Skip to content

১৪ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ | সোমবার | ২৯শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ধরাবাঁধা নিয়ম ভেঙ্গে এগিয়েছিলেন শর্মিলা ঠাকুর!

১৯৫৯ সালে প্রথম পর্দায় আবির্ভাব শর্মিলা ঠাকুরের। তখন তাঁর বয়স সবে মাত্র পনেরো। ‘অপুর সংসার’ এর অপর্ণা হয়ে তাঁর যাত্রা শুরু। ক্যামেরার সঙ্গে শর্মিলা ঠাকুরের এভাবেই প্রথম পরিচয়। এরপর থেকে টানা দীর্ঘ সময় ধরে ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে রাজত্ব করেছেন এই অভিনেত্রী। 

 

তার স্কুলে পড়াকালীন সময় ‘অপু’ অর্থাৎ ২৩ বছর বয়সের সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের নায়িকা খুঁজতে থাকা সত্যজিতের চোখে পড়ে ঠাকুর বাড়ির এই মেয়েকে। শর্মিলার বাবা গীতীন্দ্রনাথ ঠাকুর ছিলেন স্বয়ং গগনেন্দ্রনাথ ঠাকুরের নাতি। সত্যজিতের প্রস্তাবে রাজি হন শর্মিলার অভিভাবক। "অপুর সংসার" সিনেমার জন্য পরিচালক খুঁজে পান মনের মতো ‘অপর্ণা’। ছবি মুক্তি পেলে প্রশংসিত হন শর্মিলা। এরপর আসে দ্বিতীয় ছবির প্রস্তাব। নাম ‘দেবী’। যার পরিচালকও সত্যজিৎ রায়। এরপর তিনি কাজ করেন তপন সিংহ, অজয় করের মতো পরিচালকের সঙ্গে।

 

১৯৬৪ সালে মাত্র ২০ বছর বয়সে  বলিউডে হাতেখড়ি শুরু হয় শর্মিলার। প্রথম ছবিতেই নজর কাড়েন তিনি। এর পরে ‘ওয়াক্ত’, ‘অনুপমা’, ‘আরাধনা’, ‘চুপকে চুপকে’র মতো অগুনতি সিনেমায় পর্দা কাঁপাতে দেখা যায় তাঁকে। হিন্দি ও বাংলা দুধরনের ছবিতেই তিনি সমানতালে কাজ করে গেছেন। 

 

তখনকার দিনের সেই ধরাবাঁধা মলমলের শাড়ি আর টানা কাজলের প্রথা ভেঙে বিকিনি পরে এসেছিলেন ক্যামেরার সামনে। তখনকার সময় যা কেউ ভাবতেও পারেননি, তিনি তাই করেছিলেন অবলীলায়। বলিউড ইন্ডাস্ট্রিতে যোগ করেছিলেন নতুন মাত্রা। তাঁর বিকিনি পরা ছবি প্রকাশের পর বিতর্কের ঝড় উঠেছিল তখন। কিন্তু এসব কিছুকে কখনো পাত্তাই দেননি শর্মিলা।

 

শুধু পেশাগত জীবনেই নয় ব্যক্তিগত জীবনেও তথাকথিত ছক ভেঙ্গে এগিয়েছেন বরাবরই। ক্যারিয়ারের গুরুত্বপূর্ণ সময়ে তৎকালীন ভারতীয় ক্রিকেট দলের অধিনায়ক মনসুর আলি খান পতৌদির প্রেমে পড়েন তিনি। ১৯৬৮ সালে বিয়েও করেন তাঁরা। তখনকার সময় হিন্দু ধর্মের হয়েও মুসলিম মনসুরকে বিয়ে করা নিয়েও হয় বেশ আলোচনা সমালোচনা। তবে সেসব কিছু তোয়াক্কা না করেই নতুন সংসার শুরু করেন দু’জন। 

 

নবাব পরিবারে বিয়ে হওয়ার পর নতুন নাম পেয়েছিলেন শর্মিলা। বেগম আয়েশা সুলতানা। এই নাম যদিও গ্রহণ করেছিলেন নিয়ম রক্ষার খাতিরে। কখনওই তা ব্যবহার করেননি তিনি। এক দিকে নতুন সংসার, অন্য দিকে কেরিয়ার। মা হওয়ার পর কম কাজ করার সিদ্ধান্ত নেন নবাব-পত্নী।

 

পরিবার, অভিনয় সামলেও নিজের পরিধি বিস্তার করেছিলেন শর্মিলা। বয়স ৭৬ এর কোঠা পেরোলেও এখনও যেনো বর্ণীল তাঁর জীবনযাপন। তাঁর হাত ধরে বলিউডে যে ছক ভাঙ্গার যাত্রা শুরু হয়েছিলো তা অস্বীকার করার জো নেই কারোর।

 

 

ডাউনলোড করুন অনন্যা অ্যাপ