Skip to content

৫ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ | শনিবার | ২০শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বয়ঃসন্ধিকাল: কন্যাদের প্রতি যত্নশীল হোন

বয়ঃসন্ধিকাল মূলত শৈশব ও সাবালকত্বের মধ্যবর্তী শারীরিক ও মানসিক অবস্থা। এই সময় কিশোর-কিশোরীদের শারীরিক ও মানসিক নানা পরিবর্তনের মধ্যে দিয়ে সময় অতিবাহিত করতে হয়। ফলে বয়ঃসন্ধিকালে কিশোরীদের জীবনযাপনে ব্যাপক পরিবর্তন ঘটে। এই সময়ে তাদের মানসিক ও শারীরিক পরিবর্তনকে স্বাভাবিকভাবে গ্রহণে সহায়তা করতে পারে পরিবার-পরিজন। এ সময়টা যদি পরিবার তাদের আগলে রাখে, তবে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হওয়ার আশঙ্কা কমে আসবে।

বয়ঃসন্ধিকালে মেয়েদের শারীরিক বিকাশ খুব দ্রুত হয়। এ সময় দৈহিক আকার-আয়তনের পরিবর্তন ঘটে। শরীরের ওজন বেড়ে যেতে পারে। এছাড়া মাসিকচক্রেরও শুরু হয় এই সময়ে। ফলে মেয়েদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বয়ঃসন্ধিকালের পরিবর্তন। হঠাৎ শরীরিক নানা পরিবর্তন ঘটার ফলে এ সময় মেয়েদের মধ্যে গুটিয়ে রাখার প্রবণতা লক্ষ করা যায়। অনেকেই লজ্জায় অভিভাবকদের কিছু বলতে পারে না। অস্বস্তি বোধ করে। আর এর ফলে তাদের মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ার আশঙ্কা বেশি দেখা যায়। দিশেহারা হয়ে পড়ে। তাই বয়ঃসন্ধিকালে অভিভাবকদের উচিত সন্তানের প্রতি বাড়তি যত্ন নেওয়া।

মায়েদের উচিত, এ সময়ে মেয়েদের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তোলা। মেয়েদের বয়ঃসন্ধিকালে প্রবেশের আগেই তাকে সাধারণ বিষয়গুলো সম্পর্কে সচেতন করে তোলা। যেন এ সময়ে মেয়েরা নিজেদের হঠাৎ পরিবর্তনে মানসিকভাবে ভেঙে না পড়ে।

বয়ঃসন্ধিকালে মেয়েদের মধ্যে শারীরিক, মানসিক ও আচরণিক নানা পরিবর্তন ঘটে তাই পরিবারের সদস্যদের এ সময়টাতে কন্যাদের প্রতি বিশেষ যত্নশীল হতে হবে।

বয়ঃসন্ধিকালে কিশোরীদের যেহেতু নতুন একটি জগৎ পাড়ি দিতে হয় সেহেতু এ সময় পরিবারের সদস্যদের মতো কেউই তাকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে পারে না। বাড়তি দেখাশোনা, যত্ন নেওয়ার ক্ষেত্রে মায়েদের সক্রিয় ভূমিকা রাখতে হবে। যেন বয়ঃসন্ধিকালে মেয়েরা নিঃসঙ্গ, অসহায় হয়ে না পড়ে। লজ্জায় গুটিয়ে না থাকে। নারী সদস্যরা যেন উপযুক্ত তথ্য, সাহায্য সহোযোগিতার মাধ্যমে বন্ধুরূপে পাশে থাকতে পারেন সেদিকে খেয়াল রাখা উচিত। কারণ এ সময় শারীরিক, মানসিক পরিবর্তনের পাশাপাশি আচরণিক পরিবর্তনও লক্ষ করা যায়। এ সময় কিশোরীরা বড়দের মতো আচরণ করতে চায়, নিজেকে স্বতন্ত্র পরিচয়ে প্রকাশ করতে চায়, নিজের মতো প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করে, আবেগময় আচরণ করে, বীরত্বপূর্ণ ও ঝুঁকিপূর্ণ কাজে আগ্রহ দেখায়, অজনাকে জানার জন্য আগ্রহ জন্মে ফলে পরিবর্তনকে বুঝে এ সময় পরিবারের সদস্যদের পাশে থাকা জরুরি।

বয়ঃসন্ধিকালে শারীরিক ও মানসিক ও আচরণিক পরিবর্তনের ফলে এ সময় খাবারের দিকে বাড়তি নজর দেওয়া জরুরি। পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে। ভিটামিন সি, ভিটামিন এ, আমিষ, প্রোটিন, শর্করা খাবারের পরিমাণ বেশি রাখা আবশ্যক। মানসিকভাবে সুস্থ এবং স্বাচ্ছন্দ্যে রাখে এরূপ পোশাক পরিধান করতে হবে। খাওয়া-দাওয়া-পোশাকের পাশাপাশি ব্যায়াম করাও জরুরি। তাতে মন ভালো থাকবে। আর এ বিষয়ে মেয়েদের প্রতি যত্নশীল হলে তাদের মধ্যে দ্রুত স্বাভাবিকতা ফিরে আসবে। আবারও কাজে মনোযোগী হয়ে উঠতে সক্ষম হবে পরিপূর্ণরূপে।

বয়ঃসন্ধিকালে মেয়েদের মধ্যে শারীরিক, মানসিক ও আচরণিক নানা পরিবর্তন ঘটে তাই পরিবারের সদস্যদের এ সময়টাতে কন্যাদের প্রতি বিশেষ যত্নশীল হতে হবে। এতে প্রাথমিক সংকোচ কেটে যাবে এবং পরিবর্তনগুলোকে স্বাভাবিকভাবে গ্রহণ করার মানসিকতা তৈরি হবে।

ডাউনলোড করুন অনন্যা অ্যাপ