বিশ্ববাসীর কাছে আফগান নারীদের ক্ষোভ!
তালেবান আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখলের পর সেদেশের নারীদের স্বাধীনতা সীমাবদ্ধ হওয়ার যে আশঙ্কা তৈরি হয়েছিল তা ইতোমধ্যে বাস্তবায়িত হয়েছে। নারীদের অধিকার অক্ষুণ্ণ রাখার প্রতিশ্রুতি দিলেও দ্রুতই তালেবান সরকার কথা রাখেনি। দেশটির নারী বিষয়ক মন্ত্রণালয় বন্ধের পাশাপাশি শুধু ছেলেদের স্কুলে যেতে বলেছে ইসলামী মৌলবাদী গোষ্ঠীটি৷ এছাড়াও সবক্ষেত্রেই নারীদের বৈষম্যের শিকার হতে হচ্ছে আফগান নারীদের।
তালেবান এখনো নারীদের কাজে ফেরার বা বেশির ভাগ মেয়েকে স্কুলে যাওয়ার অনুমতি দেয়নি। ছেলেদের স্কুল খুললেও মেয়েদের শিক্ষার ব্যাপারে তেমন অগ্রসর হচ্ছেনা তালেবান সরকার। গত আগস্টে আফগানিস্তানে ক্ষমতা দখলের পরেই তালেবান সব ধরনের বিক্ষোভ-সমাবেশ নিষিদ্ধ করে। তালেবানের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে বেশ কয়েকবার নিজ অধিকার আদায়ের দাবিতে কিছু নারী অধিকার-কর্মী বিক্ষোভে রাস্তায় নেমেছেন। এই বিক্ষোভ-গুলোয় তালেবানি হামলাও ঘটেছে। কিন্তু তালেবান হামলাও দমিয়ে রাখতে পারেনি নারীদের। হামলার পরও তারা বেশ কিছু বিক্ষোভে অংশ নিয়েছে।
সম্প্রতি আফগান সংকট নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নিষ্ক্রিয়তার প্রতিবাদে রাজধানী কাবুলে আবার বিক্ষোভে নেমেছেন নারী অধিকার কর্মীরা। এ সময় তাঁদের হাতে থাকা ব্যানার-প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল ‘বিশ্ব কেন নীরবে আমাদের মরতে দেখছে’। ‘শিক্ষার অধিকার’, ‘কাজের অধিকার’-এর দাবিতে ব্যানার নিয়ে ১২ জন নারী অধিকার-কর্মী তালেবানের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করেন।
আফগানিস্তানের নারী অধিকার রক্ষার সংগঠন স্পনটেনিয়াস মুভমেন্ট অব উইমেন অ্যাকটিভিস্টের আয়োজকদের একজন ওয়াহিদা আমিরি এএফপিকে বলেন, ‘আমরা জাতিসংঘের মহাসচিবকে আমাদের অধিকার, শিক্ষা, কাজের পক্ষে সমর্থন দিতে আহ্বান জানাচ্ছি। আমরা আজ সবকিছু থেকে বঞ্চিত।’
নারী অধিকারকর্মী ওয়াহিদা আমিরি বলেন, ‘আমরা তালেবানের বিরুদ্ধে কিছুই করিনি। আমরা শুধু শান্তিপূর্ণভাবে বিক্ষোভটি করতে চেয়েছি।’ কিন্তু এই শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভেও সশস্ত্র হামলা চালায় তালেবানরা। দশ জনের অধিক তালেবানের সশস্ত্র সদস্য সাংবাদিকদের জোরপূর্বক সেখান থেকে সরিয়ে দিচ্ছিলেন। ওই ঘটনার ভিডিও ধারণের সময় স্থানীয় একজন সাংবাদিকের মোবাইল কেড়ে নেওয়া হয়।
আফগানিস্তানের নারীদের এই সংকট নিরসনে সমগ্র বিশ্বকে এক হতে হবে। নারীদের মৌলিক অধিকার নিয়ে আপোষ করা ঠিক নয়। নারীদের বৈষম্য দূর করতে পুরো বিশ্বকেই এগিয়ে আসতে হবে।