Skip to content

৯ই মে, ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ | বৃহস্পতিবার | ২৬শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সুন্দরী কমলা নাচে

কমলার গানের সঙ্গে বঙ্গ কন্যাদের নাচ, যেকোনো আসোর জমানোর জন্য যথেষ্ট। তবে সুন্দরী কমলা নামটি যেভাবে বাংলার মানুষের জীবনের সঙ্গে গেঁথে আছে তাকে ফোকলোরের জগত থেকে টেনে তুলে আসল ইতিহাসটুকু জানার আগ্রহ এড়ানো যায় না। তবে কমলা শ্রেফ ইতিহাস নয়। তাকে বাস্তবই বলা যায়।

সেন আমলের শেষের দিকে মহাস্থানের গোকুল ম্যাড়ের প্রাসাদে আবার অনেকের মতে স্কদের ধাপে অবস্থিত প্রমোদ ভবনের তৎকালীন রাজার প্রমোদবালাদের মধ্যে অসাধারণ রূপবতী, গুণবতী ও প্রমোদকলায় পটীয়সী এক সুন্দরী প্রমোদবালার একজন কমলা। যার রূপ-গুণ-কৃতি নিয়ে পরবর্তীকালে লোকগান ও লোকনাটক উনিশ শতকেও অত্র জনপদ ছেড়ে উত্তরবঙ্গের অনেকটা এলাকাসহ বিদগ্ধ মানুষকে বিনোদন জুগিয়েছিল।

এই কমলাকে কেন্দ্র করেই লেখা হয়েছে বিখ্যাত গান
ওরে কমলার নাচনে বাগিচার পিছনে চাঁদ ও ঝলমলে হাঁসেরে ভাহালো করিয়া বাজাওগো দোতারা সুন্দরী কমলা নাচে…’

উত্তরবঙ্গেরই কোনো এক স্বভাবকবি গানটি লিখেছিলেন। কিন্তু কমলা কি বাস্তবেই কেউ ছিলেন? নাকি বাংলায় একটি ফোকলোর মাত্র। লোকসংস্কৃতিই কি কমলাকে জন্ম দিয়েছে? এ নিয়ে তর্ক হতেই পারে। তবে কমলা বাস্তবেও ছিল, অন্তত এমন প্রমাণও আছে। বাংলার আদি-মধ্যযুগের পালাগুলোতে বিচ্ছেদাত্মক ‘কমলা’ চরিত্রের স্বতন্ত্র কাহিনি পাওয়া যায়। ‘কমলার পুঁথি’ নামে বিয়োগান্ত কমলা চরিত্র অত্যন্ত জনপ্রিয় ছিল বাংলার সমাজে। অষ্টাদশ শতকের দ্বিজ ঈশান-রচিত কমলা পালা দীনেশচন্দ্র সেন তার সংকলনেও তুলে ধরেছেন। এও বিয়োগান্ত পরিণতির কমলা। ‘কমলা’ চরিত্রকে কেন্দ্র করে বাঙালি জীবনে নানা গীতিপালা তৈরি হয়েছে। তবে ভিন্ন ভিন্ন পালায় ভিন্ন ভিন্ন কমলা, ভিন্ন ভিন্ন তার ঘটনা। উনবিংশ-বিংশ শতকে কমলার বনবাস, কমলা রানীর। আবার কমলা একসময় নর্তকী ছিল এবং পরে রানী হয়েছিলেন এমন প্রমাণও বিরল নয়।

কমলা সুন্দরী যে মহাস্থানে বাস্তবে ছিল ও কাশ্মীরের রাণী হয়েছিল তার প্রমাণের খোঁজ পাওয়া যায় কাশ্মীরের কবি কলহন রচিত ইতিহাস গ্রন্থ ‘রাজ তরঙ্গিনী’ তে। কাশ্মিরের নৃত্য-বিকাশে বাংলা অঞ্চলের এই কমলার ভূমিকা অপরিসীম এবং কাশ্মীরে এখনোকমলার মন্দিরের ধ্বংসাবশেষ আছে। বাংলার আদি-মধ্যযুগের পালাগুলোতে বিচ্ছেদাত্মক ‘কমলা’ চরিত্রের স্বতন্ত্র কাহিনি পাওয়া যায়। ‘কমলার পুঁথি’ নামে বিয়োগান্ত কমলা চরিত্র অত্যন্ত জনপ্রিয় ছিল বাংলার সমাজে। অষ্টাদশ শতকের দ্বিজ ঈশান- রচিত কমলা পালা দীনেশচন্দ্র সেন তাঁর সংকলনেও তুলে ধরেছেন। এন্ড বিয়োগান্ত পরিণতির কমলা।

তার বইতে পুণ্ড্রনগরের কমলার কথার উল্লেখ রয়েছে। বাংলা সাহিত্যেও একাধিক কমলার কথা বিধৃত হয়েছে। তবে কমলার পরিচায়ক বলতে গেলে এই গানটিই। যেখানে কমলার রূপ ও নাচের সৌন্দর্যে রাতের চাঁদও হেসে ফেলে।

ডাউনলোড করুন অনন্যা অ্যাপ