Skip to content

২রা জুন, ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দ | শুক্রবার | ১৯শে জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

জেন্ডার প্রসঙ্গে: উভলিঙ্গ কি এবং কেন স্বাভাবিক?

জীববিজ্ঞান বই এর কথা মনে আছে? যেখানে নারী পুরুষ এর প্রজনন অঙ্গ নিয়ে নানাবিধ আলোচনা হতো। একজন নারী বা একজন পুরুষের বয়ঃসন্ধিতে কি ধরণের পরিবর্তন আসবে সেসব নিয়েই আলোচনা করা হতো সেই অধ্যায়ে। কিন্তু এই নারীপুরুষের প্রজননতন্ত্র নিয়ে অধ্যায় অনেকের কাছেই একটা ধোয়াশাপূর্ন বিষয় হতে পারে। কারণ, এই নারীপুরুষের স্বাভাবিক জৈবিক আলোড়ন তারা সমান ভাবে এক্সপেরিয়েন্স করতে পারে না। 

 

 

কারণ তাদের শারীরিক প্রক্রিয়া অন্যদের তুলনায় ভিন্ন হয়। উভলিঙ্গ মানুষের শারীরিক প্রক্রিয়াতে তাদের শরীরে একই সাথে নারী ও পুরুষের বৈশিষ্টবাহী ক্রোমোজোম থাকে। ফলে তাদের শরীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়াটি বাইনারী সেক্স অর্থাৎ প্রকৃতিগত দিক থেকে যার জেনুইন নারী পুরুষ তাদের থেকে ভিন্ন হয়। তাই শারীরিকভাবে কেউ কেউ পুরুষ হতে পারে আবার কেউ কেউ নারীরূপ ও হতে পারে। এই সকল ব্যাপারই হচ্ছে হরমোন এর উত্থান পতন৷ কিন্তু সমাজে এই সাধারণ বিজ্ঞানকে অস্বীকৃতি জানায় মানবকুল।  তারা নানা রকম বাধাবিপত্তির আগ্রাসন নিয়ে আসে উভলিঙ্গ মানুষের প্রতি। 

 

 

জন্মের সময় অনেক উভলিঙ্গ শিশু তাদের পরিবারেই ঠাই পায় না। পরিবার থেকে বিতাড়িত করে দেয় তাদের নিজের বাবা-মা। কারণ, উভলিঙ্গ সন্তান লালন পালন তাদের জন্য এতটা সহজ হবে না। সমাজের মানুষের সমস্ত নিন্দা উপেক্ষা করে সারাজীবন পার করাটাকে তারা অভিশাপ মনে করেন। অনেক বাবা মা মনে করেন এই উভলিঙ্গ সন্তান তাদের কোনো খারাপ কৃতকর্মের অংশ। তাই শাস্তিস্বরূপ ঈশ্বর তাকে উভলিঙ্গ সন্তান দিয়েছেন।

 

 

এছাড়াও, উভলিঙ্গদের সামাজিক অনেক দায়বদ্ধতা এতদিনও ছিলো। এখন কিছু কিছু জায়গায় কমতে শুরু করেছে এই বৈষম্য। যেমন, লিঙ্গ যাচাই এর অংশে কখনো নারী পুরুষের বাইরে কোনো অপশন দেয়া থাকতো না। সুতরাং, যারা উভলিঙ্গ তাদের জন্য ফর্ম পূরণের কোনো কক্ষ নির্ধারণ করা ছিলো না। যেকোনো সরকারি কর্মসূচি হোক বা বেসরকারি কর্মসূচিই হোক সেখানে তাদের জন্য কোনো নির্ধারিত জায়গা ছিলো না। তাই উভলিঙ্গদের পরে থাকতে হতো এক অন্ধকারে।

 

 

তবে সময় পরিবর্তন হয়েছে উভলিঙ্গরা বিভিন্ন জায়গায় অংশগ্রহণ করছে। নিজেদের পরিচয় গর্বের সাথে তুলে ধরতে পেরেছে নিজের মত। এই আত্মবিশ্বাস যদি পরবর্তীতেও বহাল থাকে তাহলে উভলিঙ্গদের পক্ষে এই সমাজে সাধারণ মানুষের মতই স্বতঃস্ফূর্ত হয়ে বেঁচে থাকা সহজ হয়ে উঠবে। হিজরা শব্দটি আর গালি হিসেবে ব্যবহৃত হবে না কোথাও৷

 

 

 

আমরা সবাই মানুষ। পরিচয়ের ক্ষেত্রে লিঙ্গের চেয়ে কাজের প্রতি বিনিয়োগই মূল লক্ষ হওয়া উচিত। একই সাথে স্বাস্থ্যসেবা ও মেধার মূল্যায়নের ক্ষেত্রে নারী পুরুষ উভলিঙ্গ যেই হোকনা কেন সবাইকে সমান অধিকার নিশ্চিত করাই মানবাধিকারের ধারণা।

 

 

ডাউনলোড করুন অনন্যা অ্যাপ