Skip to content

৮ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ | রবিবার | ২৪শে ভাদ্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যানে হত্যা: বর্বরতার শেষ কোথায়

নারীর প্রতি শুধু আমাদের সমাজ নয় বরং পুরো বিশ্বে সহিংসতার শিকার। পুরুষতান্ত্রিক সমাজে নারী কোথাও নিরাপদ নয়। নারীরও যে নিজস্ব মন আছে, ইচ্ছে-রুচি আছে এটা পুরুষতান্ত্রিক সমাজ মানতে নারাজ। ফলে তারা বিভিন্নভাবে নারীর ওপর অত্যাচার করে। শৈশব থেকেই মেয়েরা যে ধরনের হিংস্রতার শিকার হয় ধীরে ধীরে সমাজে প্রতিবন্ধকতা আরও বৃদ্ধি পায়৷ পুরুষতান্ত্রিক সমাজ নারীর প্রতি কদর্যতা আরও বাড়ে! নারীর প্রতি এমন আচরণ নিচু মানসিকতার বহিঃপ্রকাশ। নারীর নিজস্ব ইচ্ছে-অনিচ্ছে এ সমাজ মানতে নারাজ৷ ফলে কোনো কাজে আশাপ্রদ ফল না পেলে পুরুষ নারীর ওপর শোষণ চালায়।

আমাদের সমাজেও নারীর ওপর নির্যাতন চলে বিভিন্নভাবে। তবে এবার বহির্বিশ্বেও নারীকে নানাভাবে হেনস্তা হতে দেখা যাচ্ছে। সম্প্রতি প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় নারীকে খুন করেছেন এক লেবানিজ যুবক। শুক্রবার দেশটির ঝাহলিতে এ ঘটনা ঘটে।

ওই যুবকের নাম শিবল আবু নাজেম। প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় মারিয়া হাতি নামে এক নারীর মাথায় গুলি চালিয়ে খুন করেন তিনি। একটি রেস্টুরেন্টের কাছে এ ঘটনা ঘটে। ওই নারীকে গুলি করার পর নিজের ওপরও গুলি চালায় যুবক। এর পরই তাদের হাসপাতালে নেওয়া হয়।

ওই যুবকের বন্ধু মনা আল হুররাকে জানায়, মারিয়া হাতি প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় তা মেনে নিতে পারেনি আবু নাজেম। কারণ সে তাকে বিয়ে করার জন্যই প্রেমের প্রস্তাব দেয়। মনা আরও জানায়, ওই নারী বিয়ে হয়েছে এবং তার একটি কন্যাসন্তানও রয়েছে। এ জন্য সে প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন।

অন্য আর এক বন্ধু ইল বলেন, আবু নাজেম ওই নারীকে হত্যা করার হুমকি দেয়। এ জন্য সে ১০ দিন আগে থেকেই ওই নারীর পিছু নেয়। নারীর প্রতি দিনে দিনে এ ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা পুরুষতান্ত্রিক সমাজের রূঢ় আচরণকে নির্দিষ্ট করে।

একজন বিবাহিত নারীকে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে ব্যর্থ হবে এটাই স্বাভাবিক। তবে পুরুষের অতিরিক্ত ইগোর কারণে নারীর মতামতকে তারা মূল্যায়ন করতে পারে না। বিধায় নারীকে হত্যার মতো হিংস্রতা দেখে দিয়েছে। পুরো বিশ্ব জুড়ে দিনে দিনে নারীর বসবাস খুব কঠিন হয়ে আসছে। নারীরা পুরুষের হিংস্রতার শিকারে পড়ে প্রাণও হারাচ্ছে।

আমাদের সমাজে এমন ঘটনা অহরহ ঘটছে। মুক্তি রাণী বর্মন নামে এক কিশোরী প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় তাকে জনসম্মুখে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এছাড়া এমন আরও অনেক ঘটনা ইতিমধ্যে ঘটেছে। যা সামাজিক অবক্ষয়। তবে পুরুষতন্ত্রের দৌরাত্ম্যে শুধু বাঙালি নারীরা নয় বরং পুরো বিশ্বের নারীরা অতিষ্ঠ । তাদের জীবনের কোনো অভিমত তারা নিজেরা দেওয়ার ক্ষমতা রাখে না। এর কারণ পুরুষ নারীকে তার দাসত্বের শৃঙ্খলে বাঁধতে চায়৷ নারীকে শিকারে পরিণত করে বিকৃত মানসিক শান্তি লাভ করে। নতুবা ভালোবাসার শিক্ষা ক্ষমা৷ সেখানে জীবননাশ কতটা যৌক্তিক! নারীর প্রতি সম্মান-শ্রদ্ধা গড়ে না উঠলে নারীকে রক্ষা করা দায়।

প্রত্যেক নারী তার আত্মমর্যাদার সঙ্গে বেঁচে থাক। লড়াই করে হলেও নিজেদের অবস্থান নিজেরা তৈরি করার মনোবল গ্রহণ করুক। পুরুষতান্ত্রিক সমাজের বুকে পদাঘাত করে নারী তার আপন জগৎ তৈরি করুক।

ডাউনলোড করুন অনন্যা অ্যাপ