আইসল্যান্ডে এক সপ্তাহের লংড্রাইভে যা দেখতে পাবেন
লংড্রাইভ কিংবা লংট্রিপের জন্যে আইসল্যান্ডের চেয়ে দারুণ জায়গা আর হয়না। সেক্ষেত্রে আইসল্যান্ডের রিংরোডের চেয়ে ভালো জায়গা আর হয়না। আইসল্যান্ডে গিয়ে গাড়ি ভাড়া করে চলে যাবেন রিং রোডের লং ট্রিপে। এমনিতে নাম আইসল্যান্ড হলেও প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে পৃথিবীর আরো অনেক দেশকেই টেক্কা দিতে পারে আইসল্যান্ড। রাস্তায় দেখা মিলবে হুট করে জেগে ওঠা ফোয়ারা, কখনো দিগন্তে রংধনুর মেলা, তৃণভূমিতে দেখা মিলবে শ্বেতশুভ্র ঘোড়ার দৌড়ুচ্ছে – সেন আপনার গাড়ির সাথে পাল্লা দিতে চাচ্ছে। শুধু তাই না, মাঝেমধ্যে চোখে পড়বে বিশাল বরফের গ্ল্যাসিয়ার, আবার গাড়ি নিয়ে ঘন জঙ্গলের মাঝে চলার সময়েই দেখবেন বিশাল ঝর্ণা। দূরে নিস্তব্ধ পাহাড়ের নীরবতায় সময়টা মোটেও মন্দ যাবেনা। ভাগ্য সুপ্রসন্ন হলে নর্দার্ন লাইটেরও দেখা মিলতে পারে।
সচরাচর লংট্রিপ ইউরোপে বেশ জনপ্রিয়। তবে বর্তমানে এশিয়াতেও এমন লং ড্রাইভের জনপ্রিয়তা বাড়তে শুরু করেছে। আর এমন সুযোগের জন্যে আইসল্যান্ডের রিংরোড ছাড়া আর ভালো জায়গা কোথায়? পুরো দেশের প্রায় আটশো মাইলজুড়ে বিস্তৃত এই রাস্তায় একঘেয়েমির সুযোগ নেই। এমনিতে গাড়িতে আপনি মাত্র একদিনেই পুরো রাস্তা পার করে দিতে পারেন। কিন্তু আপনার ভ্রমণ স্মৃতি বিজড়িত করতে চাইলে অন্তত এক সপ্তাহ তো থাকতে হবেই। মাঝেমধ্যে কোনো ইন বা হোটেলে রাত্রিযাপন করলে আইসল্যান্ড সম্পর্কেও অনেক কিছু জানার সুযোগ হবে।
আবহাওয়া যদি মন্দ হয় তাহলে হয়তো একটু বেশি দিন লাগতেই পারে। হ্যাঁ, আইসল্যান্ডের আবহাওয়ার কথাও মাথায় রাখতে হবে। গ্রীষ্মকাল বাদে বছরের আর যেকোনো সময়েই তুষারপাত হতে পারে। তাহলে আইসল্যান্ডের এই দীর্ঘ যাত্রা কিভাবে শুরু করা যায়? চলুন দেখেই নেয়া যাক।
প্রথম দিন: দ্য গোল্ডেন সার্কেল
প্রথমদিনেই আপনায় যেতে হবে দ্য গোল্ডেন সার্কেলে। রেকজাভিক থেকে শুরু হওয়া এই রাস্তা আপনি প্রথমদিনে পার করতে পারবেন। মাত্র ১৯০ মাইলের পথ। আইসল্যান্ডের বিস্তৃত ও বৈচিত্র্যময় সমভূমির সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্যে এটিই আদর্শ স্থান। পথেই দেখবেন গুলফোস ঝরনা, গেসির জিওথার্মাল এরিয়া এবং আরো অনেক জায়গা। দ্য গোল্ডেন সার্কেল অবশ্যই আইসল্যান্ডের এক বৈচিত্র্যময় জায়গা। গোল্ডেন সার্কেলেই আপনি দেখতে পাবেন।
