Skip to content

২৬শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ | মঙ্গলবার | ১১ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বিবাহবিচ্ছেদের অধিকার: ফিলিপাইনের নারীরা মুক্তি পাক

বাংলা সাহিত্যের কবি রঙ্গলাল বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন,
‘স্বাধীনতা-হীনতায় কে বাঁচিতে চায় হে,
কে বাঁচিতে চায়?
দাসত্ব-শৃঙ্খল বল কে পরিবে পায় হে,
কে পরিবে পায়।

কবির কবিতার রেশ ধরেই বলতে হয়, মানুষ স্বাধীনতাকামী। কোনো মানুষই স্বাধীনতাহীনতায় বাঁচতে পারে না। বাঁচতে চায় না। পাখি মুক্ত আকাশে ডানা মেলে উড়ে বেড়ায় কিন্তু সেই পাখিই খাঁচায় বন্দি হলে হাসফাস করতে থাকে। মানুষও তেমনই। ধরে-বেঁধে মানুষের ভালোবাসা-সম্মান-শ্রদ্ধা পাওয়া যায় না। তাকে আগলে রাখতে হয় স্বাধীন করে। আর এই স্বাধীনতা সর্বত্র প্রয়োজন। নাহলে মানুষের সমস্যাগুলো বৃদ্ধি পায়।

সম্প্রতি গণমাধ্যম উঠে এসেছে ফিলিপাইনের নারীদের দুঃখ-দুর্দশার কথা। তারা স্বাধীন নয়। এই স্বাধীন বলতে বোঝানো হচ্ছে তারা তাদের দাম্পত্য জীবনে পরাধীন। একবার বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হলে তাদের আর মুক্তি নেই। যদি সেই দাম্পত্য সম্পর্কে প্রেম- ভালোবাসা না থেকে চিরন্তন কলহ থাকে তবু! এক্ষেত্রে ফিলিপাইনের নারীরা পড়েছেন বিপাকে। তাদের ইচ্ছে না থাকা সত্ত্বেও অত্যাচারিত স্বামীর সঙ্গে সংসার যাপন করতে হয়। বিবাহবিচ্ছেদের অধিকার তাদের দেওয়া হয়নি আজও!

বিশ্বের অন্যান্য দেশে বিবাহবিচ্ছেদ সহজ এবং বৈধ হলেও ফিলিপাইনের নারীরা তা থেকে বঞ্চিত। ফলে অত্যাচারিত স্বামীর সঙ্গে বাধ্য হয়ে তাদের জীবন কাটাতে হয়। যদি সেখানে হত্যা বা আত্মহত্যার আশঙ্কা থাকে তবু। যা নিতান্তই অন্যায়।

মানুষ স্বাধীন জীবনযাপন করতে ভালোবাসে, পছন্দ করে। কোনো বিবেকবোধসম্পন্ন ব্যক্তিই অপরের অধীনে থাকতে রাজি নয় যদি সেখানে মানসিক স্বস্তি, শান্তি, ভালোবাসা শ্রদ্ধা না মেলে। মূলত সবকিছুর সমন্বয় হলে তখন মানুষ একটু ছাড় দেয়। সেক্ষেত্রে প্রবল ভালোবাসা থাকতে হয় কোন এক পক্ষের। কিন্তু যখন দাম্পত্যে কলহ সৃষ্টি হয়, তারওপর চাপ প্রয়োগ করা হয়, নারীর ওপর নির্যাতন চলতে থাকে তখন নিঃসন্দেহে সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে যাওয়া উত্তম। এবং যেসব দেশে বিবাহবিচ্ছেদ আইন আছে সেখানে এগুলোর প্রয়োগ ঘটে।

কিন্তু ফিলিপাইনের নারীদের বিবাহবিচ্ছেদের অধিকার নেই। তারা স্বামী কর্তৃক অত্যাচারিত, নিপিড়ীত হলেও সংসার হাল টানতে বাধ্য। যতোই জোর-জবরদস্তি হোক না কেনো ফিলিপাইনের নারীরা বিবাহবিচ্ছেদে যেতে পারে না। ফলে তাদের ওপর ক্রমাগত নির্যাতন বাড়ছে।

ফিলিপাইনের নারীদের অন্যান্য দেশের মতো বিবাহবিচ্ছেদের অধিকার দেওয়া হোক। কারণ সাংসারিক জীবনে যদি সমস্যা হয় তবে সেই সমস্যাকে জিইয়ে রাখলে নারীদের বেঁচে থাকা দায়। এই নারীরা জীবনযাপন করতে এত বাধা পেলে রাষ্ট্রের উন্নয়নও বাধাপ্রাপ্ত হবে। কারণ একটি সভ্য সমাজ ও দেশ গঠনে নারীরাই প্রধান সহায়ক। তাই দাম্পত্য সংকট ও সমস্যাকে বেশি বাড়তে না দিয়ে যদি সমস্যা হয় তবে সেখানে মুক্তি প্রযোজ্য। এলক্ষে ফিলিপাইনের নারীদের বিবাহবিচ্ছেদ অধিকার প্রদান করা জরুরি। যাতে সাংসারিক, মানসিক শান্তি বিরাজ করে সমাজ-সংসারে। যখন দেশের মধ্যকার জনগণ সুস্থ স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে সক্ষম হবেন তখনই দেশের উন্নয়ন তরান্বিত হবে।

ডাউনলোড করুন অনন্যা অ্যাপ