Skip to content

২রা মে, ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ | বৃহস্পতিবার | ১৯শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

চন্দনা হোরের একক প্রদর্শনী আহমেদাবাদে

নতুন বছরের শুরুতেই চিত্রশিল্পী চন্দনা হোরের একক প্রদর্শনী হয়ে গেলো গুজরাতের আহমেদাবাদে একটি আর্ট গ্যালারিতে। চন্দনা হোরের বাবা বিশিষ্ট চিত্রশিল্পী সোমনাথ হোর। চট্টগ্রামের সন্তান, বিশ্বভারতী কলা ভবনের শিক্ষক ছিলেন। মা রেবা হোরও বিশিষ্ট চিত্রশিল্পী। দুজনেই প্রয়াত হয়েছেন।

একমাত্র সন্তান চন্দনা গাঢ় রঙের বিকাশে, জীবন-মৃত্যু-লড়াই, তীব্র বিষাদ-হতাশা-যন্ত্রনা, রোগ-ব্যাধি-দৈন্য, মুক্তি, উপশম দৈনন্দিন জীবনের ঘাত-প্রতিঘাতের অনুভূতি থেকে বারে বারে উঠে আসার চেষ্টা করেন বিচিত্র  রঙের প্রকাশে।

মনের মধ্যে একটা নির্জন ফুলের বাগান, কীটের দংশনে যেমন বারেবারে  ক্ষত বিক্ষত হয়, আবার গন্ধ ছড়িয়ে জীবনের উদযাপন করে। এই উদযাপন দুঃখের তিমিরে তাঁর আলোক  বাতি।

চন্দনা হোরের কিছু ছবি দেখে, ছবির সঙ্গে নিজেকে মিলিয়ে আমি কিছু কবিতা লিখেছি। কবিতাগুলো ‘চন্দনার ছবি’ শিরোনামে দিলাম:

চন্দনার ছবি


জলের কোনো রঙ নেই
হে বসন্ত তুমি যদি রাঙালে
বুকের গহীনে ঝরা পাতা
ঝরা ফুল
ভেঙে ভেঙে পড়া
উপচে পড়া দুকূল
হৃদয়ের অন্তরালে, কাঙালের হাত পাতলে।
ঝুপুস করে এসে ঝরে পরা
কোনো এক তালপুকুরে
বেতের সপাং সপাং ছড়া,যেমন ধ্বনি ওঠে সুরে
বাঁশঝাড় থেকে নির্জন দুপুর, উঁকি দিয়ে যায়।
আমার হৃদয় ছিনিয়ে নিয়ে
তুমি যদি তোমার হৃদয়ে টাঙালে
চলো তবে মরাখাদে, জল রঙে বাঁচি
এ বসন্তে,হে আকাশলীনা যদি হাত বাড়ালে


যে বসন্ত বেদনার
জ্বালাময়ী তুমি তাকে কিভাবে জুড়োবে
আমার ভেতরে প্রাণ, অন্তক্ষরণ
একটু একটু করে ফুরোয় প্রতিদিন
দিনান্তে দিন
শিকড়ে বেদনা বিষ,দোয়েলের শিস
অগাধ সলিলে, ফুরিয়ে আসবে
রাজার চিঠির মতো আশা
দগ্ধ হৃৎপিণ্ড ভাসা
তবু বসত করে সাথে
আঘাতে প্রলেপ জুড়োতে
যেমনটি ছিলে
তেমনটি আছো
অন্ধকুহরে একদিন,তুমি ঠিক আসবে
বেলাশেষে প্রহরে,একদিন ঠিকই ভালোবাসবে
মৃত্যুঞ্জয়ী অভিলাষা

ডুবন্ত টাইটানিকের শেষ প্রহরের মতো

আমি ছেড়ে যাচ্ছি তোমার হাত

ভালবাসা মধুময়,তুমি থেকো ডালে

কোকিলের কুজন শেষে

আমাদের দেখা হবে গুঞ্জন ফুরোলে

জীবনতো এমনই হয় যেমন তারিণী মাঝি

ঢেউয়ের তালে টালমাটাল

ছেড়ে দেয় প্রিয়তমার হাত

হাতের আঙুল

নিয়তি মানি না তেমন, তবু মেনে নিতে হয়

যেমন দুর্বিষহ,নক্ষত্র পতনের রাত

আমাদের ফোটা আর ঝরে পড়ার পারাপার

হবে তুমি গলার হার, হবে তুমি কানের দুল

ধরণী রাঙিয়ে শেষে,গল্পের মাসিপিসি এসে

চাঁদের কপালে চাঁদ, নৈঃশব্দ্যে, প্রকৃতির হলাহলে

শুকনো পাতার মর্মর ধ্বনি আগুনে কেমন লেলিহান

তার ছিঁড়ে গেলে বাজে কী বীণা

আগমনী আর প্রস্থান

বৃষ্টি তোমার কান্নার মতো ধুলোয় ধুলোয় কণা

চাঁদ গুঁড়িয়ে জোৎস্ন্যা পোড়ায়

ছাই উড়িয়ে সোনা

পাথরফলকে লিখে রাখা নাম জলোচ্ছাসের ভাঙন

রোদন কেমন রোদ হয়ে যায়

অরণ্যে অনঅবদমন

বাসনা আমার বাসনা তোমার কামনার রঙে রাঙা

তেঁতুল পাতায় সুজন যেমন

দিগন্তে,আবীর রাঙা জামা

স্রোত শুধু স্রোতের ধারা জানে, হারাবার তরে

এ জন্মে কতবার মরি, ভেসে উঠি তোমাকে ধরে

হয়তো কাঁটাগাছ আমি, তুমি আমার জ্যোৎস্না

চিতল হরিণের শিং, নাগকেশরের ফণা

হৃদয়ে হৃদয় মিলে,যত রক্তপাত

রক্তে আগুনে মিলে, যেন জলের-ই প্রপাত

ফুলের ঘায়ে মূর্ছা যায়, ফুলে জেগে উঠি

তোমাকে হারাবার ভয়,মুহূর্তে হারাই

মুহূর্তে,হারিয়ে বাঁচি সখী

ছোট ছোট ঢেউ তুলে, আকাশে মেলেছে পাখনা

নদীটির নাম কর্ণফুলী, পাখিটির নাম চন্দনা

বাবার নাম সোমনাথ হোর, মায়ের নাম রেবা

ছবি দিয়ে সুন্দর, সাজিয়েছে ঘর, এপার ওপার

জগৎ সংসার , দুই বাংলা

ডাউনলোড করুন অনন্যা অ্যাপ