্ত্রিক শহর ঢাকাতে রয়েছে পাঁচটি বিভিন্ন রকমের বইয়ের ক্যাফে। যেখানে আরাম আয়েশ করে সব ধরনের বই পড়া যায়। সাথে চা কফি ও উপভোগ করা যায়। যথেষ্ট মনোরম পরিবেশে ঘেরা ক্যাফে গুলো।
তবে চলুন ঘুরে আসি সেই পাঁচ বইয়ের ক্যাফেতে-
![](https://a.kha.icu/wp-content/uploads/2024/02/FB_IMG_1706518500729.jpg)
বাতিঘর
প্রায় পাঁচ হাজার বর্গফুট জায়গার ওপর ও মুঘল আমলের স্থাপত্য লালবাগের কেল্লার আদলে ও হলদে বাতির নৈপুণ্যে বাতিঘর সজ্জায়িত করা। বাতিঘরকে বইয়ের রাজপ্রাসাদ ও বলা যায়। এর দেয়ালে সারি সারি ভাবে সাজানো আছে কয়েক লাখ বই। ইতিহাস, বিজ্ঞান, দর্শন, গোয়েন্দা, আইন, সাংবাদিকতা, সাহিত্য, কবিতা, বিদেশি লেখকদের বই। সবকিছুই আলাদা আলাদা সেকশনে নামসহ ভাগে ভাগ দেয়ালে সুন্দর করে সাজানো। দেশি ও বিদেশি লেখকের বিপুল শিশুতোষ ও কমিক বইয়ের সমারোহ ও আছে সেখানে। বাচ্চাদের জন্যএকটি কিডস কর্নারও। নান্দনিক পরিবেশে ঘেরা বাতিঘর। পাঠকেরা এখানে বসে বিনা ব্যয় বই পড়তে পারবেন, আবার পছন্দের বইগুলো কিনেও নিয়ে যেতে পারবেন চাইলেই। ঢাকা ছাড়া চট্টগ্রাম, সিলেট ও রাজশাহীতেও রয়েছে বাতিঘরের শাখা।
বুক ওয়ার্ম
ইংরেজি সাহিত্যের কারখানা বলা যায় বুক ওয়ার্মকে। ৩০ বছর ধরে এর জনপ্রিয়তা ব্যাপক। বুক ওয়ার্ম এর অবস্থান গুলশানের বিচারপতি শাহাবুদ্দিন আহমদ পার্কে। এটি আসলে কোনো রিডিং ক্যাফে নয়। বাহ্যিক ও অভ্যন্তরীণ পরিবেশের কারণে বই প্রেমীদের নিকট এর আকর্ষণ এতো বেশি। চাইলে পার্কে চির সবুজ চিত্র উপভোগ করে বই কিনে নিতে পারেন।
পাঠক সমাবেশ
রাজধানীর বুকে চির চেনা ও পুরাতন বইয়ের ক্যাফে মানেই পাঠক সমাবেশ। প্রায় ৩৪ বছর শাহবাগে অবস্থিত পাঠক সমাবেশের। বাংলা ও ইংরেজি সাহিত্যের বইয়ের সমাহার ছাড়াও এখানে রয়েছে শিশু-কিশোরদের পড়ার উপযোগী নানা ধরনের বই। পাঠক সমাবেশের আরেকটি শাখা কাঁটাবন, আজিজ সুপার মার্কেটের অপর পাশে অবস্থিত।
![](https://a.kha.icu/wp-content/uploads/2024/02/4-38-1024x682.jpg)
বেঙ্গল বই
বেঙ্গল বই ধানমন্ডির ২৭ নম্বরের ৪২ নম্বর বাড়িতে বেঙ্গল শিল্পালয় অবস্থিত। সেখানে বেঙ্গল বুক ক্যাফের সঙ্গে আছে বেঙ্গল গ্যালারিও। এখানে প্রায়ই বিভিন্ন ধরনের শিল্পপ্রদর্শনী হয়। ভবনটির নিচতলায় বুক ক্যাফেতে রয়েছে শিশুদের জন্য আলাদা পড়ার জায়গা। ভবনের বাইরেও রয়েছে বিনা ব্যয়ে বই পড়ার ও পাশাপশি খাবারের ব্যবস্থা আছে।
![](https://a.kha.icu/wp-content/uploads/2024/02/2-49-1024x598.jpg)
দ্য রিডিং ক্যাফে
দ্য রিডিং ক্যাফে নাম শুনলেই ধারণা করা যায় এর পরিচয়। প্রথমে বুকশপে একটা ছোট রিডিং কর্নার খোলা হলেও পরবর্তীকালে এর সঙ্গে সংযুক্ত করা হয় ক্যাফে। সেখানে শিশুদের খেলার জন্যও রয়েছে আলাদা একটি কর্নার। কোলাহলহীন নির্জন প্রান্তরে বইয়ের পাতায় ডুবে থাকতে চাইলে রিডিং ক্যাফেতে ঘুরে আসা উচিত।