থিংভেলির ন্যাশনাল পার্ক
ক্লান্ত হলে এখানকার ট্রেলগুলোতে বিরক্তি ছাড়াই হেটে বেড়াতে পারবেন। আবার এখানেই সিলফ্রা নামে একটি জায়গা আছে। এই সিলফ্রাতেই স্নরকেলিং কিংবা স্কুবা ডাইভিং এর সুযোগ আছে।
হাউকাদালুর
খুব দ্রুতই পানির ফোয়ারা মাটিতে নিবে যাবে। তবে সেটাও দেখার মতো দৃশ্য বটে।
গুলফস ঝরণা
এই পতনের উপহার নিচে ঘন কুয়াশা আর ঘন ঘন দৃশ্যমান রংধনু।
দ্বিতীয় দিন আইসল্যান্ডের দক্ষিণ উপকূল অঞ্চল
এখানে আবার দ্বিতীয় দিনের যাত্রা শুরুই বলা যায়। এখান থেকে আপনি যা যা দেখতে পাবেনঃ
সচরাচর ফটোশ্যুটের আদর্শ জায়গা বলে খ্যাত এই ঝর্ণা।
সচরাচর এখানে ঘন ঘন রংধনু দেখা যায়। এমনকি ঝরণার পাশে চড়ে বিশাল ভূমি দেখার বেদিই আছে বলা চলে।
বেশ কয়েকটি পয়েন্ট থেকে আপনি হাইকিং করতে পারবেন। আর যদি হাইকিং এ ভয় থাকে তাহলে দূর থেকেও এর সৌন্দর্য উপভোগের সুযোগ আছে।
বেশ কিছু মিউজিক ভিডিওতে এই স্পট দেখানোয় রাতারাতি জনপ্রিয় হয়ে ওঠে।
কালো বালির এই সমুদ্রসৈকত লাভা আর সমুদ্রের পানির মিশ্রণে এমন অদ্ভুত রূপ পেয়েছে। তাছাড়া পর্বতের গুহা, আর পর্বতের চুড়া এখানকার সৌন্দর্য আরো বাড়িয়ে তুলেছে।
বরফের উপহৃত আর গুহায় ভ্রমণ
এবার আইসল্যান্ডের আইস দেখার সুযোগ মিলবে আশা করা যায়। তৃতীয় দিনে আপনার পথে দেখা মিলবেঃ
তবে গিরিখাদটি বেশ খাড়া। তাই সতর্কভাবে চলাচল করতে হবে।
তবে দূর থেকেও এর সৌন্দর্য উপভোগ করা সম্ভব।
সেই দৃশ্য আক্ষেপ আর মুগ্ধতার মিশেলে ভোগাবে আপনায়।
এখানে একা একা ভ্রমণ করবেন না। একজন গাইড ভাড়া করে নিতে পারেন।
চতুর্থ দিনঃ এগ্লিস্টার এবং ইস্টার্ন জর্ড
এবার আবার গাড়িতে ড্রাইভ। উপকূল ধরে গাড়ি চালিয়ে আস্তেধীরে দেখবেন প্রকৃতির বৈচিত্র্য। এখান থেকে নাকি তিনদিন দেখবেন আঞ্চলিক ভূভাগ এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্য।
এগ্লিস্তাওইরে রাত্রিযাপন করতে পারেন।
আবহাওয়া খারাপ আবার পথে অনেক সময় ভেড়া কিংবা হরিণ চলে আসে।
নর্দার্ন লাইটঃ ভাগ্য ভালো হলে নর্দার্ন লাইটের দেখা মিলতেই পারে। পরিষ্কার আকাশ থাকলে রাতে অরোরা দেখা যেতে পারে।