Skip to content

৪ঠা জুন, ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দ | রবিবার | ২১শে জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

নারীর প্রতি সহিংসতা রোধের দায়িত্ব কার?

দিনের পর দিন বেড়েই চলছে শিশু ও নারীর প্রতি সহিংসতা। নারী নিরাপত্তা-হীনতায় ভুগছে কর্মক্ষেত্রে, শিক্ষাক্ষেত্রে, রাস্তা-ঘাটে, এমনকি নিজের পরিবারেও। 

 

প্রায় প্রত্যেক দিনই সংবাদ মাধ্যমে উঠে আসে শিশু ও নারীর প্রতি সহিংসতার কোনো-না-কোনো লোমহর্ষক ঘটনা। কিন্তু এর শেষ কোথায়? কিভাবে সম্ভব নারীর প্রতি বেড়ে চলা এই সহিংসতা প্রতিরোধ করা? এ দায়িত্ব কার? 

 

 

অনেকে এ প্রশ্নের বহু উত্তর খুঁজলেও সব প্রশ্ন-উত্তরের মধ্যে সবার প্রথমে উঠে আসবে রাষ্ট্র। শিশু ও নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে সর্বপ্রথম দায়িত্ব নিতে হবে রাষ্ট্রকেই। যদিও যুগ যুগ ধরে চলে আসা নারীর প্রতি এই সহিংসতার বেড়াজাল ভেঙে দেওয়া খুব সহজ কাজ নয়। শুধু ব্যক্তিগত চিন্তাধারার বদল, পারিবারিক পদক্ষেপে সহিংসতা রোধ সম্ভব নয়। এ-জন্য দরকার রাষ্ট্রীয় পর্যায়ের বহুমুখী উদ্যোগ। 

 

নারী ও শিশু নির্যাতনের ঘটনাগুলো দীর্ঘ বিচারিক প্রক্রিয়ায় শুধু একটি দীর্ঘ সংখ্যাই হয়ে যায়, যা পরিবারের কাছে ধীরে ধীরে ব্যক্তিগত সমস্যায় রূপ নেয়। দীর্ঘ দিন আইনের দুয়ারে দুয়ারে ঘুরেও সঠিক বিচার পায়না নির্যাতিত নারী। উলটো সমাজের ভিন্ন চোখের চাহনি এবং অবহেলায় নিজেকে গুঁটিয়ে নিতে বাধ্য হয় সে। অন্য দিকে, আইনের ফাঁকফোকর গলে বেড়িয়ে রাজত্ব করে নির্যাতনকারীরা। 

 

 

আর দীর্ঘদিন ধরে নারীর প্রতি সহিংসতা ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধির প্রধান কারণ এটি। ধর্ষককে নয় বরং ধর্ষণের শিকার হওয়া নারীকেই মুখ লুকোতে হয় আঁচলে। উপরন্তু অপরাধী ভিকটিমকে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে জিম্মি করে রাখে। 

 

এমনকি আঙুল তোলা হয় ধর্ষিতার দিকেই। রাষ্ট্রীয় ভাবে নারী নিরপত্তাহীনতায় ভোগে। অধিকাংশ সময়ে নির্যাতিত নারী অভিযোগ দায়ের করতেই অনিরাপদ বোধ করে।

 

তাই নারীর প্রতি যেকোনো ধরনের সহিংসতা প্রতিরোধে সরকারকে হতে হবে অঙ্গীকারবদ্ধ। নারী নির্যাতন প্রতিরোধের লক্ষ্যে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে আন্তরিকতা, দক্ষতা, নিষ্ঠা ও পেশাদারিত্বের সঙ্গে কাজ করতে হবে।

 

 

নারী ও শিশু নির্যাতন এবং সহিংসতার অভিযোগ পাওয়া গেলে তাৎক্ষণিকভাবে জড়িতদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে কঠোর আইনগত পদক্ষেপ নেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। 

 

নারী নির্যাতনকারীর সর্বোচ্চ শাস্তি দ্রুততম সময়ে কার্যকর করতে হবে। আমাদের সামাজিক মূল্যবোধ যদি পরিবর্তন না করা যায়, তাহলে কেবল আইন দিয়ে বা রাষ্ট্রীয় হাজার উদ্যোগেও নারীর প্রতি সহিংসতা বন্ধ করা যাবে না।

 

নির্যাতনের শিকার নারীকে সামাজিক নিরাপত্তাবলয়ের মধ্যে আনতে পদক্ষেপ নিতে রাষ্ট্রীয় ভাবে, চেষ্টা করতে হবে সমন্বিত-ভাবে সবাইকে।
 

 

ডাউনলোড করুন অনন্যা অ্যাপ