আশা ভোঁসলে
‘কিনে দে রেশমি চুড়ি,
নইলে যাব বাপের বাড়ি,
দিবি বলে কাল কাটালি,
জানি তোর জারিজুরি ‘
গানটি শোনেনি এমন মানুষ খুঁজলেও হয়তো পাওয়া যাবে না। গানটি সবার পরিচিত, সেইসঙ্গে গানের গায়িকাও সবার পরিচিত। গানটির শিল্পী আর কেউ নন, তিনি আশা ভোঁসলে।
আশা ভোঁসলে ভারতীয় জনপ্রিয় শিল্পীদের মধ্যে একজন। মূলত হিন্দি গানের জন্য বিখ্যাত হলেও বাংলা গান, লোকসংগীত, পপ গানেও রেখেছেন অবদান।
আশা ভোঁসলে ১৯৩৩ সালের ৮ সেপ্টেম্বর সঙ্গিল রাজ্যের বর্তমান মহারাষ্ট্রের সঙ্গিল জেলার গৌড়ে এক সংগীত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা দীনানাথ মঙ্গেশকর ছিলেন মারাঠি ভাষী। মারাঠি সংগীত মঞ্চের একজন অভিনেতা ও শাস্ত্রীয় সংগীতশিল্পী। আশা ভোঁসলের বয়স যখন নয় বছর, তখন তার বাবা মৃত্যুবরণ করেন। ওই সময় তার পরিবার পুনে কোহোলাপুর এবং পরে মুম্বাইয়ে চলে আসে। বাবার মৃত্যুর পর আশা ভোঁসলে ও তার বড় বোন লতা মঙ্গেশকর পরিবারের ভরণপোষণের জন্য চলচ্চিত্রে গান গাওয়া ও অভিনয় শুরু করেন।
আশা ভোঁসলে ১৯৪৩ সাল থেকে শুরু করে ষাট বছরেরও বেশি সময় ধরে গান গেয়ে চলেছেন। তার গাওয়া প্রথম গান হলো মারাঠি ভাষার মাঝা বল (১৯৪৩) চলচ্চিত্রে ‘চল চল নব বল’। তার হিন্দি চলচ্চিত্রের গানের অভিষেক হয় হংসরাজ বেহলের চুনারিয়া (১৯৪৮)-এ ‘সাবন আয়া’ গানে কণ্ঠ দেওয়ার মাধ্যমে। তার প্রথম একক হিন্দি চলচ্চিত্রের গান ছিল ‘রাত কী রাণী’ চলচ্চিত্রের জন্য। তিনি নিজের সংগীত জীবনে মোট ৯৫২টিরও বেশি সিনেমায় গান গেয়েছেন।
নিজের সংগীত জীবনে আশা ভোঁসলে ও.পি. ন্যায়ার, রবি, শচীন দেববর্মণ, রাহুল দেব বর্মণ, এই আর. রহমানসহ অনেক সংগীত পরিচালকের সঙ্গে কাজ করেছেন।
আশা ভোঁসলে বাংলা সিনেমার জন্য অনেক সিনেমায় নেপথ্য সংগীত গেয়েছেন। এছাড়া, গেয়েছেন বাংলা আধুনিক গান ও রবীন্দ্রসংগীত। তিনি নিজের সুরেলা কণ্ঠে সবাইকে মুগ্ধ করে রেখেছেন।
আশা ভোঁসলে ১৯৭৭ সাল পর্যন্ত সাত বার ফিল্মফেয়ার সেরা কণ্ঠশিল্পীর পুরস্কার পেয়েছেন। ১৯৭৭ সালে তিনি নিজের নাম ফিল্মফেয়ার পুরস্কারে আর গণ্য করতে নিষেধ করেন। ২০০১ সালে তিনি ‘ফিল্মফেয়ার আজীবন সম্মাননা পুরস্কার’ পান। ২০১১ সালে গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস তাকে সর্বাধিক গান রেকর্ডকারী হিসেবে ঘোষণা করে। ২০০৮ সালে ভারত সরকার তাকে পদ্মভূষণ উপাধিতে ভূষিত করে।
উপমহাদেশের প্রখ্যাত সংগীতশিল্পী আশা ভোঁসলের জন্মদিনে তার জন্য রইলো শুভেচ্ছা ও শুভকামনা।
অনন্যা/এসএএস