বিকলাঙ্গতাও দমাতে পারেনি যে নারীকে!
প্রতিনিয়ত নানান প্রতিবন্ধকতায় ঘুরপাক খায় নারীদের জীবন। জন্মের পর থেকে পারিবারিক, সামাজিক বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতা জয় করতে হয় একজন নারীকে। সেখানে শারীরিক ভাবে বিকলাঙ্গ হলে তো আর কোনো কথাই নেই। তার হ্রাস টেনে ধরার জন্য যেনো ষোলোকলা পূর্ণ। তবে এসব প্রতিবন্ধকতা থাকা সত্ত্বেও দমিয়ে রাখা যায়নি জেসিকা কক্সকে। শারীরিক বিকলাঙ্গতা দূর করেছেন মানসিক জোর দিয়ে। জেসিকা কক্স বিশ্বের প্রথম পাইলট, যার হাত নেই।
জেসিকার জন্ম হয় দুটি হাত ছাড়া। তার জন্মের পর চারপাশের সবাইকে অবাক করে দিয়েছিলো তার এই শারীরিক গঠন। ১৯৮৩ সালের ২ রা ফেব্রুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের আরিজোনা রাজ্যে তার জন্মের পর কিছুটা হতাশ হলেও ঘুরে দাড়িয়ে ছিলো তার বাবা-মা। জেসিকার দুটি হাত নেই বলে মেয়েকে কখনো বোঝা ভাবেননি তার বাবা-মা। বরং সাহস জুগিয়েছেন জেসিকাকে এগিয়ে যাওয়ার জন্য।
একবার কৃত্রিম হাত লাগানো হলেও জেসিকা তা খুলে ফেলেন। জেসিকা প্রতিবন্ধীদের জন্য তৈরি কোনো বিশেষ স্কুলে পড়াশোনা করেন নি। তিনি অন্যসব স্বাভাবিক বাচ্চাদের স্কুলেই পড়াশোনা করেছেন। পড়াশোনার পাশাপাশি তিনি মার্শাল আর্ট, সাতার, ট্যাপ ড্যান্স ও বিভিন্ন খেলাধুলায় অংশ নেন।
প্রায় প্রতি ক্ষেত্রে সাফল্য ছিনিয়ে আনেন তিনি। আমেরিকার তায়কোয়ান্দো অ্যাসোসিয়েশন থেকে ব্ল্যাক বেল্ট পেয়ে গিনিস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডে নাম লেখান তিনি । এরপর থেকে তিনি একজন আন্তর্জাতিক মোটিভেশনাল স্পিকার হিসেবেও পরিচিত লাভ করেন।
তবে জেসিকা চাইতেন বিশাল আকাশে উড়তে। ডানা মেলে আকাশে ওড়ার প্রথম যাত্রা শুরু করেন ২০১৫ সালে। জেসিকা এমন কোনো প্রশিক্ষক পাননি যিনি তাকে ধৈর্য সহকারে সময় নিয়ে শিখাবেন, তিনি নিজ শ্রম ও ধৈর্য দিয়ে শেষ করেছিলেন প্রশিক্ষণ। তিন বছর কঠোর পরিশ্রম করে আবারও নাম লেখান গিনেস বুক ওয়ার্ল্ডে, প্রথম হাতবীহিন পাইলট হিসেবে। শারীরিক বিকলাঙ্গতাকে আমলে না নিয়ে যুদ্ধ করেছেন, সমাজের বিরুদ্ধে, প্রকৃতির বিরুদ্ধে এবং সক্ষম হয়েছেন সফলতা বিশাল আকাশে ডানা মেলে উড়তে।