সৌদির বুলেট ট্রেন চালক নারী: প্রগতির পথে আরও একধাপ
সৌদি আরবের মক্কা-মদিনা শহরের মধ্যে ৪৫৩ কি মি রোটে ঘণ্টায় ৩০০ কি. মি. গতির বুলেট ট্রেন চালালেন থারা আলি। মক্কা-মদিনার যাতায়াতে হারামাইনে এক্সপ্রেস ট্রেনের চালক হিসেবে ৩২ নারী চূড়ান্তভাবে মনোনীত হয়েছেন। থারা আলি তাদেরই একজন। সৌদির ইতিহাসে প্রথমবারের মতো নারীচালক হিসেবে ট্রেন চালালেন তিনি। তার একজন সহকর্মী আছেও। তিনিও নারী। কর্মক্ষেত্রে সব প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন তারা।
কয়েক দশক ধরে সৌদি আরবে নারীদের কর্মক্ষেত্রে অংশগ্রহণের হার নগণ্য। তবে, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে প্রিন্স সালমান অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য নানা পদক্ষেপ নিচ্ছেন। এরই অংশ হিসেবে নারীদের কর্মক্ষেত্রে অংশগ্রহণের হার বাড়ানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।
সৌদি আরব মুসলিম প্রধান দেশ। মুসলিম দেশগুলো মূলত রক্ষণশীল হয়ে থাকে। এসব দেশে নারীদের এগিয়ে যাওয়া বিশাল যুদ্ধের মতো। এ যুদ্ধে টিকে থাকা এবং এগিয়ে যেতে যেতে দেশকে বিভিন্নক্ষেত্রে নেতৃত্ব দেওয়া সত্যিই প্রশংসার বিষয়। যেকোনো দেশ এগিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে পুরুষদের ভূমিকা যেমন আছে, তেমনি নারীদের অবদানও অস্বীকার করার জো নেই। পৃথিবীর প্রায় সব দেশেই নারীরা এগিয়ে যাচ্ছে বীরদর্পে। যদিও তাদের এ পথ কণ্টকাকীর্ণ। সব সমস্যা পেছনে ফেলে নারীরা এগিয়ে যাচ্ছে তাদের যোগ্যতার জোরে।
নারী যেকোনো কাজ করতে গেলে পিছুকথা শুনতে হয়। নারীরা কিছু করবে আর তা নিয়ে কানাকানি বা প্রতিবন্ধকতা আসবে না, তা যেন হতেই পারে না। নারীদের মূল লক্ষ্যে পৌঁছাতে কতশত বাধা ডিঙিয়ে পাড়ি দিতে হয়। এগিয়ে থাকা নারীদের অবস্থান দেখে উৎসাহিত হয়ে পিছিয়ে পড়া নারীরা সাহস পাচ্ছে। সব সমস্যাকে পেছনে ফেলে তারাও এগিয়ে চলছে পূর্বসূরিদের দেখানো পথে।
বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশ। এদেশেও নারীদের কর্মক্ষেত্রে রয়েছে নানান জটিলতা। তবে কয়েক দশক ধরে নারীরা তাদের অবস্থান তৈরি করছে। তারই ফলে আমরা বাংলাদেশে প্রধানমন্ত্রী, বিরোধীদলীয় নেত্রী, জাতীয় সংসদের স্পিকার, মেট্রোরেলের নারীচালক, নাসা কিংবা মাঠপর্যায়ে সব ক্ষেত্রে নারীদের পদচারণ টের পাচ্ছি। আশার প্রদীপ জ্বলে উঠলেও কিছু প্রতিবন্ধকতা থেকেই যায় বেশকিছু নারীর ক্ষেত্রে। তারাও যদি দিনশেষে তাদের অবস্থান তৈরি করতে পারে এবং নারীদের এগিয়ে যেতে সরকার আরও বেশি পদক্ষেপ নেয়, তাহলে বাংলাদেশ উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত হতে বেশি সময় লাগবে না।
সৌদির মতো একটি রক্ষণশীল দেশে যখন পরিবর্তনের হাওয়া লেগে গেছে, তখন বাংলাদেশের মতো রাষ্ট্রে নারীদের এগিয়ে চলার পথ আরেকটু সহজ হয়ে গেছে। কেননা শতভাগ মুসলিম প্রধান দেশে যখন মানুষ দেখবে উচ্চ পর্যায়গুলো নারীরা পরিচালনা করছে তখন অন্যান্য দেশে তা ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।