নারীর প্রতি তালেবানের নিষেধাজ্ঞা যেন শেষই হচ্ছে না!
গতবছর যখন তালেবান ক্ষমতায় আসে বিশ্বজুড়ে আতঙ্ক তৈরি হয়েছিল আফগান নারীদের নিয়ে। তালেবানদের শাসনামলে আফগান নারীদের কি দশা হতে পারে তা মোটামুটি আঁচ করতে পারছিল বিশ্ববাসী। ২০২১ সালের ১৫ আগস্ট তালেবান আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখল করার পর থেকেই সবথেকে সঙ্কায় দেশ কাটাচ্ছেন দেশটির নারীরা। তালেবান সরকার গঠনের পর তাদের দেয়া নীতির কারণে বেহাল দশায় দিন কাটাতে হচ্ছে আফগান নারীদের। আফগান নারীদের থেকে একের পর একের অধিকার কেড়ে নিচ্ছে এই তালেবান সরকার।
ক্ষমতায় আসার পর থেকেই নানা কারণে আলোচনায় তালেবান সরকার। এবার আলোচনায় নারীদের রূপচর্চা কেন্দ্র (বিউটি পার্লার) এর ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করায়। আফগান রাজধানী কাবুলসহ সারা দেশে নারীদের পরিচালিত রূপচর্চাকেন্দ্র (বিউটি সেলুন বা বিউটি পার্লার) নিষিদ্ধ ঘোষণা করে আদেশ জারি করেছে দেশটির সরকার।
শিক্ষাব্যবস্থা থেকে নারীদের দূরে সরিয়ে শুর করেন কর্মস্থল থেকে ছাটাই। সেই তথাকথিত পুরুষতান্ত্রিক সমাজের ধ্যানধারণা, ‘নারী কেন ঘরের বাইরে গিয়ে কাজ করবে।’ তালেবান শাসন শুরুর আগে দুই দশক ধরে আফগানিস্তানের যে আন্তর্জাতিক সংযোগ তৈরি হয়েছিল তখন নারীরা শিক্ষা ও পেশাগত সুযোগ গ্রহণ করতে পেরেছিলেন। তা দুমড়েমুচড়ে যায় নিমিষেই। কর্মক্ষেত্র থেকে নারীদের বিদায় দেয়া শুরু করে তালেবান সরকার। তালেবান সরকারের নিয়ম অনুযায়ী নারীরা কাজের জন্য ঘরের বাইরে যেতে পারবেনা।
তালেবান সরকারের নৈতিকতা ও মূল্যবোধ মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মোহাম্মদ আকিফ মাহাজার তোলো নিউজকে এ তথ্য জানিয়েছেন। নতুন এ আইন দেশটির পৌরসভাগুলোতেও কার্যকরের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। নারীদের পরিচালিত বিউটি সেলুনের লাইসেন্স বাতিল করতে কাবুল পৌরসভাকে নির্দেশনা দিয়েছে মন্ত্রণালয়।
এ খবর প্রকাশ্যে আসার পর থেকে বিশ্বজুড়ে আবারও শুরু হয়েছে আলোচনা- সমালোচনা। সচেতন মহল নিন্দা জানাচ্ছে এমন সিদ্ধান্তের। তবে এসবের তোয়াক্কা কখনই করেনা তালেবান সরকার। বিশ্বগণমাধ্যমের সমালোচনা, প্রতিষ্ঠানগুলোর নিন্দা, কোনো কিছুর পরোয়া না করে বরাবরই সেচ্ছাচারিতার পরিচয় দিয়ে আসছে তালেবান সরকার। সেই শুরুতে যখন আফগান নারীদের শিক্ষার ওপর নিষেধাজ্ঞা আনা হয়েছিল তখনই বোঝা যাচ্ছিল দেশটির নারীস্বাধীনতা এবার রসাতলে গেলো বলে।
শিক্ষাব্যবস্থা থেকে নারীদের দূরে সরিয়ে শুর করেন কর্মস্থল থেকে ছাটাই। সেই তথাকথিত পুরুষতান্ত্রিক সমাজের ধ্যানধারণা, ‘নারী কেন ঘরের বাইরে গিয়ে কাজ করবে।’ তালেবান শাসন শুরুর আগে দুই দশক ধরে আফগানিস্তানের যে আন্তর্জাতিক সংযোগ তৈরি হয়েছিল তখন নারীরা শিক্ষা ও পেশাগত সুযোগ গ্রহণ করতে পেরেছিলেন। তা দুমড়েমুচড়ে যায় নিমিষেই। কর্মক্ষেত্র থেকে নারীদের বিদায় দেয়া শুরু করে তালেবান সরকার। তালেবান সরকারের নিয়ম অনুযায়ী নারীরা কাজের জন্য ঘরের বাইরে যেতে পারবেনা।
কোনো নারী যদি ৭২ কিলোমিটার বা তার বেশি দূরত্বে যেতে চান, তাহলে তার সঙ্গে কোনো পুরুষ আত্মীয় থাকতেই হবে। আরও মজার বিষয় হলো নারীরা হিজাব না পরলে তাদের ট্যাক্সিতে নেওয়া যাবে না।
এরপর আসে নারীর স্বাধীনভাবে চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা। তালেবান সরকারের নিয়ম অনুযায়ী কোনো পুরুষ আত্মীয় ব্যতীত একা গাড়িতেও উঠতে পারবেননা আফগান নারীরা৷ আফগান নারীরা যদি সড়কে বেশি দূরে কোথাও ভ্রমণ করতে চান, তাদের সাথে পুরুষ আত্মীয় থাকলে তবেই একমাত্র তাদের পরিবহন সেবা দেয়া হবে অন্যথায় তারা পরিবহন সেবা পাবেননা।
নির্দেশনায় বলা হয়, কোনো নারী যদি ৭২ কিলোমিটার বা তার বেশি দূরত্বে যেতে চান, তাহলে তার সঙ্গে কোনো পুরুষ আত্মীয় থাকতেই হবে। আরও মজার বিষয় হলো নারীরা হিজাব না পরলে তাদের ট্যাক্সিতে নেওয়া যাবে না। বিশ্বদরবারে নারীরা যখন দাপিয়ে বেড়াচ্ছে আপন মহিমায়, নিজেদেরও নিয়ে যাচ্ছে অনন্য উচ্চতায়। তখন এই দেশটিতে নারী চলাচলের গন্ডি ৭২ কিলোমিটার তাও আবার সঙ্গে পোশাকের বাধ্যবাধকতা।
এদিকে আফগানিস্তানের টেলিভিশন চ্যানেলগুলোতে নারী অভিনীত নাটক ও বিজ্ঞাপন প্রচার বন্ধ। সংবাদ পাঠের সময় নারী সাংবাদিকদের হিজাব পরার নির্দেশ দেওয়া হয়। এমনকি ভেঙে দেয়া হয় নারী বিষয়ক মন্ত্রণালয়।
তালেবান সরকারের হিসেবমতে নারীর থাকতে পারেনা কোন চাহিদা, দরকার নেই মানসিক প্রশান্তির। আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে বিনোদোন পার্কসহ সব পাবলিক পার্কে নারীদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করেছে তালেবান। এবার নিষিদ্ধ করলো বিউটি পার্লার। এই নিষেধাজ্ঞা কোথায় গিয়ে থামবে এবার তাই দেখার পালা।