নায়ক রাজ রাজ্জাকের নায়িকারা
আজ নায়ক রাজ্জাকের ৫ম মৃত্যুবার্ষিকী। ২০১৭ সালের এই দিনে বাংলাদেশি সিনেমা জগতের এক নক্ষত্রের পতন হয়। অসংখ্য জনপ্রিয় সিনেমা উপহার দিয়ে দর্শকের হৃদয় জয় করে আছেন তিনি। চলচ্চিত্রের পথচলায় একের পর এক সাফল্যকে মুঠোবন্দি করেন তিনি। তখনকার সময়ের এক একজন হার্টথ্রব নায়িকার সঙ্গে তার জুটি সুপারহিট হয়।
পঞ্চাশ বছরের দীর্ঘ ক্যারিয়ারে মোট ১৮ জন নায়িকার বিপরীতে অভিনয় করেছেন তিনি। সবচেয়ে বেশি অভিনয় করেছেন নায়িকা শাবানার বিপরীতে ৪০টি ছবিতে। এ তালিকায় দ্বিতীয় হচ্ছেন ববিতা। তার সঙ্গে অভিনীত ছবির সংখ্যা ৩৯টি। নায়িকা কবরীর সঙ্গেও নায়করাজের ব্যাপক জনপ্রিয় জুটি তৈরি হয়েছিল। এছাড়াও সুচন্দা, শবনমের সাথে তার জুটি দর্শকপ্রিয় হয়।
শাবানা
আগেই বলেছি নায়ক রাজ্জাক যত নায়িকার সঙ্গে জুটিবদ্ধ হয়েছেন, তাদের মধ্যে শাবানার নাম প্রথমে। এই জুটি সত্তর থেকে নব্বই- একটানা ইন্ডাস্ট্রিতে রাজত্ব করেছেন। শাবানার সঙ্গে নায়করাজের প্রথম সুপারহিট ছবি কাজী জহিরের ‘অবুঝ মন’। অবুঝ মন, সাধু শয়তান, মাটির ঘর, দুই পয়সার আলতা, চাঁপা ডাঙ্গার বউ, সখী তুমি কার, অমর প্রেম, রজনীগন্ধা এ জুটির উল্লেখযোগ্য ছবি। একাধিক ছবিতে একসঙ্গে অভিনয় করে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারও পেয়েছেন তারা।
কবরী
শাবানার পরে নায়ক রাজের সঙ্গে বেশি যে নামটি শোনা যায় তা হলো ‘কবরী’। সিনেমার সংখ্যা গুনলে শাবানা, ববিতা কবরীর থেকে এগিয়ে থাকলেও রাজ্জাক-কবরী নাম আজও মানুষের মুখে মুখে। সুভাষ দত্তের ‘আবির্ভাব’ থেকে এই জুটির জয়যাত্রা শুরু। এই জুটি অভিনীত প্রায় প্রতিটি ছবিই তুমুল জনপ্রিয় হয়েছে। তাইতো এতো বছর পর এসেও সর্বকালের সেরা জুটিও বলে হয় রাজ্জাক-কবরী জুটিকে।
ববিতা
নায়িকা হিসেবে ববিতার প্রথম ছবি ‘শেষ পর্যন্ত’ এবং শিশুশিল্পী হিসেবে প্রথম ছবি ‘সংসার’ নায়করাজের সঙ্গে। পরিচালক হওয়ার পর প্রথম ছবি ‘অনন্ত প্রেমে’ রাজ্জাক বেছে নিয়েছিলেন ববিতাকেই। এরপর আর বলার অপেক্ষাই রাখেনা কেন এবং কতটা জনপ্রিয় এই জুটি। নায়ক রাজ যেমন পরিচালক হয়ে প্রথম ছবিতেই ববিতার কথা চিন্তা করেছিলেন ববিতাও তার ব্যানারের প্রথম ছবিতে রাজ্জাককেই রাখেন।
সুচন্দা
জহির রায়হানের কালজয়ী সিনেমা ‘জীবন থেকে নেয়া’। রাজ্জাক-সুচন্দা জুটি দর্শকের মনে জায়গা করে নেয়ার অন্যতম একটি কারণ এই সিনেমা। এছাড়াও রাজ্জাকের প্রথম ছবি বেহুলাতে নায়িকা হিসেবে ছিলেন সুচন্দা। তার জীবনের প্রথম নায়িকার সঙ্গে জুটি-বেঁধে আনোয়ারা, দুই ভাই, সুয়োরানী দুয়োরানী, জুলেখার মত সুপারহিট সিনেমা দর্শকদের উপহার দেন।
রাজ্জাক ১৯৯০ সাল পর্যন্ত নায়কের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন। নায়ক হিসেবে তার অভিনীত শেষ ছবি ‘মালামতি’। নায়ক চরিত্রের বাইরে তিনি অন্যান্য চরিত্রে অভিনয় শুরু করেন ১৯৯৫ সাল থেকে। পরিচালক হিসেবেও তিনি কাজ করেন। এবং সবক্ষেত্রেই তিনি তার দক্ষতার ছাপ ফুটিয়ে তুলেন। নায়ক রাজ আজও তার দর্শকদের কাছে অমর।