শীতে চুলের যত্নে করনীয়
বছরজুড়ে চুলের সমস্যা খুবই সাধারণ ব্যাপার। অধিকাংশ নারীই ভুগছেন চুলের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা নিয়ে। এদিকে চলছে শীত। শীতে যেন আরও অনেক বেশি করে জেঁকে বসে চুলের নানাবিধ সমস্যাগুলো। এসময় বাতাস শুষ্ক থাকার কারণে চুলও শুষ্ক ও রুক্ষ হয়ে যায়। পাশাপাশি বাইরের ধুলাবালির প্রভাবও পড়ে চুলের ওপর।
পরিচিত খুসকির সমস্যা তো রয়েছেই। সঙ্গে চুলের আরও নানাবিধ সমস্যা দেখা যায়। তবে নারীর সৌন্দর্যের বড় একটি উপকরণ চুল। তাই এই শীতে চুলের যত্নে কোনো আপস নয়। চলুন তবে দেখা যাক এই শীতে চুলের যত্নে কী করণীয়:
১. শীতে চুল পড়া অনেকেরই প্রধান সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়। তাই চুলপড়া রোধে তেল ও ক্যাস্টর অয়েল একসঙ্গে হালকা গরম করে নিন। ঠাণ্ডা হয়ে গেলে তাতে ভিটামিন-ই ক্যাপসুল ভেঙে অথবা ডিমের কুসুম মিশিয়ে চুলে লাগান। এতে চুল পড়া বন্ধ হতে সাহায্য করবে।
২. শীতের মৌসুমে চুলের শুষ্কতা দূর করতে প্রয়োজন কন্ডিশনিং। তাই অনেকেই আমরা শ্যাম্পুর পরে কন্ডিশনার ব্যবহার করে থাকি। তবে এক্ষেত্রে সবচেয়ে ভালো কন্ডিশনারের ভূমিকা পালন করতে পারে তেল। মাথায় তেল দিয়ে আলতো করে মালিশ করুন এবং ঘণ্টাখানেক পরে শ্যাম্পু করে ধুয়ে ফেলুন। তেল ব্যবহার করলে আলাদাভাবে কন্ডিশনার ব্যবহারের প্রয়োজন নেই।
৩. শীতে খুশকির সমস্যা খুব বেশি পরিমাণে জেঁকে বসে। খুশকির সমস্যা দূর করতে একটি সহজ ঘরোয়া উপায় হলো একমুঠো জবা পাতা আর সমপরিমাণ মেহেদি পাতার পেস্টের সঙ্গে ১ টেবিল চামচ লেবুর রস মিশিয়ে চুলে দিতে পারেন। একঘণ্টা ধুয়ে ফেলুন।
৪. চুলের ডগা ফেটে গেলে চুল রুক্ষ হয়ে যায় এবং চুল বাড়তে সমস্যা হয়। ফলে চুলের ওই অংশ কেটে বাদ দিলে চুলের বৃদ্ধিতে কোনো বাধা থাকবে না। এছাড়া চুলের নিচের অংশ অল্প করে কেটে নিলে চুলের ডগা ভালো থাকবে।
৫. অতিরিক্ত শ্যাম্পু বা চুল ব্লো ড্রাই করাটা এই মরশুমে একেবারে বন্ধ করে দিন। সপ্তাহে একবার, বড়োজোর দু’বার শ্যাম্পু করুন, তার বেশি কখনোই নয়। বাকি দিনগুলোয় জল দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন আর কন্ডিশনার লাগান চুলের ডগার দিকে।
৬. শীতের সময়টা যতটা সম্ভব হেয়ার ড্রায়ার ও অন্য কোনো হিটিং মেশিন ব্যবহার থেকে বিরত থাকুন। একটা বড় তোয়ালে দিয়ে ভেজা চুল প্রথমে চেপে বাড়তি জলটা শুষে নিন। তবে ঘষবেন না, তাতে চুল রুক্ষ হয়ে যেতে পারে। এরপর তোয়ালেটা চুলে পাগড়ির মতো করে জড়িয়ে রাখুন। আশিভাগ চুল এতেই শুকিয়ে যাবে। বাকিটা শুকোতে এবং স্টাইলিং করতে হলে সামান্য ড্রায়ার ব্যবহার করতে পারেন, অথবা প্রাকৃতিক হাওয়ায় শুকিয়ে নিতে পারেন।
৭. ভিটামিন-ই চুলের জন্য খুবই উপকারী । তাই যে কোনো তেলের সাথে ভিটামিন-ই ক্যাপসুল ভেঙে এর তেলটি মিশিয়ে মাথায় ভালোভাবে লাগিয়ে সারারাত রাখুন এবং সকালে ধুয়ে ফেলুন।
৮. শীতে অনেকেরই গরম জলে গোসল করার প্রবণতা দেখা যায়। তবে বেশি গরম পানি চুলের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। তাই বেশি গরম পানি দিয়ে কখনো চুল ধোয়া যাবে না।
৯. এছাড়া, চুলের যত্নে খাওয়াদাওয়ার ব্যাপারেও সচেতন হতে হবে। শিম, ফুলকপি, বরবটিসহ আরও বিভিন্ন ধরনের শাকসবজি প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় রাখুন। এছাড়া, বিভিন্ন ধরনের ফলমূল খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন।
পরিপূর্ণ যত্নের অভাবে শীতের সময় প্রকৃতির মতো আপনার চুলও যেনো রুক্ষ, নির্জীব না হয় সেদিকে লক্ষ রাখুন। এই শীতে সঠিকভাবে যত্ন নিয়ে চুল আরও সুন্দর ও আকর্ষণীয় করে তুলুন।