মায়েদের স্বস্তির জায়গা হয়ে উঠুক ‘মাতৃত্ব’
সমাজের নানাবিধ চাপে মায়েরা বিবিধ সমস্যার সম্মুখীন হন। তাছাড়া একজন নারী যখন মা হন এর ফলে তার শরীরে নানারকম হরমোনাল চেঞ্জ আসে। যার ফলে তার আচরণগত নানা পরিবর্তন ঘটে। অনেকক্ষেত্রে পরিবারের সদস্যরা এ সম্পর্কে না জানা ও বোঝার ফলে মাতৃত্বের স্বাদ নিতে সহয়তা করেন না নারীকে। এতে আরও সমস্যার সৃষ্টি হয়। মায়েদের এই অসহায়তা, দুর্বলতা ও মানসিক চাপ কমাতে এবার মাতৃত্ব নিয়ে এসেছে কাউন্সিলিং সিস্টেম। এর ফলে মায়েদের অনেক দূরহ কাজ সহজ হয়ে যাবে।
মায়েদের জন্য অনলাইন সেবা ‘মাতৃত্ব মেন্টাল হেলথ কাউন্সিলিং’ চালু করেছে মাতৃত্ব ডট কম। সেবাটি মাতৃত্বের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা ও মাতৃত্বকালীন মানসিক সুস্থতা নিশ্চিত করতে সাশ্রয়ী, নন-জাজমেন্টাল ও গোপনীয়তা বজায় রেখে অনলাইন কাউন্সিলিং সেশন অফার করে। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানান সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
মাতৃত্বর প্রতিষ্ঠাতা ও সঞ্চালক ইসরাত জাহান ইনু বলেন,”মায়েদের ওপর সমাজিক চাপ অপরিসীম। সংসারে ও বাইরে সবখানে একজন নারী নিখুঁতভাবে তার সব কাজ করবেন, এটাই সমাজ চায়। কিন্তু নারী বা মা যে মানুষ এবং দরকার মতো তাদেরও সমর্থন লাগে, সেটা তার আশপাশের মানুষগুলো সবসময় বুঝতে চায় না। তিনি বলেন, এ কাউন্সেলিং এসব নারীদের জন্য ‘ভরসাস্থল’ হয়ে উঠবে। আমাদের লক্ষ্য হলো, মায়েদের একটি নিরাপদ এবং সহায়ক স্থান প্রদান করা যেখানে তারা তাদের চ্যালেঞ্জগুলো নিয়ে কথা বলতে পারে, মানসিক সমর্থন পেতে পারে এবং সব ধরনের মানসিক অসুস্থতার মোকাবিলার কৌশল শিখতে পারে।”
মাতৃত্ব মেন্টাল হেলথ কাউন্সিলিং মায়েদের বিভিন্ন ধরনের সেবা প্রদান করে। এর মধ্যে রয়েছে- একক অনলাইন কাউন্সিলিং; দম্পতি অনলাইন কাউন্সিলিং; গর্ভাবস্থায় অনলাইন মেন্টাল হেলথ সাপোর্ট; স্ট্রেস ম্যানেজমেন্ট, উদ্বেগ ও বিষন্নতা বিষয়ে আলোচনা। নিজেদের লক্ষ্য সম্পর্কে মাতৃত্ব জানায়, আমাদের অন্যতম প্রতিশ্রুতি হলো মায়েদের সন্তান জন্মদানের অভিজ্ঞতাকে উন্নত করা এবং পোস্টপার্টাম সময়ে তাদের সাপোর্ট দেয়া।
কাউন্সিলিং সেবা সম্পর্কে বলছে, ক্লায়েন্টের সব তথ্য মেন্টাল হেলথ কাউন্সিলর ও ক্লায়েন্টের মাঝেই থাকবে। সর্বোচ্চ গোপনীয়তা বজায় রাখা হবে। সহায়তা প্রত্যাশী মায়ের ব্যাপারে মেন্টাল হেলথ কাউন্সিলর কোনোরকম জাজমেন্ট করবেন না এবং ভুক্তভোগী মায়ের সর্বোচ্চ কল্যাণার্থে সঠিক পরামর্শ প্রদান করবেন।
যান্ত্রিক যুগে এসে কেউ কাউকে পর্যাপ্ত সময়টুকুও দিতে চাইছেন না বা পারছেন না। এর ফলে একজন নারী সংসার সামলে, পরিবারের দায়িত্বের বোঝা কাঁধে নিয়ে নিজের জন্য কোনো অবসর পান না।এর মধ্যে আবার মায়ের ভূমিকায় যখন তিনি আসীন হন তখন তার চারপাশের পরিবর্তনটা তিনি আরও বেশি করে লক্ষ করেন। কারণ আগের মতো তার আর সময় থাকে না। সন্তানের দেখভাল করার পাশাপাশি তার শারীরিক মানসিক নানা পরিবর্তনের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়। যা একজন নারীর পক্ষে একা হাতে সামলানো কঠিন। যদি পরিবারের মানুষগুলোর যথাযথ সাপোর্ট না থাকে। তবে বাংলাদেশের সমাজ ব্যবস্থা ও প্রেক্ষাপটে দেখা যায়, অধিকাংশ নারীই মাতৃত্বকালীন নানারকম জটিলতায় ভোগেন।
আবার কখনো তিনি কষ্টগুলো শেয়ার করারও সঠিক মানুষটা পান না। এক্ষেত্রে মাতৃত্বের এমন অসাধারণ উদ্যোগ নিঃসন্দেহে নারীদের জন্য তথা মায়েরদের জন্য এক অভিনব উদ্যোগ। মা এ সমাজের অন্যতম চালিকাশক্তি। তারাই পৃথিবীর সবটা সংঘবদ্ধ করে রেখেছেন মায়া-মমতার দ্বারা। কিন্তু তাদের কথা ভাববার সময় এ সমাজ-সংসারের নেই। তবে মাতৃত্বের এ ধরনের কাজ প্রশংসনীয়। তাদের এই যাত্রা অব্যাহত থাক। মায়েরা তার আপন জগৎকে নিজের মতো করে রাঙিয়ে তুলুক ।