Skip to content

২৩শে অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ | বুধবার | ৭ই কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পোশাকের মাধ্যমে নারী-পুরুষ চিহ্নিতকরণ বন্ধ হোক

জেন্ডার বৈষম্য নারী ও পুরুষের জন্য একেকটা বাক্সবন্দি কোটা তৈরি করে রেখেছে। এই কোটার আচ্ছাদন নিয়ন্ত্রণ করে এ সমাজের একে অন্যের প্রতি আচরণ, সম্বোধন এমনকি দৃষ্টিভঙ্গিও। 

 

নারীর মত নারী হয় বোরখা, হিজাব, শাড়ি, সালওয়ার কামিজ আর দীঘল কালো চুলে। আবার পুরুষের মত পুরুষ হয় পাঞ্জাবী, শার্ট প্যান্ট, ফতুয়া আর ছোটো ছোটো চুল রাখলে। এই সাধারণ বৈসাদৃশ্য থাকার কারণে রাস্তায় চলাফেরা করা অনেকের জন্য বিব্রতকর পরিস্থিতি তৈরি করে প্রায়শই৷ 

 

পোশাকের মাধ্যমে নারী-পুরুষ চিহ্নিতকরণ বন্ধ হোক

 

পুরুষ মানুষ যখন লম্বা চুল রাখে তখন তাকে দেখতে সমাজের লোকের সাথে সুশ্রী বলে মনে হয়না। সুশ্রী বলে মনে হয় না এর চেয়ে যুতসই বাক্য হবে "যথেষ্ট পুরুষ" বলে মনে হয় না। পুরুষ মানুষ যখন রিষ্ট ব্যান্ড বা কানে দুল পরে তখন লোকের কাছে মনে হতে থাকে হয় এই ব্যক্তি সমকামী কিংবা এই ব্যক্তি উভলিঙ্গ। একই রকম ব্যাপার ঘটে, যখন কোনো নারী সিদ্ধান্ত নেয় সে চুল ছোটো রাখবে, শার্ট প্যান্ট পরে বাইরে বের হবে, বাইক চালানো তার প্যাশন ইত্যাদি।

 

পোশাকের মাধ্যমে নারী-পুরুষ চিহ্নিতকরণ বন্ধ হোক

 

কিন্তু দুটি লিঙ্গের ক্ষেত্রেই কিন্তু এই ব্যাপারটা একেবারেই চয়েস নির্ভর। তাদের পোশাক কিংবা অঙ্গভঙ্গির সাথে তাদের সেক্সুয়্যালিটির প্রভাব নাও থাকতে পারে৷ আর থাকলেই বা কি? কার পোশাক কি বা কার সেক্সুয়্যালিটি কি সেটা একদমই ব্যক্তিগত একটা ব্যপার। সেটা দিয়ে মানুষকে বিচার করা কতখানি যৌক্তিক?  

 

পোশাকের মাধ্যমে নারী-পুরুষ চিহ্নিতকরণ বন্ধ হোক

 

রাস্তাঘাট তো আর নারী পুরুষের পোশাক নির্বাচনের জন্য মার্কিং করার জায়গা না। কিংবা অফিস আদালতও তো নয়। মানুষ মানুষকে বিচার করতে পারে তার মেধার মূল্যায়ন করার মাধ্যমে। মানুষ মানুষকে বিচার করতে পারে তার কর্ম দক্ষতার মাধ্যমে। মানুষ মানুষ কে বিবেচনা করতে পারে তার শিক্ষাগত যোগ্যতার মাধ্যমে। কিন্তু তা না করে, এদেশের মানুষ এখনো পরে আছে কোন মেয়ের চুল কত ইঞ্চি ছোটো করলো। কোন ছেলে কতদিন চুল কাটেনা। কোন মেয়ে ছেলেদের পোশাক পরে বাইরে বের হলো। কোন ছেলে কপালে টিপ দিলো এসকল জিনিষ নিয়ে। 

 

পোশাকের মাধ্যমে নারী-পুরুষ চিহ্নিতকরণ বন্ধ হোক

 

এদিকে দেশে নিরক্ষরতার হার বাড়ছে। যৌন নির্যাতন বেড়েই চলেছে। পারিবারিক সহিংসতার হার আর হিসাবের আওতায় আনা যাচ্ছে না। মানসিক স্বাস্থ্য খুবই সংকটাপন্ন অবস্থায় হেলে পড়েছে। এদিকে কারো বিন্দুমাত্র ভ্রুক্ষেপ থাকেনা। 

 

পোশাকের মাধ্যমে নারী-পুরুষ চিহ্নিতকরণ বন্ধ হোক

 

একটা মানুষ যখন বড় হয়ে ওঠে তখন সে আর জেন্ডার আইডেন্টিটি নিজেই আবিষ্কার করতে পারে৷  তারজন্য ব্রেইনওয়াশ প্রক্রিয়ার কোনো প্রয়োজন পড়েনা। মানুষের বড় হয়ে ওঠার জন্য প্রয়োজন পড়ে তার মানসিক বিকাশ। এই মানসিক বিকাশে পোশাক নির্বাচন হয়তো খুবই স্বল্প মাত্রায় ভূমিকা রাখে। বেশী ভূমিকা রাখে তার শিক্ষার মান আর মানবিক আচরণ।

 

 

ডাউনলোড করুন অনন্যা অ্যাপ