Skip to content

৮ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ | রবিবার | ২৪শে ভাদ্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ইটালিতে কুৎসিতদের ক্লাবে বিপুল উৎসাহ

আধুনিক যুগে সৌন্দর্যের প্রথাগত ধারণা কি সবার জন্য চাপ সৃষ্টি করছে? সমালোচকরা সেই সংজ্ঞার বিরোধিতা করেন৷ ইটালির এক ক্লাব একশো বছরেরও বেশি সময় ধরে এমন গতানুগতিক ধারণাকে চ্যালেঞ্জ করে আসছে৷

দানিয়েলে ইসাবেতিনি
ইটালির মার্কে অঞ্চলের পবিকোয় একশো বছরেরও বেশি আগে গঠন করা হয়েছিল৷ ১৮৭৯ সালে পাত্রপাত্রীদের মধ্যে ঘটকালির মঞ্চ হিসেবে এই উদ্যোগ চালু হয়৷ গত শতাব্দীর সত্তরের দশকে সদস্যরা বাঁধাধরা সৌন্দর্যের ধারণার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান৷

‘কুৎসিত মানুষের ক্লাবে’ যা হয়
সুন্দর হোক বা কুৎসিত, যে কেউ ক্লাবের সদস্য হতে পারেন৷ বর্তমানে বিশ্বজুড়ে প্রায় ২৫,০০০ সদস্য ছড়িয়ে রয়েছেন৷ ক্লাবের সহ সভাপতি জানি আলুইজি বলেন, ‘‘আমাদের নীতি হলো, কুৎসিত হওয়া একটা গুণ, আর সৌন্দর্যের দাসত্ব করতে হয়৷ আমরা প্রথাগত সৌন্দর্যকে ঘিরে উন্মাদনার বিরোধী৷ সে ক্ষেত্রে কম সুন্দর মানুষকে বঞ্চিত করা হয়৷ তারা কষ্ট পায়, তাদের তিনগুণ বেশি সংগ্রাম করতে হয়৷ সবকিছু বাহ্যিক রূপকে ঘিরে চলে৷ আমরা তার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করি৷ আমরা অন্তরের সৌন্দর্য, বুদ্ধিমত্তা ও পছন্দের মতো অন্যান্য মূল্যবোধের উপর জোর দেই৷”

‘ইটালির কুৎসিততম মানুষ’ খেতাবজয়ী দানিয়েলে ইসাবেতিনি বলেন, ‘‘আমি কুৎসিত, সত্যি বড় কুৎসিত৷ তাতে আমার কিছু করার নেই৷ আমি বরং গর্ব বোধ করি৷ আমার খেতাব কেড়ে নিতে চাইলে সামনে এসে কঠিন লড়াই করতে হবে কিন্তু৷’’

৫৮ বছর বয়সি দানিয়েলে কিন্তু চিরকাল এমন দেখতে ছিলেন না৷ ৩০ বছর আগে মারাত্মক এক গাড়ি দুর্ঘটনার পর তাঁর মুখে বার বার অপারেশন করতে হয়েছিল৷ একটি পাও কেটে বাদ দিতে হয়েছিল৷ দানিয়েলে বলেন, ‘‘ইটালির কুৎসিততম মানুষের খেতাব আমি ধরে রাখতে চাই৷ এতেই আমার আনন্দ৷ সেই খেতাব জয়ের পর থেকে আমার জীবনের উন্নতি হয়েছে৷ অনেক জায়গা ঘুরতে পারি৷ টেলিভিশন, বিভিন্ন অনুষ্ঠান ও উৎসবে আমাকে ডাকা হয়৷ মানুষ আমার সম্পর্কে আরো জানতে চায়, আমাকে চিনতে চায়৷”

প্রতি বছর সেপ্টেম্বর মাসে পবিকো শহরে ‘কুৎসিতদের উৎসব’ অনুষ্ঠিত হয়৷ সেই উৎসব গানবাজনা, নাচ ও হাস্যরসে ভরা৷ কেউই নিজেকে বিশেষ গুরুত্ব দেয় না৷ তিন দিনের এই গণ উৎসবে স্থানীয় ভুট্টার পদের মতো খাবার পাওয়া যায়৷

এবার সেরা কুৎসিতের খেতাব কে পাবেন? দানিয়েলে ইসাবেতিনি এই নিয়ে পাঁচ বার সেই খেতাব জিতে নিলেন৷ তবে চলতি বছর তিনিই একমাত্র প্রতিযোগী ছিলেন৷ তিনি বলেনস ‘‘এবার কেউ আমার বিপক্ষে দাঁড়ানোর সাহস পায় নি৷ আমি খেতাব জিতে খুব খুশি৷ আগামী বছরও অংশ নেবো৷ দশ বছর ধরে আমি নির্বাচিত হতে চাই৷ আমি একটি কথাই বলবো৷ তোমরা পবিকোয় এসো৷ এখানে আমরা সবাই খুব ভালো আছি৷ সবাইকে ধন্যবাদ, সবার জন্য চুম্বন৷”

কোনো এক দিন তিনি কুৎসিতদের ক্লাবের সভাপতি হবার স্বপ্ন দেখেন৷

অনন্যা/এআই

ডাউনলোড করুন অনন্যা অ্যাপ